শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
, শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত,গান নংঃ ৫৬-৭৫ - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    , শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত,গান নংঃ ৫৬-৭৫

    গান নংঃ ৫৬-৭৫



    রাগিনী  কাহিনা
    ৫৬। তাল  ঝাপ
    আমার প্রাণের দরদি হে এসে কর হে পার
    আমি অকুল ভবেদি নীরে হে,
    তব বলে দিলেম সাঁতার।।
    । (বহে) তরঙ্গ এদিন রজনীভয়েতে কাঁপছে পরানী
    তুমি এসে হরি নিরাদ মনি হেঅকুল নীরে তরাও কিনার।।
    । ভাব দরিয়ার অতল বারঘোর তুফানে প্রাণে মরি
    (দিয়ে) অকুল নেয়ে পদতরি হেশুনি পার কান্ডারির কান্ড অপার
    । বিপ্লব ঝটিকা জোরেসঙ্গী সবে গেছে ছেড়ে
    আমায় এই সঙ্কটে কেবা ধরে হেতুমি বিনে কে আছে আর।।
    । ভবাদি দরিয়ার পারেযেতে বাঞ্ছা নাই অন্তরে
    দীনাবলে সকাতরে হেহরি গোসাই তরাও এবার।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-অরুণ ভেরি
    ৫৭। তাল-ঠুংরী
    প্রেমভক্তি যার উপজেতারে দয়া কিঞ্চিৎ সাজে
    যার দিনে দিনে মন প্রাণেসদা জ্বলে হৃদয় মাঝে।।
    । গুরু অনুরাগী যে জন হয়,
    তারে ছোঁয়না শমন বাঘেবন বাঘের কি ভয়
    থাকে পাহাড় পর্ব্বত গিরি গুহায়দুর্গম অরণ্য মাঝে।।
    । (যার) অনুরাগের অঙ্কুর বেড়ে যায়,
    কামক্রোধষড় রিপুহয় তার পরাজয়
    ও সে আহার নিদ্রা করি ত্যাজ্য,
    দিন রজনী গরু ভজে।।
    । (তার) নয় দ্বারে হয় পঁচিশজন দ্বারি,
    দিবা নিশি বিশ্রাম নাই তার দিচ্ছে প্রহরী
    যিনি মহাপুরুষ হয় না বেহুস,
    হুসের ঘরে থাকে মজে।।
    । ভেবে তাই আদিত্য ডেকে কয়,
    দীনবন্ধু হইসনে বেহুশঘটবে বিষম দায়
    দয়াল হরি গোসাইর দয়া ভারি,
    দয়া বিলায় যারে সাজে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ৫৮। তাল-ঠুংরী
    পাষান মন মনুরা লয় না পড়া
    আমার সাধন ভজন হবে কেমনে
    সদা চেয়ে থাকে কু-পথ পানে,
    সু-পথ সে চায়না কখনে।।
    । বুঝাই কখন ব্যক্ত কখন গোপনে,
    বুঝালে বুঝ মানেনা সেই বিপুল বেইমানে
    আমি হায় কি করিভেবে মরি,
    সাধন পথে যাই কেমনে।।
    । আমি পরেছি আজ ভীষণ সঙ্কটে,
    সে দুষ্ট নয়নের পিছেমনুরায় হাটে
    কেম্নে ফিরাই আঁখিউপায় না দেখি,
    হাকিনী পিছনে টানে।।
    । আমার মন মনুরায় সাধন পথে গেলে,
    দুষ্ট নয়ন অভি ভীষণ অগ্রেতে চলে
    তাইতে হয়না সাধন সঙ্গেতে মদন,
    বিধতে চায় তার পঞ্চ বাণে।।
    । আদিত্য কয় শুনরে মন,
    হরি গোসাই করণ বিনেহবেনা সাধন
    (এবার) দীনা বলে কি কৌশলে সাধন করি মন-প্রাণে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-মহশালা
    ৫৯। তাল-ঝুলুন
    মজিলি কেন বৃথা রঙ্গেডাক হরি রস রঙ্গে
    সৎবাক্য সদ্ব্যবহারেথাক রে মন মনোরঙ্গে।।
    । অসৎসঙ্গ ছেড়ে দিবিথাকবি সদা সাধুর সঙ্গে।।
    । মুখে বল সত্য বাক্য নাম করিও হৃদয় ঐক্য
    মনকে কর সরল সূক্ষ্মপাবি মোক্ষ ধাম ত্রিভঙ্গে।।
    । ভাই ভার্য্য বন্ধগুণেকেউ যাবেনা তোমার সনে
    পালাবে সব ঘোর নিদানেএকা যাবি অগ্নির সঙ্গে।।
    । আদিত্যের অমূল্য বুলিদীবন্ধু যাসনে ভুলি
    হরি গোসাইর চরণ ধূলিমাখবি সদা সর্ব্ব অঙ্গে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-বিরহাসী
    ৬০। তাল-ঠুংরী
    প্রেম কাননে চলে যারে মন,
    কাম্য বনে যেয়ে কেন হারাও পরমধন
    যাবি পৃপা দানেপ্রেম কাননে
    শীতল হবে তাপিত জীবন।।
    । প্রেম কাননে কামব্যাঘ্রের হানালোভী কামুক কেউ যেওনা
    যিনি প্রেম উন্মাদিনী সত্যবাদীবনে গেলে নাই তার মরণ।।
    । অমাবস্যা পূর্ণিমাতেব্যাঘ্র দায় মহা বেগেতে,
    কাপে হুঙ্কার শুনেসর্ব্বজনেস্বর্গ মর্ত্ত পাতাল ভুবন।।
    । অনুরাগের শিকল নিয়েজ্ঞানের অলো জ্বালাইয়ে
    পথ নিরখে দাঁড়া হুঁসেপাবি সে ব্যাঘ্রের দরশন।।
    । মহাবেগে ক্রোধ করিআসবে ব্যাঘ্র গর্জ্জন করি
    তখন নাম মন্ত্রে দিস ধূলা পড়িশিকলে করিবি বন্ধন।।
    । আদিত্য কয় প্রেম কাননে দীনবন্ধু থাক সন্ধানে
    হরি গোসাইর কৃপাবানেকাম ব্যাঘ্রকে কর নিধন।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-বিরহাসী
    ৬১। তাল-ঠুংরী
    রাত্রি দিনে কায়োমনে ভজ আমার মন
    দেহ থাকতে চেতন হয়ে মগনপ্রানপনে করগে সাধন।।
    । গুরু ভজন করবি যদিছেঁড়ে দেরে ঐ বেদ বিধি
    জপ কর নাম নিরবধিনির্ম্মল প্রেমে মিলে সেই ধন।।
    । বেদ বিধির পার হল যেইজনতার হয়েছে সাধন ভজন
    ছয় রিপু করেছে দমনজন্ম মৃত্যু হল নির্ব্বাণ।।
    । মনপ্রাণ হৃদয় শুচিনাম রসেতে রাখ রুচি
    নিও ঐ নাম সর্ব্বশুচি ঘুম যেও না থেক চেতন।।
    । উগ্রচন্ডা পরিহসিঘুমের ঘরে করে চুরি
    (যে জন) ঢলে নিন্দ্রার কোলো পড়ি
    দেখায় স্বপ্নহরে নেয় ধন।।
    । আদিত্য কয় শুনরে দীনাভজন বিনে সাধন হয়না
    হরি গোসাইর উপাসনাভজনে হয় বাঞ্ছা পূরণ।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ভোজেশ্বরা
    ৬২। তাল-একতালা
    হরি প্রেমের ঢেউ উঠেছে যার
    তাতে স্বর্গ মর্ত্ত পাতাল ভূতল,
    সাত তালের ভাঙ্গে কিনার।।
    । সাত তালে সাতটি ব্রহ্মান্ডডুবায়ে সব করল পন্ড,
    যত কৃষি শস্য নাইরে ভাস্যডুবায়ে মৈল সবাকার
    আছে সাত সমুদ্রনয়রে ক্ষুদ্রসমুদ্রে ঢেউ উঠিলে অন্ধকার।।
    । সমুদ্রের কান্ড বিপরীতসে ঢেউতে রয়না হিতাহিত,
    কত হাঙ্গর কুন্তীরসবে অস্থির ঢেউ লেগে হইল স্তন্তিুত
    যত প্রেমের মকরঢেউতে বিভোর,
    তারা ঢেউ খেয়ে হয়েছে সার।।
    । সাগরে ঢেউ উঠে যখনআকাশ পাতাল খিলে তুফান,
    তাতে মুক্তির ফারি মায়ার ভেরিতলায়ে থাকে সর্ব্বক্ষণ
    ডুবায় অজ্ঞান পুরিতুফান ভারি,
    প্রেম ঢেউতে দেখা যায়না কূল কিনারা
    । ভেবে আদিত্য বলেসে ঢেউ যখন উথলে,
    ওরে দীনবন্ধু হইসনে বেহুস
    সে প্রেম ঢেউ ধরিস কৌশলে
    দয়াল হরি গোসাইর দয়া বলে,
    অধর চাঁদ অনিবার্য্য মিলবে তোর।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ৬৩। তাল-ঠুংরী
    শ্রীহরির কৃপা সাগরে আমার,
    গেল না মন মাঝির তরী
    মাঝি চালায় তরী কৃপা সাগর,
    সন্দীপ নদী নেয় ছয় দাঁড়ি।।
    । সন্দীপ নদীরএই বুঝি  হয় রীতি,
    তিন ধারাতে বসা তাতেতিন মহামতি
    তাতে চুম্বক লোহা আছে স্থিতি,
    (নিল) নায়ের লোহা আকর্ষণ করি।।
    । অবশেষে জোড়া খসে তায়,
    নৌকা ধ্বংস অধ্বংস তাই কিছু নাহি রয়
    সন্দীপ নদীর স্রোতেতুফানেতেছিঁড়ে গেল কাছি দড়ি।।
    । (মাঝি) যদি যেত কৃপাসাগরে,
    আশার নঙ্গর করে রতেম পূর্ণ মাল ভরে
    রইতেম প্রেমানন্দে বহর সঙ্গেমরমে থাকিতেম মরি।।
    । দীনা বলে সন্দীপ নদীতে,
    হলেম সারা প্রাণে মরাছয় দাঁড়িয়ে মতে
    বল হরিগোসাইউপায় কি তাইমন মাঝি হয়  পাজি ভারি।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ৬৪। তাল-খেম্টা
    মন ভ্রমর শুন বলি তোরে
    শ্রী হরি নাম ফুলের মধু খাও উদর ভরে
    খেলে জন্ম মৃত্যু হবে বারণভব ব্যাধি যাবে দুরে।।
    । প্রভাতে খাইও মধুবেলা কৈর না,
    লাগলে পবন ভানুর কিরণমধু পাবানা
    ফুলে না পেলে মধু - হবা চদু,
    ঘটবে জ্বালা হেলা করে।।
    । হরি বিলাস ফুল বাগানেযত যত ফুল,
    আছে পুরা মধু ভরাসৌরভে আকুল
    যত অলিগনে রয় সেখানেঐ নাম মধু পান করে।।
    । উড়ে উড়ে হরি নাম গুণগেয়ে হও বিভোর,
    ফুলের মধু খাওরে শুধুও মন মধুকর
    তবে প্রেমানন্দে সুখে রবিক্ষুধা তৃষ্ণা যাবে দুরে।।
     আদিত্য তাই অলি হয়েভ্রমিয়ে বেড়ায়,
    মধুর আছে মন উল্লাসেফুলে ফুলে ধঅয়
    হরি গোসাই কয় মধু না পায়দীনবন্ধুর কর্ম্ম ফেরে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ৬৫। তাল-খেম্টা
    ঘুচবে তোর ভব যন্ত্রনা,
    কল্প বৃক্ষ মূলে যেয়ে কর কামনা
    সবে প্রেমানন্দে নেচে গেয়েকর পূজা অর্চ্চনা।।
    । কল্প বৃক্ষে আছেন গুরুপরম দয়াল,
    যে ফল যে কল্পনা করেমিলে তার সেই ফল
    জীবের ফরাতে কল্পনা ধরায়এল হরি কেলেসোনা।।
    । বিবেক সিন্দুরভক্তি চন্দ্রনদিয়ে বৃক্ষের  গায়,
    কামপাঠাকে বলি দিওঐ বৃক্ষের তলায়
    জ্বেলে জ্ঞানের বাতি কর স্তুতিপ্রেম স্বরে প্রার্থনা।।
    । ভবে এসে হিংসা দ্বেশেকরলি কাল যাপন,
    (মনের) ফেলে গরল হয়ে সরলভাবে হও মগন
    খেও ভাবের ঘরে প্রেমের মধুগরল খেয়ে দৈরনা।।
    । আদিত্য কয় গুনকয় আত্মদানও দীনা নর্ব্বর
    (তবে) কল্পতরু পরম দয়াল মিলবে এসে তোর
    হরি গোসাইর চরণ রাখিস্ স্মরণভব বন্ধন রবেনা।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ফকিরি ধাওয়া
    ৬৬। তাল-ঠুংরী
    হরি এই মিনতি চরণেতোমারয় যেন ভুলিনা কখনে
    যখন দেখিতে চাই দেখা যেন পাই শান্তি হরি একসনে।।
    । জম্মে জম্মে কৃপা করেসৎপথে রখিও মোরে
    তোমার নাম যেন রাখি অন্তরেতিলেক না ভুলি কোন দি
    । সৎমতি সদ্ব্যবহারেরেখ সৎসঙ্গের ভিতরে
    আমার কুমতি রাখিয়ে দূরেস্থান দাও হরি চরণে।।
    । (তুমি)  পূর্ণচাঁদ ক্ষীরোদবিহারীসর্ব্ববাঞ্ছা পূর্ণকারী
    নিয়ে প্রেম অনুরাগ হিরার ছুরিনাশ কামরূপ বেইমানে।।
    । (আমার) এহৃদি পর্ণ কুটিরেপদার্পণ দেও কৃপা করে
    দীনার কলুষিত দেহ কর সুশীতলশান্তি দানে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ফকিরি ধাওর্য়া
    ৬৭। তাল-ঠুংরী
    দয়াল গুরুচাঁদ রে আমি কি করিতে যাব মম দেশে
    ঐ সব সকল অসার মায়ার সংসারশৈলেম্ সে বিষয় বিষে।।
    । পেয়েছি মন চোরা হরিমনে বড় আশা ভারি
    আমি আসন দিব হৃদয় পুরিরাখব হৃদি আকাশে।।
    । বহুদিন পর দিয়ে দেখাছেড়ে যায় আজ প্রাণ সখা
    আমি কেম্নে রাখি বাকা সখা ভাবিতেছি তাই বসে।।
    । চিরদিনের দাসী হয়েআছি যার ভরসায় চেয়ে,
    সে যদি যায় নিদয় হয়েদেহ রাখি কার আশে
    । দীনবন্ধু দুঃখে বলেএই কি ছিল মোর কপালে
    (আমি) হরি গোসাইর চরণ ভুলেমত্ত রলেম কু-রসে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ৬৮। তাল-ঠুংরী
    কি দিয়ে পূজিব আমিগুরু তোমার ঐ শ্রীচরণ
    আমার শক্তি ভক্তি সব নিয়ে যায়দুষ্ট কু-মতির কু-পবন।।
    । যে ধনেতে তুমি হও খুসী,
    সে ধন আমার নাইকি তোমায় দিয়ে ভালবাসি
    হও এক মনেতে তুমি খুসীতাও ত আমার হয়না কখন।।
    । (আমার) মন যদি দিতে চাই তব পায়,
    সে মন আমার উড়ায়ে নেয়কু-মতির হাওয়ায়
    আমি দিবানিশি ভাবি বসিভাবতে ভাবতে দিন অবসান।।
    । এই ভবে চৌরাশি লক্ষ বার
    জনম ধারন করে আমিএলম বারে বার
    ভুলে কু-মতির সেই কু-চক্রেতে কোন জন্মে হয় না সাধন।।
     ভেবে তাই আদিত্য ডেকে কয়,
    মন প্রাণ সমর্পণ করগেহরি গোসাইর পায়
    দীনা বলে কু-মতির ছলেজন্মে জন্মে হল মরণ।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ফকিরি ধাওয়া
    ৬৯। তাল- ঠুংরী
    আমি শান্তি না পাই হে গুরুচাঁদ
    এ দেহ প্রেম শুন্য প্রাণে
    আমি চাই না শান্তি ঘুচাও ভ্রান্তি
    যাতে নাম না ভুলি জীবনে।।
    । (মনে) তব নাম ভাবেনা কখন
    কু-পথ পানে থাক মগন
    আমি কেমনে করিব সাধন,
    সারা জনম যায় অকারণে।।
    । সদা যেন তব গুণ গাই
    রিপুর বসে ভুলে না যাই
    গুরু ঐ চরণে এই ভিক্ষা চাই,
    মত্ত থাকি যেন কীর্ত্তনে।।
    । নাম নিতে মোর না হয় ধন্দ,
    মন মনুয়ার ঘুচাও সন্দ
    আমার মনেতে চায় সতের সঙ্গ,
    কু-মতি পিছে টানে।।
    । প্রার্থনা হরি গোসাইর পায়
    অন্তে মোর করিও উপায়
    গুরু ঐ নাম যেন কঠিন হৃদয়
    দীনা জপে যেন নিশিদিনে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ফকিরি ধাওয়া
    ৭০। তাল-ঠুংরী
    দয়াল গুরু চাঁদ রে-
    আমি প্রাণে মারা গেলাম রে এ দেশে
    আমি এ দেশ ছেড়ে বিদেশী হর,রবনা গৃহ-বাসে।।
    । এ দেশে ভূলিয়ে রঙ্গেপয়মাল হলেম অসৎসঙ্গে
    দুষ্ট কুমতির কুরঙ্গেভুলে য়ায় মন হরিষে।।
    । এই যে সাধের দেহ খানিক্ষয় হতেছে দিন রজনী,
    গুরু হৃদে দেও চরণ দুখানিসারা জনম যার মোর কু-রসে।।
    । কারে জানাই দুখের কথাব্যথিত আমি পাব কোথা
    গুরু এমন বান্ধব নাই মোর হেথাসব হারালেম কর্ম্মদোষে।।
    । দীনা কয় মোর এই বাসনাহৃদে রাখব্ কেলে সোনা
    আমার সংসার বিষয় যাতনাঐ চিন্তে সকল নাশে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ভাটিয়অল
    ৭১। তাল-ঝাপ
    প্রাণের ভাইরে আমার মাকে
    বদন ভরে ডাকিও মা বইলে
    মায়ের প্রাণের দরদ বুঝবে এমন দরদী নাই ভুতলে।।
    । মাকে আমার মা বলিবারতোমারা আছ সকলে
    আমি হই কু-পুত্রঅপবিত্রজঘন্ন ভূমণ্ডলে।।
    । তোমরা মায়ের হও সু-পুত্র সবে রও মায়ের কোলে
    মায়ের কর যতœ, পাবে রতœ, আমার নাই ছার কপালে।।
    । আমার শান্তি মায়ের করলে যতœ, শান্তি হয় অন্তিমকালে
    আমি সুকর্ম্মহীনভজনবিহীনদেশে যাব কোন বলে।।
    । দীন কয় বিদেশেপাগল বেশে বেড়াই কু-পুত্র বৈলে।।
    আমার বঞ্ছা হিয়েদেশে গিয়েরব মায়ের চরণ তলে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-উরুশেন
    ৭২। তাল-ঝাপ
    মিছে মায়ার কান্না কাঁদলে কি হবে,
    দেখ মন সব ফেলে যেতে হবে,
    সময় থাকতে সম্বল নেও করি
    মন তোর সকল অসার মায়ার সংসার হে,
    যত ভ্রাতা আর পুত্র নারী।।
    । মায়ার রাজ্যে বসত করমায়ার কান্ন কেঁদে মর,
    হনি নামে ঝরে না বারি
    ঐ মায়ার রাজত্বমেয়েপুত্র হে,
    হল কূহলিনী পায়ের বেড়ি।।
    । যে খেলঅ খেলিতে এলিমায়ার ছলে ভুলে গেলি,
    সে খেলা তোর পিছে রয় পড়ি
    কর মায়ার খেলঅঘটবে জ্বালা হে,
    যে দিন যাবিরে যমের বাড়ি।।
    । পূর্ব্বের কথা ভুলে গিয়েমায়ার খেলায় মত্ত হয়ে,
    স্থুলের কথা করলি রে চুরি
    বলছ সপ্ত মাসেস্থুলের দেশে হে,
    রলি সে কথা কেন ভূল করি।।
    । সপ্ত মাসে মায়ের উদরেএলি হরির সাথে সত্য করে,
    নাম নিবি তুই এ জনম ভরি
    হয়ে সত্য ভ্রষ্ট হলি নষ্ট হে,
    এখন কু-পথে বেড়াও ঘুরি।।
    । আদিত্য কয় বলি তোরেগুরুর দেহ এমনি করে
    বৃথা কাজে দিলি ক্ষয় করি
    হরি গোসাই বলেমায়ার ভুলে হে,
    দীনা কাঁদলি দিন বিভাবরী
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ভোজেশ্বর
    ৭৩। তাল-একতালা
    যদি তাড়াতে চাও কাম দ্রোনে
    গিয়ে রূপের দেশেমন উল্লাসে,
    যুদ্ধ কর তার সনে।।
    । সাদা ঠিক রেখ নয়নপলক দিওনা কখন,
    রূপের ঘরে রূপ নেহারেথাকিও চেতন
    যেমন চৌদ্দ বৎসর ছিল লক্ষণ,
    অনিদ্রায় অনাহারে ভ্রমে বনে।।
    । দ্বাপরে যত যুদ্ধ হয়সারথী শ্রী কৃষ্ণ সহায়
    (কৃষ্ণের) কৃপাগুণেসে অর্জ্জুনেপ্রাণে ভিক্ষা পায়
    তেম্নি করলে সহায়হরির দয়ায়,
    তবে জয়ী হবি কামদ্রোনের রণে।।
    । কাম দ্রোন মহাযোদ্ধা হনজ্ঞানধনুকে জুড়ে রূপের বাণ,
    নামের হুঙ্কারেতেশরাঘাতেতাড়াও সে দুর্জ্জন
    অনুরাগের বসন কর ধারণ,
    শ্রদ্ধা পত্র দেও গুরুর চরণে।।
    । সেরূপ মহাযোদ্ধা সেজেআরোহন কর মন গজে,
    (ক্রোধ)লোভমোহসেনা সৈন্যেরনে যাও সেজে
    বাজবে রনভেরিহৃদয় পুরিঅগ্রসর হইও অতি সাবধানে।।
    । আদিত্য বলে হও হুসিয়ারদীনবন্ধুরে এবার
    হরি গোসাইর দয়া বিনেগতি নাইরে আর
    গুরুর আদেশ নিয়ে যুদ্ধে গিয়ে,
    কামদ্রোণকে হটাও ঐ পঞ্চ বাণে।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ৭৪। তাল-ঠুংরী
    হরি প্রেম দিয়ে ডাকতে পারি না,
    তাইতে কি দয়া হবে
    যত বোবা খঞ্জ পাগল অন্ধ তোমার সৃষ্টি বিশ্বজনা।।
    । যে জন প্রেম বারি দিতে পারে,
    তারে কৃপা দর্শণ দিয়েনেও মুক্তি করে
    যার নাই প্রেম বারিআঁখি ভরিসে তোমার কি তৈয়ারী না।।
    । মন সাধে সৃষ্টি করেএখন কেন ডুবাতেছঅকূল সাগরে
    কেন করলে সৃজনবিশ্ব ভূবন,
    হরি নাম যেন তোমার ডুবেনা।।
    । যেমনছায়া নিতে বৃক্ষতলে যায়,
    ডাল পাতা ভাঙ্গিয়ে লোকেতার উপরে রয়
    কত গোড়া কোপায়শিকর উঠায়,
    তাতে বৃক্ষের ক্রোধ হয় না।।
    । তুমি কল্পতরু নামটি ধরেকঠিন জোরে,
    শিকড় করে আছ মৃত্তিকা পরে
    কল্পতরু নামেএ অধমে কত দিতেছি ভৎর্সনা।।
    । তাই বলে কি ক্রোধ ভরে,
    করবে নাকি প্রাণে নষ্টঅজ্ঞান ছেলেরে
    অজ অজ্ঞান ছেলেকৃপা আপিলে,
    দীনার কি ক্ষমা হবে না।।
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-ভাটিয়াল
    ৭৫। তাল-ঝাপ
    আমি কেমনে করিব সাধনএ দেহ প্রেমশূন্য প্রাণে
    আমার নাই ভাব ভক্তিপ্রেম শক্তি,
    করি দুর্ভাবনা দিনে দিনে।।
    । অসৎ সঙ্গের ভিতরে পড়ে,
    রঙ্গে ভঙ্গে কাল কাটালেমবিষয় সংসারে
    আমার হয় না সাধনকুÑছার জীবন,
    জনম গেল অকারণে।।
    । আমি কর্ম্ম দোষী সাধন ভজন হীন,
    তাইতে নাকি গুরু আমায়করলে দীনহীন
    আমি কর্ম্ম যদি তরতেম ভাল,
    থাকতেম গুরুর শ্রীচরণে।।
    । দুর্ভাগ্য কি এই ছিল আমার,
    বিধির কি দোষ দিব সকলকর্ম্মেরি ব্যাপার
    কবে সাধরনের ধনপাই দরশনজুড়াইব দুনয়নে।।
    । সর্ব্ব ধন মোর বাটপড়ে দিয়ে,
    অসময় হাহাকার করিভীরু সাজিয়ে
    দীনা বলে ভুমন্ডলে,
    (জন্মিয়ে) মৃত্যু কেন হল না প্রাণে।।

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.