রাম-কৃষ্ণ-গৌরাঙ্গ কি একই (ব্যক্তি/)ঈশ্বরের ভিন্ন ভিন্ন (রূপ বা )অবতার ছিলেন?
অন্যান্য শাস্ত্র-গ্রন্থ থেকে এই সিদ্ধান্তে অনেকেই আসেন যে তারা ঈশ্বরের সাকার রূপ তথা ঈশ্বর এবং সবাইকেই কোন না কোন ক্ষেত্রে পূর্ণব্রহ্ম বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে অর্থাৎ সকলেই পূর্ণ ঈশ্বর ছিলেন। কিন্তু এতেও সন্দেহ যায় না, সবাই যে একই নয়, এসব তথ্যও শাস্ত্রে প্রছন্নভাবে উল্লেখ আছে। যেমন, রাম অবতারকে বলা হয় বৈকুন্ঠপতি বা বৈকুন্ঠ লোকের অধীশ্বর; কৃষ্ণকে বলা হয় গোলকনাথ বা গোলকপতি বা গোলোকেশ্বর; আবার গৌরাঙ্গকে বলা হয় বিষ্ণু লোকের অধীশ্বর। এখন প্রশ্ন হল, যদি ইনারা একই ঈশ্বরের বিভিন্ন রূপ বা অবতার হবে, তবে সবাই এক ঈশ্বর থেকে আসার কথা; কোন লোক থেকে আসার কথা নয়।
এখন আসি শ্রীশ্রীহরিলীলামৃতের ভাষ্যে,
শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত পড়লেও প্রথমোক্ত ভাবের মতই মনে হয়, ঈশ্বরই ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ভিন্ন রূপে আবির্ভূত হয়েছেন অর্থাৎ সকলেই একই। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে কবি রসরাজ শ্রীমৎ তারক চন্দ্র সরকার এর বিপরীত স্রোতের বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ কথা লিখেছেন। যেমন,
নন্দের নন্দন হ’ল গোলোকের নাথ।
সংকর্ষণ রাম অবতার তার সাথ।।
---শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত (অথ মঙ্গলাচরণ)
এখন সবাই নিজ নিজ বুদ্ধি-জ্ঞান দিয়ে বিচার করে দেখুন। নন্দের নন্দন অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ হল গোলকনাথ। এর সাথে সংকর্ষিত হয়েছে রাম অবতার। সংকর্ষণ শব্দের অর্থ (যতটুকু আমি বুঝি) হল প্রবল শক্তিতে আকর্ষণ করা। যেমন, চুম্বক লোহাকে আকর্ষণ করে। তেমনি, কৃষ্ণ রামকে আকর্ষণ করে নিজের সঙ্গে নিয়েছেন। আমার প্রশ্ন বা জানার বিষয় হল, যদি রাম এবং কৃষ্ণ একই ঈশ্বরের অবতার হয় বা উভয়ই একই হন, তবে সংকর্ষণ করার অর্থ কি? নিজেকে নিজে সংকর্ষণ কেন করবে বা নিজেকে নিজে সংকর্ষণ করা কি সম্ভব নাকি যুক্তিগ্রাহ্য?
একদল মতুয়া যেই রাম, সেই কৃষ্ণ, সেই গৌরাঙ্গ আবার সেইই হরি (শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর) বলে যুক্তি ও তথ্য সমাবেশ করে থাকেন, কিন্তু যেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি শ্রীরাম ও শ্রীকৃষ্ণই আলাদা আলাদা সত্ত্বার অধিকারী, সেক্ষেত্রে ইনারা কিভাবে শ্রী হরি হন? মতুয়াদের কাছে প্রশ্ন রইল।
আসলে কি? মতুয়ারা যুক্তি ও তথ্যসহকারে ব্যাখ্যা করবেন।
হরিবোল হরিবোল হরিবোল হরিবোল
Social Counter
Comments