শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ১১৬-১৪৫ (শেষ) - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ১১৬-১৪৫ (শেষ)

    গান নংঃ ১১৬-১৪৫ (শেষ)


    লোক শিক্ষা
    রাগিনী - উল্টাকেশী
    ১১৬। তাল-গড়খেম্টা
    সাধন এক ভাবে চলেনাসাধন এক ভাবে চলেনা
    গুরুর করণ অসীম তারণযে ভাবে যার আছে জানা।।
    । জগতে এক হরি ধনসাধন হয় বহুবচন,
    যেই ভাবে ডাকে যে জনসেই ভাবে দেখা পায় সেই জনা
    কেহ আল্লা কেহ হরিবুদ্ধ কেলে সোনা,
    মনের গরল ফেলে সরল,
    নৈলে একমন ভিন্ন দেখা পায়না।।
    । যে পেয়েছে নামে মধুপান করে সে হয় সাধু,
    সাধন করিছে শুধুনিরলে ভাবে তার ভাবনা
    গৃহে কিবা জঙ্গলেতে পাহাড় ঠিকানা,
    তারা সাধন করে বিরাগ ভরেনিয়ে গুরুর উপাসনা।।
    । যাদের কুমতি লাগেসুমতি আগে ভাগে,
    কায় তারে ছয় রপু ছাগে,
    ধর্ম্মের দিক ভক্তি জ্ঞান থাকেনা
    টাকা পয়সা অর্থ সম্পদজোর জুলুম কারখানা,
    হিংসা নিন্দা পরদারিডেকে লয় সে যেতে দেয়না।।
    । আদিত্যের এই বচনদীনা তুই করিস সাধন,
    রিপুর বস হইসনে কখনপানি সেই অধর কেলেসোনা
    হরি-গোসাইর বাক্য ধরে করগে সাধনা,
    তুই ধর্ম্মের প্রতি রাখিস মতিশমনের ভয় আর রবে না
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী কেলেংড়া
    ১১৭। তাল-ঠুংরী
    হিন্দু আর মুসলমানসবে এক পিতার সন্তান
    ছেড়ে সবে অভিমান থাক ভুতলে
    পতন হইওনা ভাই হিংসা আনলে।।
    । এবার দেখতেছি দুনিয়ায় আসি,
    মারা মারি দ্বেষা দেষি,
    কতই যে রাশি রাশি হতেছেরে ভাই
    মুখেতে নাই আল্লা হরিতাতে প্রাণে কষ্ট ভারি,
    সহ্য না করিবে হরি কোন কালে।।
    । ভবে ভাই ভাই সবাকার বিবাদ কৈরনা আর,
    হিংসা হিংসি করে সবেহওনা পয়মাল
    যেই আল্লা সেই হরিমিছে কর বাড়াবাড়ি,
    আখেরেতে যেয়ে জবাব দিবা কি বলে।।
    । মনে ভেবে দেখ ভাই গণএক মাটিতে গঠন,
    এক মাটিতে চলাফেরাসেই মাটিতে পতন
    কোথা রবে ঘর বাড়ী যেতে হবে এসব ছাড়ি,
    আমার আমার দিন দুই চারিযারা সব ফেলে।।
    । ভাইরে যাদের আছে যেই ধর্ম্ম সবে কর তার কর্ম্ম,
    কেহ কারব ধর্ম্ম নিন্দা কৈরনা
    ধর্ম্ম নিন্দা করলে পরপাবানা আর কুল কিনার
    দুর্গতি ঘটিবে তারঅন্তিম কালে।।
    । ভাইরে ভেবে দেখ এই ভাবেজোরামালী করে সবে,
    কতদিন আর থাকা যাবেভাবেরি মাঝার
    বোকা দ্বীনবন্ধু কর কর্ম্মতবে পাবি হরি ব্রহ্ম,
    তবে যদি তেযতে পারঐ ধর্ম্ম বলে।।
     
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১১৮। তাল-গড়খেমটা
    এবার মৃত্যু কাছে এলএবার মৃত্যু কাছে এল
    আছে যার যেই ধর্ম্মসে তার কর্ম্ম করে সবে বেহেস্তে চল।।
    । হিন্দুস্থান পাকিস্তানেহিন্দু আর মুসলমানে,
    সুস্থ প্রাণে একমনেযাদের যেই ধর্ম্ম সে তাই পাল
    দ্বেষহিংসা ছেড়ে দেও সবাইরসাতল সব গেল,
    ঐ দ্বেষ হিংসা দুষ্টামির পাপেব্রহ্মান্ড ডুবিয়া গেল।।
    । যত হিন্দু মুসলমানসবে এক খোদার সন্তান
    কেউ জপেনা খোদার নাম,
    মিছে পাপ কর্ম্মে দিন ফুরাল
    এখন পাপে ধরাবোঝাই সারাকরে টলমল,
    তাইতে হরি ক্রোধ করিধ্বংসের পথ গঠন করিল।।
    । এমন সোনার রাজ্যে অগ্নি লেগে,
    মানব কিবা কীট পতঙ্গে,
    পশু পাখী অগ্নির সঙ্গেপুড়ে সব ভষ্মময় হইল
    খোদার ঐ ক্রোধ অনলে জীব সকল পড়িল,
    উঠল প্রলয় হুহুংকার বাজল সংসারক্রদনের ঐ রোল উঠিল।।
    । দীনবন্ধুর এই বাণীপাপের ভার সয়না মেদিনী,
    উদ্ধারের সেই কর্তা যিনিএ ধরা ছেড়ে লুকাইল
    যত হিন্দু মুসলমানছেড়ে গুমানআল্লা হরি বল,
    এবার মালিক জনকে রাজী করে ভবের পারি বেয়ে চল।।
     
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১১৯। তাল-গড় খেমটা
    তবু হরি নাম করেনাতবু হরি নাম করেনা
    লোকে দু®কৃতি স্বভাবের দোষেকত পায় দুঃখ যাতনা।।
    । শ্রীহরি ভাবে মনেদিব দুঃখ জীবের প্রাণে,
    নাম নিবে প্রাণ পণেপাপ কর্ম্মে কখনও যাবেনা
    জীবে পেলে রুষ্টভাবে কষ্টঐ কর্ম্ম ভুলে না,
    আর গালি মারে হরির ঘাড়েতবুও সংজ্ঞান আসেনা।।
    । পোড়া পোড়িমারামারিহতেছে জগত ভরি,
    তাই দেখে হাহাকার ভারিভাবে তাই দেহমান রবে না
    হায় হায় কি করিবকোথা যাবসদা এই কল্পনা,
    কেবল দুব্বুদ্ধি আর অসার চিন্তাহরি নাম মুখে আসেনা।।
    । যেমন মাছ মাছি মশামৃত্যুস্থানে করে বাসা,
    তেম্নি মানুষের দশাদেখতেছি কলিতে নিশানা
    প্রাণে হয় হত তবু যতঅসৎ পথে হানা,
    যেখানে হয় না সংকীতর্তনতাতে কখন মন চলেনা।।
    । আদিত্য কয় দিন হয় গতদীনার মন হলনা রত,
    হয়ে রিপুর বশীভুতকুচিন্তা কর কেন জপনা
    হরি গোসাই বলে তরতে হলেহরি নাম ভুইল না,
    ও তুই হাতাকারে পড়বি ফেরেছেড়ে দে সব কুভাবনা।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-ভুরুপানী
    ১২০। তাল-ঠুংরী
    আমার মনের আগুন নিবাইবগো
    মনের মানুষ পেলেম না এদেশে
    আমার মনের আগুন জ্বরছে দ্বিগুণ গো,
    হারে দগ্ধ হয় হৃদি আকাশে।।
    । আমি মনের মানুষ পেতম যদি,
    তারে বলতেম দুঃখ নিরবধি
    আমার ঘুচে যেত আশা নদী গো,
    হারে মানুষ ধরিব কোন বেশে।।
    । আমি কেন বা এই দেশে এলেম,
    আমার বন্ধু বান্ধব হারইলেম
    আমর মনের মানুষ না পাইলেম গো,
    হারে আমার আপন কর্ম্ম দোষে।।
    । আমি মন মানুষের দেশে যাব,
    ও তার চরণ ধরে সদা রব
    আমার মনে আগুন নিবাইব গো,
    হারে ও তার চরণ সহবাসে।।
    । দীনা কয় মোর মন উদাসীআমি হব ওড়াকান্দী বাসী
    হব হরিচাঁদের চরণ দাসী গো,
    (হারে) হব মনেরই উল্লাসে।।
     
    রাগিনী -শানিরা
    ১২১। তাল-একতাফ
    সখী নিল না রাখিল আমায় এসুখ সংসারে
    আমি সহিতে না পারিওহে সহচরী,
    উপায় কি বল আমারে।।
    । হরি হরন করে নিল মোর প্রাণরাখালনা মোর একুলমান,
    সে বিনে বাঁচেনা পরাণও গো ও প্রাণ সজনী
    ওসে অনাথিনী বলিয়েআমায় গেল ফেলিয়ে,
    আমি তারে ধরি কেমন করে।।
    । আমার মনের আগুন জ্বলে সদায়কোথ যেয়ে এ প্রাণ জুড়াই,
    বন পোড়া হরিণের মতআমি ঘুরিয়ে বেড়াই
    আমি কার কাছে যাব মন কথা কব,
    আমার অন্তরের দুঃখ রয় অন্তরে।।
    । সখী মোর অন্তরে নাই কোন সুখদুঃখে আমার ফেটে যায় বুক
    কবে আমি দেখব তার মুখকবে যুড়াব জীবন
    আমি তার কাছে যাবএদেশে না রব,
    আমার মন প্রাণ দিয়াছি তারে।।
    । আমি ঐ দুঃখেতে হয়ে দুঃখিআকুল হৃদয়ে ডাকি,
    হরি আমায় কর সুখীআমার অন্য আশা নাই
    দীনা বলে মন বাসনাপূর্ণ কেন হলনা,
    হরি নিদয় কেনে হইলা মোরে।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-ভুরুপানি
    ১২২। তাল-ঝাঁপ
    আমার কর্ম্ম দোষে হলেম দোষী রে,
    এখন আমি কার কাছে দাড়াব
    নিজের দোষে দোষী করে রোষিরে,
    হারে দুঃখ কার কাছে জানাব।।
    । আমার কর্ম্ম দোষে এই ঘটিল,
    আমার অশান্তিতে জীবন গেল
    আমার শান্তির প্রয়ার ভেঙ্গে গেল,
    হারে এখন কোথা চলে যাব।।
    । আমি কার কাছে কই মনের কথা,
    এমন বান্ধব পাব কোথা
    (আমার) কে বুঝিবে মন ব্যথারে,
    হারে কবে প্রাণে শান্তি পাব।।
    । হরি আমায় কেনে দিলে ভবে,
    আমার এই ভাবে কি জনম যাবে
    আমার হেন ভাগ্য কবে হবে
    হারে কবে হরির দেখা পাব।।
    । দীনা বলে এই কি ছিল,
    আমার জনম নিয়ে কি ফল হল
    হরি গোসাই আমার উ পায় বল,
    (হারে) কবে কর্ম্ম পাশ ঘুচাব।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-কাহিনা
    ১২৩। তাল-ঝাঁপ
    আমি উপায় কি করিব রে,
    আমার মন মানে না
    আামর মন বলে যাই চলিয়ারে-
    দিবা নিশি এই ধারণা।।
    । আমার বিবেক বন্ধু বিমুখ ছিল
    বাধ্য হয়ে কাছে এল
    আমার অজ্ঞান অন্ধ ছেড়ে গেল,
    জন্মে জ্ঞান সুমতি জনা
    । আমার দুষ্ট ভগ্নি হয় কুমতিযাত্রা কালে করে স্তুতি
    (অনুরাগ) ভ্রাতা চঞ্চলা অতি,
    আমায় গৃহে রৈতে দেয় না।।
    । আমি মায়া মাতা তেজ্য করে,
    যাব এখন কি প্রকারে
    আমি সদা ভাবি তাই অন্তরে,
    আমার মায়া মাতা আর ছাড়ে না।।
    । হরি গোসাইর করণ চোটেমায়ার বন্ধন যাবে কেটে
    এবার দীনা বলে নিস্কপটে,
    (চলে) যাব কেন শুনি মানা।।
     
    রাগিনীÑঅরুন ভাণ্ডার
    ১২৪। তাল-ঝাঁপ
    ভাবি অন্তরে-
    আপন বলতে কেউ নাই সংসারে
    আমি যারে আপন আপন বলিরে
    হারে আমার সে হয়ে যায় পররে।।
    । আমার সুজন বন্ধু ছিল ছয় জনতারা বিমুখ হল,
    ওহে পিতামায়া মাতাতাজ্য করে গেল,
    আমি ছয় বন্ধুকে করে বাধ্য রে,
    (হারে) কবে ওড়াকান্দী যাব রে।।
    । আমার আমোদ আহ্লাদ দুটি পুত্রকরে নাম সংকীর্ত্তন;
    কুমতি মহিষী এসেকরিতেছে বারণ
    আমি সামর্থ ভ্রাতাকে দিয়েরে;
    হারে তারে তাড়াতেছি ভারিরে।।
    । আমি চৌষট্টি মহন্তের সঙ্গেহইব মিলন,
    শান্তি হরির যুগল রুপেরাখব দুট নয়ন
    আমি রূপের ঘরে দিয়ে আখিরে,
    হারে বসে রব রূপের কাছেরে।।
    । স্বামী হরি চরণ রূপে কিরণহেরিয়ে সদায়,
    চাঁদ বদনে আকুল প্রাণে হরিনাম গুণ গায়
    পায়না এক বিন্দু তারদীনা বর্ব্বর,
    (হারে) ঐ রূপ পায়না আপন দোষেরে।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-শনিরা
    ১২৫। তাল-একতাফা
    বন্যার তরঙ্গে মরি আতঙ্কে,
    প্রণ মানেনা ভেবে মরি আমি উপায় কি করি,
    মরি প্রলয় অনলে-বিরহ বিষানলে,
    তরঙ্গ তাই হল ভারি।।
    । আমার প্রেম মহিষী হল আকুলভাব রসিকে হল বেকুল,
    নয়ন জলে ভাসে দুকুলতাতে ধরা ভেসে যায়
    এবার উঠে গেল তুফানক্ষণে ক্ষণে অজ্ঞান,
    অসুস্থ সে আছে পড়ি।।
    । তুফান স্বর্গ মর্ত্ত পাতাল ভূতল,
    ছেদন করে সে সপ্ত তালঢেউ লাগিয়ে মুক্তি তরু,
    আমার সকল ভেসে যায়
    আমি উপায় কিবা করিডুবে বুঝি মরি,
    আমার দেহ বাঁচাই কেমন করি।।
    । এবার প্রেম বন্যা হইল ভারিধৈর্য্য হতে নাহি পারি,
    কি করিতে কি না করিপ্রাণ মোর হতাশ হয়ে যায়
    আরও ফল বৃক্ষ যা ছিল বন্যায় ভেঙ্গে নিল,
    ছুটে গেল মায়ার ভেরী।।
    । স্বামী হরিচরণজেনে কারণপ্রেম অনুরাগ করে ধারণ,
    হুঙ্কারে কাম করে বারণসদা প্রেমানন্দে রয়
    ভেবে আদিত্য কয়প্রেম বন্যায় সব ডুবে যায়,
    দীন ডুবে থাক গে মরি।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-শানিরা
    ১২৬। তাল-একতাফা
    হৃদয় আলোকে মনের পুলকে
    হরিনামের হুঙ্কারেতে করব দশ ইন্দ্রিয় বস,
    ঐ নাম হৃদয় ধামে নিব দমে দমে
    কাম দস্যু হইবে বিনাশ।।
    । হরিনামের ঝঙ্কার শুনিপাগল হয় শূল পানি,
    চিত্তগুহ দিন রজনীআমার নাচে সর্ব্বদায়
    ভগ্নি আমোদ আহ্লাদিনীপতিœ বিরহিনী,
    তারা নেচে পুরায় মান অীভলাষ।।
    । আমার দেখে শুনে সে সব কাণ্ডকম্প হয় হৃদি ব্রহ্মাণ্ড,
    ধর্ম্ম পূন্য সকল পণ্ডআমার কিছুই না রয়
    ভেঙ্গে মোক্ষ মুক্তির বাসাকরিল এই দশা,
    আমায় সব দিকে করিল নৈরাশ।।
    । আমি অজ্ঞান রাজার রাজ্য ছেড়ে,
    আসিলেম জ্ঞান রাজার ঘরে,
    বিবেক মন্ত্রীর অত্যাচারেঘরে থাকা বিষম দায়
    আরও অনুরাগ চাপরাসীযাতনা দেয় আসি,
    ও তার যাতনায় মোর প্রাণ হয় হুতাশ।।
    । হরি গোসাইর পদে হয়ে আলিকুলে দিয়ে জলাঞ্জলি
    মায়া মাতা ছেড়ে চলিযাব ভাগ্যে যাহা হয়
    বোকা দীনবন্ধু বলেপ্রাণ যায় আমার জ্বইলে,
    কেন আমি নিলেম ঐ বেশ।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ১২৭। তাল-ঠুংরী
    আমায় ছাড়িল বহুদিন ধরে কি দোষেতে পাইনে তারে
    আমি আশা করি দুঃখ ভারিদেখা দেয়না অভাগীরে।।
    । আমি আশা করি পাব পাব,
    পেলে পরে ঐ চরণেবিকায়ে রব
    আমার সে কল্পনাতাই হলনা
    কাজ কিরে ছার জীবন ধরে।।
    । আমি এ দেহ আর রাখি কি কারণ,
    এ জনমের মত যেয়ে ত্যজিব জীবন,
    যাব আকুল প্রাণেদারুণ বনে,
    জীবন থাক কানন ভিতরে।।
    । আমি বেহাল বেশে বনে এসে,
    ঘুরে ঘুরে বেড়াতেছি সদা হুতাসে
    আমার হয়না মরণ এছার জীবন,
    বিসর্জ্জন দেই কেমন করে।।
    । আদিত্য কয় দীনবন্ধু শুন,
    গুরুর দেহ মিছে যেয়ে কেন কর বিসর্জ্জন
    হরি অপরাধী মরবি যদি,
    হরি গোসাইর থাক চরণ ধরে।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ১২৮। তাল-ঠুংরী
    আমায় ফাঁকি দিয়ে এই করিলেকোথায় যেয়ে লুকাইলে
    অনাথা অবলা আমিতাই জেনে কেন নিদয় হলে।।
    । তারে যদি ধরা পেতেম একবার,
    প্রাণ অন্তে ছাড়তেম না কখন বাসনা আমার
    আমি কেমনে ধরি সহচরীকবে রব রূপ নেহালে।।
    । কো সন্ধানে তারে ধরি সই,
    (বিরহ) যাতনায় মরি বলকেম্নে ঘরে রই
    আমি যখন ভাবি রূপের ছবিতরঙ্গ ভীষণ উথলে।।
    । আমি অনুমানে রব কতদিন,
    বর্ত্তমানে পেলে হয়ে রইতেম চরণের অধীন
    রইতেম কায়োমনে শ্রীচরণেচিরদিনের দাসী বইলে।।
    । আদিত্য কয় পেতে চাও যদি,
    চাতক হয়ে তারে ভেবেরও নিরবধি
    দীনা কয় সখী বলমন নাই সরলধরি তারে কি কৌশলে।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-অরুণ ভেরি
    ১২৯। তাল-ঠুংরী
    গুরু তোমার জন্যে এই অরণ্যে-এলেম আমি পাব বলে
    আমি ঘুরে বেড়াই যেখানে যাইদুঃখের ছেড়া কাঁথা গলে।।
    । আমি কোন গুণেতে পাই গুণনিধি,
    (ভক্তি) শূন্য দেহ লয়ে বনে রই নিরবধি
    বেড়াই বনে বনেঅধম পানেচেয়ে দেখ নয়ন মেলে।।
    । বল গুরু থাক কোন খানে,
    (দেখা) দিয়ে প্রাণ রাখ নইলে মরি জীবনে
    কেন হলে নিদয়নিদান সময়
    বাঁচি তোমার দেখা পেলে।।
    । আমায় এই ভাবেতে রাখবা কতদিন,
    মন পোড়া চাতকীর মতআছি রাত্রি দিন
    কর দুঃখ মোচন হে গুরুধন,
    স্থান দেও তোমার চরণ তলে।।
    । হরি গোসাইর কঠোর করণে,
    গৃহ ছেড়ে এলেম আমি নিদারুন বনে
    আদিত্য কয় সুবচনেদীনাগুরুর চরণ জাসনে ভুলে।।
     
    রাগিনী-অরুণ ভেরি
    ১৩০। তাল ঠুংরী
    আমার প্রাণ নিয়েছে প্রাণ বল্লভে-
    মন হল মোর বিদেশবাসী।।
    বেড়াই দেশ বিদেশেহা হুতাসেদুঃখের তরঙ্গে ভাসি
    । হয় না দেখা প্রাণ বন্ধুর সনে,
    (আমায়) বহুদিন হয়ে ছেড়ে গেল নাই বুঝি মনে
    রইল কোথায় গিয়েকেমন হিয়েদয়াময়া নাই এক মসি।।
    । অসহ্য বিরহে অনলেতার জন্য হৃদপর্ণ কুঠীর
    আমার যায় জুইলে
    আমি হায় কি করিসহচরিহল মন আমার হুতাশি।।
    । যাব আমি প্রাণ বন্ধু কাছে,
    চরণের দাস হয়ে রবসে যথায় আসে
    আমি চরণ পাশেমন উল্লাসেবসে রব দিবানিশি।।
    । মন আমার হল চঞ্চলাপ্রেম নিধি তরঙ্গিনীহল উতলা
    দীনা কয় অন্তিমের বেলাহরি হই যেন চরণের দাসী।।
     
    রাগিনী-অরুণ ভেরি
    ১৩১। তাল-ঠুংরী
    যে জন ভাব সাগরে ঝাপ দিয়েছে
    তার কিরে আর ভাবনা আছে।।
    সদা বলে হরিঅতল বারিমায়ার ভেরি ছুটে গিয়াছে।।
    । ভাব সাগরের কুল কিনারা নাই,
    (ও তার) তিনটি ধারাবহে সারা দিবা বিভা ঠাঁই
    দেখে তুফান ভারিদিশে হারিঅজ্ঞান বন্ধু এল কাছে
    । অনুরাগ এক বান ডেকে সাগর,
    ভীষন গর্জ্জিয়া উথল দিচ্ছে ভয়ঙ্কর
    খিলে আকাশপাতালসে সপ্ত তাল;
    মহা প্রলয় ঘটিয়েছে।।
    । প্রেম বারির উত্তেজনেমহা বিপ্লববৃক্ষাদি সববিশ্ব জীবজনে
    যত সাধু মকরহয়ে বিভোর তরঙ্গে সাঁতার খেলতেছে।।
    । হরি গোসাই বলে দীনা শোন,
    ভাব সাগরে মকর সেজে করগে ভ্রমণ
    হইলে অনুগতমনের মতথাকবি মন মানুষের কাছে।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-অরুণ ভেরি
    ১৩২। তাল-ঠুংরী
    আমার প্রাণ ঘৃত আহুতি দিলেমহে গুরু তোমার নাম যজ্ঞে
    আমার কঠিন হৃদয় হে দয়াময়,
    (তোমায়) দিলেম এখন যা দেও আজ্ঞে।।
    । আমি জ্ঞানের অগ্নি জ্বেলেছি এবার,
    (মায়া) বিল্বপত্রেঘৃত মেখেদিলেম তার উপর
    দিলেম জীবন যৌবনও গুরুধনকর যা হয় উপযুগ্যে
    । ভক্তি চন্দন দিলেম পদঠাঁই,
    আনন্দেতে নেচে বেড়ায় আমার ভাগ্যজোড়ের ভাই
    আমার বিবেক বুদ্ধি পুত্র দুইজনমগ্ন হয়ে নাচে অগ্রে।।
    । প্রেম অনুরাগ সহায় রেখে তায়,
    যজ্ঞ করি কাতর হিয়েতোমারি আশায়
    আমার বলতে যে সব ছিলসব দিলেম ঐ মহাযজ্ঞে।।
    । দীনা কয় মোর চিত্ত গুহে,
    আমোদ আহ্লাদ দিবানিশি আছে উৎসাহে
    জ্বেলে পঞ্চবাতি করি স্তুতিহরি গোসাইর ঐ সুÑআজ্ঞে
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-অরুণ ভেরি
    ১৩৩। তাল-ঠুংরী
    আমার হৃদয় কানন হে গুরুধনআবাদ কর শ্রীপদ পরশনে
    আমার হৃদয় কানন অতি ভীষনকাম-ব্যঘ্র রয় সেই বনে।।
    । কাম ব্যাঘ্রের ঐ ভীষন গর্জ্জনে,
    বনজন্তু পালিয়ে যায় দুর্গম অরণ্যে
    আমি বলব আর কিযত পাখী,
    ভয়ে কম্প রয় গোপনে।।
    । কাননে কি সহর গ্রামে,
    বায়ুভরে কাম ব্যাঘ্রদিন রাতি ভ্রমে
    থাকলে বেহুসিয়ারেখায় সে ধরে,
    সারা করে জানে প্রাণে।।
    । বনে আঠার জনআঠার পাশে,
    অস্ত্র হাতে গোপনেতেরয়েছে হুসে
    বনে করে ধাববানআরও নয়জন,
    আছে কাম ব্যাঘ্রের ঐ অন্বেষণে।।
    । জ্ঞান অনুরাগ ব্যাধ হয় দুজন,
    (ব্যাঘ্র) মারবার লাগিচির যোগি রয়েছে চেতন,
    তবু তার ভিতরেব্যাঘ্র বরে,
    আহার করে দিন দিনে।।
    । আদিত্য কয় চাও যদি মুক্তি,
    হরি গোসাইর কাছে গিয়ে শিলে কও যুক্তি,
    দীনবন্ধুর এই ভাব উক্তি,
    (গুরু) ব্যাঘ্র মার কৃপা বাণে।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-ভেন্ডিল কাহিনী
    ১৩৪। তাল-ঝাপ
    দয়াল হরিচাঁদ তুমি আমায়ঘরের বাহির করলারে হরিচাঁদ
    করে দেশান্তরী দীন ভিখারী রে এখন আমায় কেনে দিলে বাদ।।
    । এক দিন রূপ দেখালে মোরেপ্রাণ তো ফিরে যায় না ঘরে
    আমি সেইরূপ আর দেখলেম না ফিরে,
    আমি ধরব বলে রূপের চাঁদ।।
    । রূপ দেখায়ে পাগল করে,
    কোথা গেলে আমায় ছেড়ে
    আমি বাঁচিনা আর ঐ রূপ বিনেরে,
    মোরে কর রূপের আত্মসাত।।
    । রূপের ঘরে দিলে আখিঅন্য দিকে ধায় মন পাখী
    আমি কেমন করে সে রূপ রাখিরে,
    ক্ষামার মন প্রাণ ধরে কু পথ।।
    । দেশে বিদেশে বেড়াইর ঘুরকরলে সে রূপের ভিখারী,
    দীনা রয় আকক্সক্ষায়ঐ রূপ সদায় রে,
    দেখলে ঘুচে আমার কর্ম্মফাঁদ।।
     
    বিচ্ছেদ
    রাগিনী-উরুশেন
    ১৩৫। তাল-ঝাপ
    হরিচাঁদের যুগল মুরতিআমি দেখব দিবা রাতি
    আশা করি আকুল মনে
    আমার আশায় আশায়জনম গেল হে
    আশা পূর্ণ হইল না কেনে।।
    । হরি মন প্রাণ নিয়ে হরেবসত করে নিরন্তরে,
    যাব আমি তার কাছে এবার
    তিনি যেখানে রয়মন চোরায় রে,
    সেই খানে যাব অন্বেশণে।।
    । মন প্রাণ নিয়ে বসে রলআর না পুঃন দেখা দিল
    না জানি কোন পাষাণ হিয়ে তার
    এখন আমার কথা নাই বুঝি মনে,
    আমি বাঁচিনা আর সে বিনে।।
    । আমি ঐ রূপেতে নয়ন দিয়েথাকব পদে বিকায়ে,
    এ জীবনে আসিব না আর
    সদা রূপের সনেনয়ন রাখব হে,
    যুগল রুপ দেখব রাত্রি দিনে।।
    । আমি সে রূপের পাব দরশন,
    শান্তি হবে আমার জীবনতবে আমি হয়ে রব তার
    হরি গোসাই বলেনেহারিলে রে,
    দীনা রূপ দেখবি রাত্রি দিনে।।
     
    নারী শিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ১৩৬। তাল-খেমটা
    আমি বলব কিরে ভাই
    কলির কাণ্ড দেখে শুনে দুঃখে মরে যাই
    ভবে মান্য গণ্য হল শুণ্য দেখিতেছি সর্ব্ব ঠাঁই।।
    । জন্ম দাতা পিতা মাতাআন্দ ভরে,
    ছেলে বিয়েকরায় নিয়ে উৎসাহ করে
    নিচ্ছে পরের কন্যেশান্তির জন্যে
    শান্তি থাক হয় ঘরের বালাই।।
    । মাসেক দুমাসশান্তিতে বাস করে বুড়া বুড়ি,
    তার পরে অলক্ষ্মীর ভাণ্ডদোষী হয় ভারি
    তারা কথায় কাজে দোষী সাজে,
    দোষ ভিন্ন যশ ভাগ্য নাই।।
    । বধুরাণি ক্রোধে তিনি বলে বুড়ি হাঙ্গর,
    ঠোঁটটা ঝুলায় বাঁদরের ন্যায়যেন পোড়া বাদুর
    আরও স্বামীকে কয়ঐ নির্ব্বংসিয়ায় না মরিলে শান্তি নাই।।
    । টাকা খেয়ে দিল বিয়েআমার বাবা মায়,
    অসুরটাকে নিয়ে আমি ঠেকেছি দায়
    বলে নিরবধিঝোলঅয় যদিএটা নিলে বেঁচে যাই।।
    । কু-বুলি আর কু-কর্ম্মেতেডুবল এ ভুবন,
    ঘুচাও সবারএই ব্যবহারওহে ভগবান
    কর বাঞ্ছা পূরণ ও গুরুধনদীনারে দেও পদে ঠাঁই।।
     
    নারী শিক্ষা
    রাগিনী-উল্টাকেশি
    ১৩৭। তাল-গড়খেমটা
    মরি নিজের ব্যবহারে
    মরি নিজের ব্যবহারে
    মোদের নাই একতাভণ্ডকথা,
    ব্যভিচারি ঘরে ঘরে।।
    । সাম্নে রেখে পিতা মাতাবলে কুছার কুৎসিত কথা,
    শুনে লাগে প্রাণে ব্যাথা,
    যে বোল শুনি নাই সেই বোল ধরে
    শুনে কুৎসিত গালিকুৎসিত বুলিলজ্জাতে যাই মরে,
    হায়রে দারুন বিধিনিরবধিএই কথা কি শুনতে পারে।।
    । খুড়ী পিসী জ্যেঠি মাসীমান্য নাই দিবানিশি,
    ব্যভিচারে মত্ত বেশীমান সম্মান লজ্জা ফেলে দূরে
    গ্রামের যত মান্যবানতাদের মান্য নাইরে,
    তার থেকে ওর মান্য বেশীবেমানীর মান গেছে বেড়ে।।
    । মুখেতে নাই হরিনামসদা কুবলি কু-কাম,
    সৎলোকের ঘটায় বিষমযাহাতে নাম নিতে না পারে
    সতের সঙ্গে করে ভঙ্গদুষ্টা দুরাচারে,
    ও তার সতের সঙ্গ নেওয়া হয়না কলি দুষ্টের অত্যাচারে
    । আরও কু-চরিত্র হলে নারীমানেনা শ্বশুর শাশুড়ী,
    স্বামী ভাসুর তুচ্ছ করিভ্রমে সে নগরে নগরে
    তিনি ঝগড়ার নালা পেলে জ্বালা বাঁধায় তথাকারে,
    নারীর মুখের কথায়করে প্রলয়,
    ব্রহ্মাণ্ড ডুবাতে পারে।।
     
    নারী শিক্ষা
    রাগিনী-উরুশেন
    ১৩৮। তাল-ঝাপ
    স্বামী হল মেয়ের ভগবানপুজ বর্ত্তমান আর অনুমান,
    রিপুর বশে যেওনা ভুল্
    রে এবার স্বামী ধরপূজা করহে,
    নৈলে উদ্ধার হবা কোন বলে।।
    । স্বামীর পদে ভক্তি রেখসদায় বাসধানে থেক,
    রতি মতি দিও স্বামীর পায়
    সবে স্বামীর মতেমত রাখিও হে,
    নৈলে যেতে হয় রসাতলে।।
    । মাতা পিতা তুষ্ট হয়েবর এনে দিল বিয়ে,
    সাধন ভজন করিবার আশায়
    হল স্বামী গুরুকল্পতরু হে,
    কল্পনা রেখ তার চরণ তলে।।
    । স্বামী স্ত্রী ঐক্য হয়েসাধন কর একমন দিয়ে,
    মুক্তি পাবে অন্তিম সময়
    দয়াল হরিচাঁদেরদয়া হলে হে,
    দুজন শান্তি ধাম যাবে চলে।।
    । মহা সতী তারার পতিনিধন করে জগৎ পতি,
    রামায়নে শুনিয়াছি তাই
    তখন রামের শরেবালি মরে হে,
    তারা অভিশাপ দেয় সেকালে।।
    । সেই অভিশাপ রাম নেয় বেধেসীতার শোকে বনে কাঁদে
    এড়াতে না পারে দয়াময়
    ভেবে বলে দীনা কুল পাবানা হে
    স্বামীর চরণ পূজা না হলে।।
     
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১৩৯। তাল-গরখেমটা
    দুঃখ হয় যার কর্ম্ম ফেরেদুঃখ হয় যার কর্ম ফেরে
    ভক্তি মুক্তি তপঃস্বর্গ নিরসন তাই হয়ে যায় রে।।
     
    তিন প্রকার আছে নারীএ ভব সংসার ভরি,
    সাধ্বীভোগ্যকুলটা নারীতাহারা এই তিনটি নাম ধরে
    পরকালের ভয়ে কেহসাধ্বী নারী হয় রে
    ও তার পতির মনকে তুষে সদাঅতি যত্ন সহকারে।।
     
    আপনার যশ কীর্ত্তিরটাবার জন্য অতি,
    কাম বশ রাখিতে সতীবসিয়ে পতি সেবা করে।।
    ভোগ্যা নারী চলে ভারীবস্তু অলংকারে,
    বিলাসিতার অনুগত হয়পতির সেবা করে
     
    কুলটা রমনী যারাঅন্তরে কপট করা,
    অবনী মাঝার তারাঐ রূপে পতি সেবা করে
    বশ্যতা দেখায়পতিরে তায়দুর্বুদ্ধি অন্তরে,
    কামবশে অন্য পুরুষমনে মনে বাঞ্ছা করে।।
     
    আত্মরাম জনে যাহাবুঝিতে পারে তাহা,
    অন্য জনে নাহি তাইকখনে বুঝিতে না পারে
    হরিগোসাইর বচনদীনা দুর্জ্জনমরিসনে কাম শরে,
    তুই অনুরাগ ধনুক শর নিয়েদাঁড়িয়ে থাক রূপের দ্বারে।।
     
    রাগিনী-জয়জিয়ালই
    ১৪০। তাল-কহরাবা
    যে জন সতী নারী হয় পরিত পদে মনকে বেধে মহানন্দে রয়
    যিনি সৎ কুলোদ্ভবা কন্যা তিনি পতিব্রতা হয়।।
    । অসৎ কুল জাতা কন্যা পিতৃ মাতৃ দোষে,
    কুলটা হইয়া তাকে সর্ব্বশাস্ত্রে ঘোষে
    ওসে স্বর্গ বেশ্যা অপ্সরা গনের জন্ম তারা হয়।।
    । স্বামী যদি গুণবান তবুও কখন,
    করে না তাহার সেবাগুণ দিয়া মন
    করে নিন্দা ভৎসনসে সর্বক্ষণ এই ব্যবসা সদারয়।।
    । অগ্নি মধ্যে সর্প মুখেকন্টকের বন,
    বসতি করা সহ্য হয়তবুও কখন
    তবু দুষ্ট নারীঅতি ভারিসঙ্গ করা নাহি যায়।।
    । ভেবে হরি গোসাই বলেশুনহে সবায়,
    রমনী কলে দুষ্টাকিন্তু কভু নয়
    ওরে শুনরে দীনামন দিলিনাকেন গুরুপতির পায়।।
     
    রাগিনী-উরুশেন
    ১৪১তাল--ঝাপ
    শুন বলি কুল বালা গণ-সবে রক্ষা কর পতির মন,
    পতির রণ ভজসর্ব্বদায়
    পতি না ভজিলে কোন কালে হে,
    ও তার মুক্তি নাই আর এ ধরায়।।
    । পতিতে বঞ্চনা কৈরে যে অন্যকে আম্রয় করে,
    কুম্ভিপাকে পরিয়া সে রয়
    উঠলে প্রহার করেÑযম কিঙ্করে হে,
    দিবানিশী কীটগণ দংশে তায়।।
    । চন্দ্র সূর্য্য স্থিতি কাল রয়সে নারী থাকেন তথায়,
    ঐ রূপেতে সদা কাল কাটায়
    ভীষণ প্রহার করেনাহি মরে হেবিকৃত ভীষন শব্দ করয়ে।।
    । কুল ধর্মের ভয়ে পরিপতির বসগা যেই নারী,
    অন্তিমে বস বৈকুণ্ঠে তার হয়
    পতি ভজ সবেসুখে রবে হেপাবে গোলক পতির পদাশ্রয়।।
    । সতী বসুন্ধরা বলেপতি নিন্দুক যে সকলে,
    তাদের ভার মোরসহ্য নাহি হয়
    দীনার কাতর বচনকুলবালগন,
    রতি মতি রাখ পতির পায়।।
     
    রাগিনী-জয় জিয়ালই
    ১৪২। তাল-কাহারবা
    সবে পতি কর সারপতি বিনে সতী নারীর গতি নাইরে আর।।
    ভবে অসতী না পারে কভু  পতির মনকে তুষিবার।।
    । অসতি যে করে লয় ঐ পর পতি আশ্রয়,
    সদাচারে মন-প্রাণ তার কখন না যায়
    সদা কুৎসিত বুলি কু-কর্ম্মেতে মত্ত থাকে অনিবার।।
    । ভর্ৎসনা স্বামীকে নারী করে দিবা নিশী,
    শ্বশুর শাশুরী হয় যেন দাস দাসী
    কথা কয় না স্পষ্টপ্রাণে কষ্ট দিয়ে চলে নিরন্তর।।
    । দুর্ব্বাক্যেতে দুর্শ্চারিনী পরানে কষ্ট দেয়,
    নিজা দেহ শান্তি রেখেতাদের খাটায়
    খাটে নিরবধি তবু যদিখেতে সইতে কষ্ট তার।।
    । পুত্র হয়ে নারী বাধ্যে থাকিয়া সদায়,
    বুড়া বুড়ির উপরে কুৎসিত গালি দেয়
    তাতে শাপ গ্রস্থ ব্যাধি যুক্ত নরকে বাস বংশ তার।।
    । দীনা বরে মাতাগুণ শুন বলি তায়,
    শ্বশুর শাশুরী পরম পূজ্য এ ধরায়
    পুজো তাদের পদপতি ভজএ ভিন্ন গতি নাই আর।।
     
    দীনবন্ধু গোসাইয়ের পান্ডুলিপিতে পাওয়া
    কয়েকখানা নতুন গান সংযোজিত হইল
    আসর গান
    রাগিনী-পালা গানের সুরে
    ১৪৩। তাল-একতালা
    যেন মম নেত্র কোনে হেরি নিশিীদিনে
    বসাইয়া হৃদি উত্তম আসনে
    আমার কঠিন হৃদয় এসে দয়াময়,
    আনন্দে নাচাও এ নিরানন্দ মনে।।
    । অন্তরালে লুকিথাক নিরঞ্জন
    হৃদপর্ন কুটিরে কর পদার্পণ
    শ্রদ্ধা সুচন্দনকরিব অর্পন
    এসে বস এইচিত্ত সিংহাসনে।।
    । ব্রহ্মান্ডের কর্ত্তাব্রহ্ম সনাতন,
    কি দিব তোমারে নাহি ভক্তি ধন
    শক্তি দেও এবারদু®কৃতি আমার
    বিনাশিয়া ডাকতে পারি সর্বক্ষণে।।
    । ডাকি হে তোমারে এস এই আসরে
    তব রাতুল পদ পূঁজিব  সাদরে
    দীবনবন্ধু কয়হরি দয়া ময়,
    দেখা দেও আমায় শান্তি সু-মিলনে।।
     
    রাগিনী বিরলা
    ১৪৪। তাল কাওয়ালী
    হস্তপদ বন্দী করে দরবারেতে নিয়া
    মন তোরে মার খাওয়াবগুরুর কাছে কৈয়া
    কেন চল যুতে যুতেসদা ঐ কু পথে,
    গুরু কর্ম করিতেকষ্ট যায় তোর হইয়া।।
     
    ভ্রাতা ছয়জন নিয়ে সুযুক্তি করি,
    জোর জুলুমে ধরে নিব গুরুর কাছারি
    বিচার করি আইন মতেদেয় যদি ঐ করণ পথে
    হরি বলি ঘাটে পথে কাঁদবি আকুল হইয়া।।
     
    জ্যেষ্ঠ গুরু ভ্রাতা হয়অনুরাগ সন্ন্যাসী
    জ্ঞান গুরুর ঐ বাম পার্শেরয় সদা বসি
    সে অনুরাগ শাসন চোটেদুর্ব্বুদ্ধি তোর যাবে ছুটে,
    বিচ্ছেদ গুরু ভগ্নির হাতেযাবি দগ্ধ হইয়া।।
     
    বিবেক নামে গুরু ভ্রাতাআছে একজন,
    সুশৃঙ্খল বেঁধে তোরেকরিবে পীড়ন
    হিংসা নিন্দা করি নিধনকরবে তার মনের মতন
    গুরু পদে হবি পতনআসবি না আর ফিরিয়া।।
     
    ভেবে দীনবন্ধু  বলেওমন বেপারী,
    গোনার দিন সরিয়া যায়বল হরি হরি
    সরল পথে হাঁটা চাইনৈলে তব নিস্তার নাই
    তোরে চিনে নিশি দিনেআছি ধৈর্য্য ধরিয়া।।
     
    রাগিনী-লম্পট
    ১৪৫। তাল খেমটা
    মন মাঝি বলি তোমারে
    পারি ধরে যেয়ো পারে অতি হুইসারে
    এবার সাবধানে ধরিও পারিমৈরনা ঘোলায় পরে।।
    । একেত বিপ্লব ঝটিকা আঁধার শর্বরী
    অকুল ঘোর তরঙ্গ বহে দুরন্ত পাড়ি
    যেয়ো সুযোগ চিনেনাম স্মরণেসু-সন্ধানে হাইল ধরে।।
    । শ্রদ্ধা পালে ভাবের মাস্তুল দাড়া করিয়ে,
    অনুরাগের বাদাম টেনে থেকে বসিয়ে
    যদি দয়া পবন উঠে তখননিঃসন্দেহে যাবি পারে।।
    । আনন্দে তরঙ্গ তরীঢেউয়ে ঢেউয়ে বাও,
    রসের তরী রসাং দিয়ে ঐ রসে চালাও
    যে জন রসিক সুজন গুরুর চরণসার করে সারাৎ সারে।।
    । মধ্য রাতে তরী নিয়ে হাইল চাপিয়ে রও,
    মন প্রাণ সমর্পিয়েগুরুর পদে ধ্যেও
    তবে পারে যাবি রূপের ছবি দেখবি দীনা সাদরে।।

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.