শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
২২ পরিশিষ্ট খণ্ডঃ দ্বিতীয় তরঙ্গ (১ম অংশ) - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    ২২ পরিশিষ্ট খণ্ডঃ দ্বিতীয় তরঙ্গ (১ম অংশ)


                  পরিশিষ্ট খণ্ডঃ দ্বিতীয় তরঙ্গ (১ম অংশ)

    পরিশিষ্ট খণ্ড
    দ্বিতীয় তরঙ্গ
    বন্দনা

    জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস।
    জয় শ্রী বৈষ্ণব দাস জয় গৌরী দাস।।
    জয় শ্রী স্বরূপ দাস পঞ্চ সহোদর।
    পতিত পাবন হেতু হৈলা অবতার।।
    জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন।
    জয় শ্রী গোলোকচন্দ্র জয় শ্রী লোচন।।
    জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়।
    জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দময়।।
    (জয় শ্রীসুধন্যচাঁদ সভ্যভামাত্মজ।
    প্রেমানন্দে হরি গুরু শ্রীপতিচাঁদ ভজ।।)
    জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ।
    নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।

    স্বামী মহানন্দ পাগলের লীলা
    পয়ার
    বড় পাগল বলিয়া খ্যাতি শ্রীগোলোক।
    যে কালে ভূলোক ছাড়ি গেলেন গোলোক।।
    গোলোকের অঙ্গ হতে উঠে এক জ্যোতি।
    জ্যোতির সহিত এক উঠিল শকতি।।
    ধাইয়া উঠিল জ্যোতি গগন মণ্ডলে।
    নামিতে লাগিল জ্যোতি দেখিল সকলে।।
    জয়পুর তারকের বাড়ী দেহত্যাগ।
    এ সময় তারকের কোলে মহাভাগ।।
    সবে দেখে সেই জ্যোতি নিম্নগামী হয়।
    দেখিতে দেখিতে জ্যোতি হয়ে গেল লয়।।
    তারক দেখিল জ্যোতি পূর্বমুখ হল।
    নারিকেলবাড়ী গিয়া পতিত হইল।।
    মহানন্দ শ্রীঅঙ্গেতে মিশিল সে জ্যোতি।
    ছোট পাগল বলিয়া হল তাঁর খ্যাতি।।
    যেই দিন মহানন্দ করিল শ্রবণ।
    করিল গোলোকচাঁদ লীলা সম্বরণ।।
    শ্রবণেতে মহানন্দ নিরানন্দ চিত।
    ঠিক না করিতে পারে কি কার্য উচিৎ।।
    হইল উন্মনা যেন পাগলের ন্যায়।
    হইয়া বিস্মৃতি ভাব ইতি উতি ধায়।।
    ঘূর্ণবায়ু মত সদা করেন ভ্রমণ।
    যেখানে যেখানে পাগলের আগমন।।
    ভ্রমি সব ঘরে ঘরে করেন তালাস।
    খুঁজিয়া না পেয়ে ক্রমে বাড়ে হা হুতাশ।।
    অবশেষে করিলেন ফুকুরা গমন।
    মধুমতী নদী কূলে ঠেকিল তখন।।
    পাগলের বিরহেতে দহিতেছে কায়।
    নদীজল দেখে হল প্রফুল্ল হৃদয়।।
    জ্বালা জুড়াইতে জলে ঝাঁপ দিয়া পড়ে।
    দিল ঝাঁপ পেয়ে তাপ জল গেল সরে।।
    নদী মধ্যে যতদূর হয় অগ্রসর।
    জল শুষ্ক হয়ে যায় তপ্ত কলেবর।।
    দেহ হতে দুই পার্শ্বে আড়ে পরিসর।
    দুই হাত দেড় হাত জল দূরতর।।
    আছাড়িয়া করে সদা হস্ত আস্ফালন।
    জলস্তম্ভ মত উর্দ্ধে ধুম উদ্গীরণ।।
    হেনকালে মূর্তিমন্ত হইয়া গোঁসাই।
    গোলোক পাগল এসে দাঁড়ায় সে ঠাই।।
    বলে বাপ ছাড় তাপ আমি যাই নাই।
    জ্যোতি হয়ে তোর দেহে নিয়াছিরে ঠাই।।
    এই আমি তোর দেহে করিনু প্রবেশ।
    তুই রাজা হরিচাঁদ ভক্ত রাজ্য দেশ।।
    চিরদিন তরে মম এই মনোসাধ।
    কুটি নাটি কাটি দেশ করিবি আবাদ।।
    পাগলে পাইয়া অগ্নি নির্বাপিত হল।
    পুনরায় নারিকেলবাড়ী চলে গেল।।
    ভ্রমিত পাগল চাঁদ যেই যেই বাড়ী।
    মহানন্দ ভ্রমে তথা লাহিড়ী লাহিড়ী।।
    শালনগরের মধ্যে পালপাড়া গ্রাম।
    তথায় বসতি তারাচাঁদ পাল নাম।।
    ওঢ়াকাঁদি মতো সম্প্রদায় যত ছিল।
    সবাকার নিমন্ত্রণ তথায় হইল।।
    তারাচাঁদ ছোট পাগলের কাছে গিয়ে।
    দিন ধার্য করে এল আনন্দিত হয়ে।।
    মতুয়ার ভীড় হল পাগলের সঙ্গেতে।
    তিন শত মতুয়া মিলিল একসাথে।।
    সবে হরি হরি বলি বাহির হইল।
    তরাইল বাজারে সকলে উপজিল।।
    পাঁচবার খেয়াপার মতুয়া সকল।
    নদীমধ্যে এপার ওপার হরিবোল।।
    সে দিন বাজার পড়ে মেলা মিলেছিল।
    গান সাঙ্গ হয়ে মেলা ভাঙ্গিয়া চলিল।।
    একেত মেলার মাঠে ছিল গণ্ডগোল।
    তাঁর সঙ্গে মিশে গেল সুধা হরিবোল।।
    দোকানী পশারী যত দোকানে দোকানে।
    সবে বলে হরি হরি ওই নাম শুনে।।
    বাজারে বসতি বড় বড় মহাজন।
    ঘরে ঘরে সবে করে নাম সংকীর্তন।।
    মেলায় এসেছে লোক ফিরে বাড়ী যায়।
    ঘাটে পথে তারা সবে হরিনাম লয়।।
    পার হয় যত মতো খেয়াঘাটে রই।
    অন্য নাম নাহি মুখে হরিনাম বই।।
    মেলার অধ্যক্ষ যত তারা বলে একি।
    ভেঙ্গেছিল মেলা কি পুনশ্চ হল নাকি।।
    কেহ কেহ ঘুরিতেছে নাগর দোলায়।
    ঘূর্ণমান হয়ে ভব নদীর গোলায়।।
    তাহারা চাহিয়া দেখে ঘাটের দিকেতে।
    মতুয়ারা হরি বলে প্রেমানন্দ চিতে।।
    তারা সবে হরি বলে নাগরদোলায়।
    অধে হরি উর্দ্ধে হরি তরঙ্গ গোলায়।।
    ঝাঁকি লেগে দোলা ভাঙ্গে এই ভয় করে।
    দোলা আলা লোক সব নামাইল পরে।।
    ভূমিতে নামিয়া লোক হাতে দিয়ে তালি।
    নদীর কিনারে যায় হরি হরি বলি।।
    বেশ্যারা ছিলেন জলে স্নান করিবারে।
    কেহ বা বাজারে কেহ কিনারে বা ঘরে।।
    ওপারে এপারে হরিধ্বনি করে সব।
    খেয়ানায় নদীমধ্যে উঠিয়াছে রব।।
    তাহা শুনি বেশ্যাগণ বলে ধন্য ধন্য।
    হরি হরি বলে তারা হয়ে জ্ঞানশূন্য।।
    অশ্রুপূর্ণ শিবনেত্র হরিনাম লয়।
    মধ্যে হুলুধ্বনি করে জয় জয় জয়।।
    এই মতে পার হল মতুয়ারগণ।
    নাচিয়া গাহিয়া সবে করিল গমন।।
    মেলার বাজারে হল কিমাশ্চর্য লীলা।
    রচিল তারকচন্দ্র পাগলের খেলা।।

    স্বামীর শালনগর গমন।
    পয়ার
    হাসে গায় নাচে কাঁদে মতুয়ার দল।
    কুন্দসী গ্রামেতে এসে উঠিল সকলে।।
    শ্রীঅদ্বৈত দীননাথ কালাচাঁদ পাল।
    তিন বাড়ী পরিপূর্ণ মতুয়ার দল।।
    কতকাংশ চলে গেল জয়পুর গ্রাম।
    তারকের বাড়ী ঘিরে করে হরিনাম।।
    কুন্দসীর তিন বাড়ী জুড়িয়া বসিল।
    মাধ্যাহ্নিক স্নানাদি ভোজন সমাধিল।।
    ভোজনের পরে দিয়া হরি হরি ভীড়।
    আচমন করি সবে হইল বাহির।।
    নাচিতে গাইতে সবে প্রেমেতে বিভোর।
    উপনীত হল পালপাড়া শালনগর।।
    নামেতে মাতিয়া সবে বাহ্যজ্ঞান হারা।
    বৈবর্ণ পূলক স্বেদ চক্ষে অশ্রুধারা।।
    দিঘলিয়াবাসী মধুসূদন ঠাকুর।
    চক্রবর্তী উপাধি ভজনে সুচতুর।।
    তার এক পুত্র মাত্র অক্ষয় নামেতে।
    ব্রহ্মত্ব ত্যজিয়া মিশিলেন অই মতে।।
    ছিণ্ডিয়া গলার পৈতা দেন পরিচয়।
    মতুয়া হয়েছি ওঢ়াকাঁদি সম্প্রদায়।।
    শ্রীগুরু তারক চন্দ্র জননী সাধনা।
    ওঢ়াকাঁদি হরিচাঁদে করি আরাধনা।।
    প্রেমদাতা মহানন্দ চিদানন্দময়।
    জয় ওঢ়াকাঁদি জয় ওঢ়াকাঁদি জয়।।
    হরিবোলা সঙ্গে তিনি পালপাড়া গিয়া।
    নামে প্রেমে কীর্তনেতে গেলেন মাতিয়া।।
    কীর্তনের মাঝে গিয়া মনের আনন্দে।
    মহানন্দ পাগলকে করিলেন স্কন্ধে।।
    মহানন্দ অক্ষয়ের স্কন্ধেতে বসিয়া।
    অস্থি সন্ধি কল যেন দিলেন ছাড়িয়া।।
    এ রঙ্গ দেখিয়া প্রেমে উন্মত্ত সকল।
    সবাকার মুখে মাত্র সুধা হরিবোল।।
    ক্ষণ পরে সবে করে ঠাকুরকে স্কন্ধে।
    বাহ্যহারা কে কারে কি করে প্রেমানন্দে।।
    ব্রাহ্মণ কায়স্থ কুণ্ডু পাল ঝালো মালো।
    নমঃশূদ্র সাহা সাধু একত্র হইল।।
    মাতিয়া কীর্তনানন্দে প্রায় নিশি শেষ।
    পাগলচাঁদের হল অদ্বৈত আবেশ।।
    কহিছেন তোরা আলি সে আমার কই।
    যারে নেড়ে এনে আমি নাড়া নাম লই।।
    যার জন্য করিলাম সাধ্য এতদূর।
    অসাধ্য সাধন করি বসে শান্তিপুর।।
    যার জন্য ফুল তুলসী ধাইল উজান।
    কইরে আমার সেই পরাণের পরাণ।।
    অক্ষয় ঠাকুর কহে শোন ওরে নাড়া।
    ওঢ়াকাঁদি আসিয়েছে তোর সেই গোরা।।
    তার দুই পুত্র গুরুচাঁদ উমাকান্ত।
    তার প্রাণপুতলী করিছে লীলা অন্ত।।
    দেহ ছেড়ে করেছেন গোলোকে গমন।
    জ্যেষ্ঠ পুত্র গুরুচাঁদ জগত জীবন।।
    তোর হরিচাঁদ গুরুচাঁদে মিশিয়াছে।
    মানুষে মানুষ মেশা বর্তমানে আছে।।
    বলিতে বলিতে কয় মুই শ্রীচৈতন্য।
    অধরোষ্ঠ চক্ষুদ্বয় হল রক্তবর্ণ।।
    রোমকূপে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুণ্ডু উথলিল
    কণ্টক আকার কেশ লোম উর্দ্ধ হল।।
    দুজনার মোহ প্রাপ্ত জ্ঞান নাহি আর।
    মতুয়া সকলে হরি বলে অনিবার।।
    দশা ভঙ্গ হল প্রায় নিশি অবসানে।
    করিল কীর্তন ক্ষান্ত সবে সুস্থ মনে।।
    ভোজন হইল সব ভোরের সময়।
    আচমন সময়েতে অরুণ উদয়।।
    আরবার মাতিলেন নাম সংকীর্তনে।
    গাইতে গাইতে সবে চলিলেন স্নানে।।
    মধুমতী ভরট গোগের ঘাটে গিয়া।
    জলকেলী করে সবে আনন্দে মাতিয়া।।
    হরি হরি হরি বলি করে জলকেলী।
    প্রেমাবেশে করে সবে জল ফেলাফেলী।।
    জলকেলী করি শেষে ভিজা বসনেতে।
    আসিলেন তারাচাঁদ পালের বাটীতে।।
    দধি খদি চিঁড়া চিনি জল ফলাহার।
    ফুল মহোৎসব সবে করে বার বার।।
    শালনগরের মহোৎসবে এই লীলা।
    গোলোক পুলক হেতু রায় বিরচিলা।।

    সাহাবাজপুর রাখাল সঙ্গে পাগলের খেলা।
    পয়ার
    সাহাবাজপুর গ্রামে হল নিমন্ত্রণ।
    দল বল সহ করে পাগল গমন।।
    তপস্বী পালের বাড়ী হবে মহোৎসব।
    পুলকে চলিল মতুয়ার গণ সব।।
    মধ্যাহ্ন সময় যাত্রা করিল সকলে।
    হরি হরি বলি সবে প্রেমানন্দে চলে।।
    সাত ভাগ হয়ে চলে মতুয়ারা সব।
    জটকের বিল মধ্যে উঠে কলরব।।
    বিলের কিনারা দিয়ে মতুয়ারা যায়।
    জটকের বিলে খালে ডাঙ্গায় নৌকায়।।
    যেখানে যে লোক সবে হরিগুণ গায়।
    কেহ বলে বাবা হরিচাঁদ জয় জয়।।
    কেহ বলে জয় জয় গুরুচাঁদ জয়।
    কেহ বলে গোলোক চাঁদের জয় জয়।।
    কেহ বলে জয় জয় মহানন্দ জয়।
    কেহ বলে ওঢ়াকাঁদি ভক্তগণ জয়।।
    কেহ কেহ বলে জয় জয় হরিপাল।
    কেহ বলে জয় জয় পালের ময়াল।।
    কহে বলে পাল ধন্য কল হরিপাল।
    কেশবপুর নিবাসী শ্রীগোলোক পাল।।
    তার জ্যেষ্ঠ পুত্র নাম হরিশ্চন্দ্র পাল।
    কেহ বলে হরিপাল পালের ভূপাল।।
    মধ্যম দুর্গাচরণ অপরে প্রহলদ।
    কনিষ্ঠ  শ্রীগৌর পাল নামেতে উন্মাদ।।
    চারি পুত্র সহ মাতোয়ারা হরিবোলা।
    কেহ কেহ হরিপালে বলে হরিবোলা।।
    হরিবোলা হয়ে হরি মাতাইল পাল।
    সবে বলে হরিপাল পালের ভূপাল।।
    এইভাবে সবাই দিতেছে হরিধ্বনি।
    জটকের বিলে তার হল প্রতিধ্বনি।।
    হরিধ্বনি শুনা যায় গগন মণ্ডলে।
    জ্ঞান হয় দেবগণে হরি হরি বলে।।
    সকলে থামিল শুনি হরি হরি ধ্বনি।
    তবু শূন্যে শুনা যায় হরি হরি ধ্বনি।।
    শুনে প্রেমানন্দ চিত্ত মতুয়া সকলে।
    লম্ফ দিয়া যেতে চায় দেবতার দলে।।
    অক্ষয় ঠাকুর আর হরিশ্চন্দ্র পাল।
    পূর্ণচন্দ্র অধিকারী মতুয়া মিশাল।।
    গুরু গিরি করিতেন শিষ্য ছিল তার।
    শিষ্য সহ মাতিলেন আনন্দ ওপার।।
    রসনা তারক সঙ্গে এই চারিজন।
    কতক মতুয়া আছে সঙ্গেতে মিলন।।
    এক এক দলে লোক অন্যূন পঞ্চাশ।
    সবে মিলে হরি বলে মনেতে উল্লাস।।
    জটকের বিল মধ্যে গরু পালে পাল।
    দশ বিশ গরু রাখে একেক রাখাল।।
    কেহ কেহ বিল কূলে গরু বাঁধিয়াছে।
    দলে দলে রাখালেরা খেলা করিতেছে।।
    হরি বোল শুনে তারা আনন্দ হৃদয়।
    কেহ কেহ হরি বলে দৌড়াইয়া যায়।।
    দৌড়িয়া দৌড়িয়া মাঝে মাঝে মারে লম্ফ।
    আনন্দে বসুধা নাচে যেন ভূমিকম্প।।
    তার মধ্যে তারক রসনা বলে বোল।
    এই ঠাই দাঁড়া দেখি মতুয়া সকল।।
    আর ছয় দল রহিয়াছে ছয় ঠাই।
    একদল মাঝখানে দাঁড়ায় সবাই।।
    তারক কহিছে তোরা ছিলি বৃন্দাবনে
    গোচারণ করিতি সে গোপালের সনে।।
    অন্য অন্য ঠাই যদি যেত ধেনু সব।
    এক ঠাই হত শুনি শ্যাম বংশী রব।।
    কানু গিয়া গোচারণে বাজাইত বেণু।
    তোরা দিতি আবাধ্বনি নাচিত সে ধেনু।।
    সেই কানু যশোদানন্দন দয়াময়।
    এখন হইল যশোমন্তের তনয়।।
    সেই যশোমন্ত সুত প্রভু হরিচাঁদ।
    তোদের হৃদয় আছে তারে ধরা ফাঁদ।।
    তোরা সেই চাঁদ সঙ্গে অনুসঙ্গী ছিলি।
    প্রভু আগমনে তোরা সঙ্গে সঙ্গে এলি।।
    একবার ব্রজভাবে দেরে আবাধ্বনি।
    ব্রজবুলি বল সেই রাখালিয়া বাণী।।
    স্থানে স্থানে পালে পালে ধেনু বৎসগণ।
    তাহা দেখি ব্রজভাবে দ্রবীভূত মন।।
    এই সেই বৃন্দাবন সেই গোবর্ধন।
    খেলা করে এই সেই রাখালের গণ।।
    উন্মত্ত রাখাল দিকে বলেছে তারক।
    তোরা ত ব্রজেতে ছিলি ব্রজের বালক।।
    ব্রজভাবে একবার বল হারে রে রে।
    অদ্য তোরা সবে মিলে নাচ একত্তরে।।
    তাহা শুনি রাখালেরা হল একত্তর।
    রাখালেরা নৃত্য করে মতুয়া ভিতর।।
    চৌদিকে মতুয়াগণ গোলাকার হয়ে।
    নাচে গায় লম্ফ দেয় হরিধ্বনি দিয়ে।।
    রাখালেরা প্রেমে মেতে বলে হরিবোল।
    জলে হরি স্থলে হরি শূন্যে হরিবোল।।
    মত্ত হয়ে প্রেমাবেশে কীর্তন ভিতরে।
    তারক টানিয়া নিল অক্ষয় ঠাকুরে।
    পূর্ণচন্দ্র হরিপাল ধরাধরি করে।
    বাঁকা হয়ে দাঁড়াইল আবাধ্বনি করে।।
    শুনে আবাধ্বনি করে যতেক রাখাল।
    তাহা শুনি নাচে সব গোধনের পাল।।
    নাচিতে লাগিল বাঁধা গরু দড়ি ছিঁড়ে।
    (এক লাইন গ্যাপ)
    উচ্ছ পুচ্ছ নাচে গরু গলা করে লম্বা।
    উর্দ্ধ কর্ণ মুণ্ড নেত্র করে হাম্বা হাম্বা।।
    কতদূরে দৌড়ে গিয়া দাঁড়াইয়া কম্প।
    তার মধ্যে কোনটা দৌড়িয়া মারে লম্ফ।।
    তাহা দেখি সবে মিলে কাঁদিয়া কাঁদিয়া।
    নাচিছে মানুষ গরু একত্র হইয়া।।
    পিছে ছিল মহানন্দ পাগলের দল।
    দ্রুত বেগে উতরিল বলি হরিবল।।
    নাচিছে মানুষ গরু তার মধ্যে দিয়া।
    হাতে হাতে ধরাধরি চলেছে ধাইয়া।।
    চলেছে দক্ষিণ দিকে জ্ঞান নাহি আর।
    লম্ফ দিয়া জটকের খাল হল পার।।
    তাহা দেখি লম্ফ দিয়া পড়ে লোক সব।
    রাখালেরা লম্ফ দিল মনেতে উৎসব।।
    জলে পড়ি কেহ কেহ ঝাঁপাঝাঁপি করে।
    সাঁতারিয়া সাঁতারিয়া কহে যায় পারে।।
    অনুমান দুই রসি আড়ে পরিসর।
    লম্ফ দিয়া মহানন্দ হয়ে গেল পার।।
    জলেতে নামিয়া সবে হরিবোল দিয়ে।
    ঝাঁপাইয়া সাঁতারিয়া গেল পার হয়ে।।
    গভীর খালের মধ্যে চারি হাত বারি।
    হরি বলে লম্ফে ঝম্পে সবে দিল পাড়ি।।
    গোচরে যতেক গরু খাল কিনারায়।
    দৌড়িয়া আসিয়া খাল পার হতে চায়।।
    পাগল ওপারে থেকে কহিছে ডাকিয়া।
    তোরা প্রেমানন্দ কর ওপারে থাকিয়া।।
    থাক থাক বলে ঘুরে ঘুরাইল যষ্ঠি।
    থামিল গরুর পাল তাহা করি দৃষ্টি।।
    ওপারে নাচিছে গরু এপারে মানুষ।
    পশু কি মানুষ সবে হারিয়েছে হুঁশ।।
    কোলাকুলি ঢলাঢলি কাঁদাকাঁদি করি।
    মাতুয়ারা মাতোয়ারা বলি হরি হরি।।
    চারি পাঁচ জনে ধরে বাহু প্রসারিয়া।
    তদ্রূপ রাখাল গণে ধরিয়া ধরিয়া।।
    রাখালগণেরে সব দিলেন বিদায়।
    উত্তর পারেতে গেল গো-পাল যথায়।।
    গো-পাল শান্তায়ে নিল যতেক গো-পাল।
    গো-পাল বাছিয়া নিল যার যে গো-পাল।।
    এদিকে মতুয়াগণ হরিধ্বনি দিয়া।
    সাহাবাজপুরে সব উতরিল গিয়া।।
    কতকাংশ জয়পুর কতক কুন্দসী।
    হরিনাম করে সবে প্রেম নীরে ভাসি।।
    কতকাংশ রহিলেন সাহাবাজপুর।
    মহানন্দ রহে আর অক্ষয় ঠাকুর।।
    পূর্ণচন্দ্র অধিকারী হরিশ্চন্দ্র পাল।
    তপস্বী পালের বাড়ী কীর্তন রসাল।।
    অর্ধনিশি পর্যন্ত হইল সংকীর্তন।
    ঘাটে পথে মাতিল পুরুষ নারীগণ।।
    রামাগণে যায় সবে আনিবারে জল।
    হুলুধ্বনি দেয় আর বলে হরিবল।।
    স্ত্রী পুরুষ যেই জনে যেই কার্যে যায়।
    চক্ষে জল ঝরে আর হরিনাম লয়।।
    কীর্তন হইল সাঙ্গ বিশ্রামে সবায়।
    দুই তিন পালেঙ্গায় কেহ বা পিঁড়ায়।।
    প্রাঙ্গণে তপস্বী পাল আর হরিপাল।
    হেনকালে দধি দিতে আইল গোয়াল।।
    বাঁকস্কন্ধে হরি নাম করিতে করিতে।
    দুই জন করে নৃত্য প্রাঙ্গণ মাঝেতে।
    হরিপাল ধরি তার বাঁক নামাইল।
    মতুয়ারা সবে মিলি ভোজন করিল।।
    নাম গানে মত্ত হয়ে নিশি পোহাইল।
    প্রাতেঃ সবে জয়পুর গমন করিল।।
    জয়পুর উত্তরিল সাধনার বাড়ী।
    প্রেমে মত্ত সকলে করিছে দৌড়াদৌড়ি।।
    কুন্দসী নিবাসী নাম দীননাথ পাল।
    হরিনামে মত্ত হয়ে হয়েছে বেহাল।।
    তার ছিল মহাব্যাধি নাসিকাগ্র ফুলা।
    নাকের নীচে ফুলে বর্ণ হল ধলা।।
    মুখে চাকা চাকা দাগ রসপিত্ত দোষ।
    ব্যাধিযুক্ত তার মনে সদা অসন্তোষ।।
    তার নারী স্বপ্নে দেখে ব্যাধি হবে মাপ।
    জয়পুরে তারকে ডাকিলে ধর্মবাপ।।
    তারকে ডাকিল বাপ ব্যাধি সেরে গেল।
    সেই হতে দীন পাল বড় মতো হল।।
    মানসিক ছিল তার মহোৎসব দিবে।
    নিবেদিল পাগলের শ্রীপদ পল্লবে।।
    গললগ্নীকৃতবাসে পাগলেরে কয়।
    মহোৎসব দিতে হবে কুন্দসী আলয়।।
    একখানি বাড়ী করিয়াছেন তারক।
    দীনেপালে আছে সেই বাড়ীর রক্ষক।।
    তারকের দাস আমি থাকি সেই ঠাই।
    দয়া করি সেই বাড়ী চলুন গোঁসাই।।
    তাহা শুনি পাগল চলিল সেই বাড়ী।
    মতুয়ারা সবে ধায় করি দৌড়াদৌড়ি।।
    মতুয়া একত্র দীননাথের বাটীতে।
    কীর্তন করিছে সবে মহানন্দে মেতে।।
    অক্ষয় ঠাকুর নাচে নাচে মহানন্দ।
    মদন গোপাল হরি সবে মহানন্দ।।
    তাহাদের পিছে পিছে নেচেছে তারক।
    অই সে অদ্বৈত নাচে অন্তরে পুলক।।
    নাচিতে নাচিতে মত্ত হল দীনপাল।
    ডেকে বলে পাগলের মুখ কেন লাল।।
    হরি বলে হস্ত তুলে মুখ বিস্তারিল।
    অমনি মুখেতে রক্ত উদ্গম হইল।।
    তাহা দেখি সবে মিলে পাগলে ধরিল।
    পাগলে মস্তকে করি নাচিতে লাগিল।।
    মস্তকে থাকিয়া ক্ষণে ক্ষণে অঙ্গ ঝাঁকে।
    ঝাঁকিতে হইয়া শূন্য চাঁদোয়ায় ঠেকে।।
    শূন্য হতে পড়ে পুনঃ মাথার উপর।
    এই ভাবে ছুটাছুটি করে বার বার।।
    হরিপাল গিয়া শীঘ্র পাগলে ধরিল।
    হরিপালের মস্তকে পাগল বসিল।।
    লম্ফ দিয়া পাগল পড়িল ধরাতলে।
    প্রেমাবেশে তথা হতে দৌড়াইয়া চলে।।
    পিছে পিছে ধাইলেন অক্ষয় ঠাকুর।
    হরিপাল কহে তবে যাও জয়পুর।।
    তাহা শুনি দৌড়াইয়া চলিল তারক।
    সঙ্গে সঙ্গে দৌড়িয়া যায় কত লোক।।
    যতেক মতুয়া গণ চলিল ধাইয়া।
    নামে গানে প্রেমে মত্ত নাচিয়া গাইয়া।।
    দৌড়িয়া দৌড়িয়া কারু হল ঘনশ্বাস।
    মাধাই আবেশ হল মদন বিশ্বাস।।
    এক গোটা বাঁশ ধরি দক্ষিণ করেতে।
    ভাঙ্গা এক হাঁড়ি ধরিলেন বাম হাতে।।
    বলে হারে বেটা কোথা চলিলি ধাইয়া।
    মাধারে ভাড়ায়ে কোথা যাবি পালাইয়া।।
    কই তোর গোরা কই কই তোর নিতা।
    কাঁধার আঘাতে তার ভেঙ্গে দিব মাথা।।
    তাহা শুনি হরিপাল আগুয়ে দাঁড়ায়।
    অই নিতা যায় বলি পাগলে দেখায়।।
    তার সঙ্গে দেখাইল অক্ষয় ঠাকুরে।
    অই সেই গোরা যায় কে ঠেকাবে ওরে।।
    খাটিবে না জোর তোর নিতাইর ঠাই।
    এসেছি আমরা তোর ভাঙ্গিব বড়াই।।
    কামের কামনা মোরা করিয়াছি চূর্ণ।
    পাপেরে তাড়িয়া দিনু না রাখিনু পুণ্য।।
    আর কিরে মাধা তোর দস্যুত্ব রাখিব।
    এই হরিনাম অস্ত্রে পাষণ্ড দলিব।।
    জগৎ মাতাব বলি প্রতিজ্ঞা আছয়।
    হইয়া জগৎ ছাড়া পালাবি কোথায়।।
    মদন কহিছে ডেকে মাধাই আবেশে।
    এত যদি দর্প তবে দাঁড়া কাছে এসে।।
    দৌড়িলে দণ্ডিব তোরে দেখ দণ্ড হাতে।
    দণ্ডের জীবন দণ্ড মাধার দণ্ডেতে।।
    তাহা দেখি হরিপাল কহে পাগলেরে।
    ঐ এল মদনা বেটা মাধারূপ ধরে।।
    তাহা শুনি মহানন্দ ফিরিয়া দাঁড়ায়।
    বলে মাধা হরি বল ধরি তোর পায়।।
    মাধা বেশে মদনের অধরোষ্ঠ কম্প।
    পাগলের সম্মুখে পড়িয়া দিল লম্ফ।।
    দণ্ড ধরি এক বাড়ী পাগলকে হাকে।
    হাঁড়ি ফেলাইয়া মারে পাগল মস্তকে।।
    দণ্ড বাড়ী লাগিল না পাগলের গায়।
    হাঁড়ির আঘাত লেগে হাঁড়ি ভেঙ্গে যায়।।
    অক্ষয় ঠাকুর ধরে ভাঙ্গা হাঁড়ি কাঁধা।
    লম্ফ দিয়া বলে তোর বাঁচা নাই মাধা।।
    নিতাইয়ের অঙ্গে দণ্ড আহারে পাষণ্ড।
    ছিণ্ডিব চক্রেতে তোর দু ভায়ের মুণ্ড।।
    নিত্যানন্দ ভাবাবেশে কহে মহানন্দ।
    চক্র ছাড়ি দে ওরে অক্ষয় প্রেমানন্দ।।
    কোথা লাগে দণ্ড তোর হরি দণ্ডধারী
    ঘরে ঘরে মেগে খাবি প্রেমের ভিখারী।।
    প্রেমাবেশে পিপাসে ধরিল আশা দণ্ড
    সেই দণ্ড তাহাও করিব আমি খণ্ড।।
    তোর কি দণ্ডিতে হয় যেই তোরে দণ্ডে।
    নামরস পশাও উহার মেরুদণ্ডে।।
    সুধাখণ্ড দয়ারবি কর প্রকাশিত।
    জ্ঞানান্যে হৃদয়াম্বুজে সিঞ্চ প্রেমামৃত।।
    দাঁড়াল মদন মাধা যষ্ঠি দণ্ডবৎ।
    নিম্নেতে দক্ষিণ হাত উর্দ্ধে বাম হাত।।
    হস্তপদ টান লোম কেশ উর্দ্ধটান।
    স্বেদ কম্প অশ্রু হর্ষ উত্তার নয়ন।।
    তারকের হল তথা জগাই আবেশ।
    দন্তে ধরে এক গোছা তৃণ আর কেশ।।
    লোটাইয়া পল গিয়া পাগলের পায়।
    পাগল সে তৃণগাছি দন্তে ধরে লয়।।
    উঠিয়া পাগল ধরে তারকের গলে।
    তারক পড়িল মহানন্দ পদতলে।।
    লোহাগড়া বাজার দক্ষিণে এই লীলে।
    বন্দরের লোকে দেখে হরি হরি বলে।।
    কলরব হরিবল বাজার ভিতরে।
    দোকানে বাজারে বন্দরের ঘরে ঘরে।।
    তথা হতে চলিলেন তারকের ঘাটে।
    তারকের নারী এল নবগঙ্গা তটে।।
    তারকের ছিল যে পিস্তত ভ্রাতৃবধূ।
    দেখে সুখে পান করে লীলাচক্র মধু।।
    পাগল আসিয়া দুই বধূকে ধরিল।
    পাগলের দুই পার্শ্বে দুজন রহিল।।
    দুইজনে পাগলে ধরিল সাপটিয়া।
    পাগল দোঁহার স্কন্ধে দুই বাহু দিয়া।।
    উতরিল তিনজনে তারকের বাড়ী।
    তিনজনে একত্রে প্রাঙ্গণে রহে পড়ি।।
    তাহা দেখি কীর্তনের লোক যত ছিল।
    তারকের বাড়ী গিয়া কীর্তনে মাতিল।।
    তিনজনে মধ্যে রাখি চৌদিকে ঘেরিয়া।
    সংকীর্তন করে সবে ফিরিয়া ঘুরিয়া।।
    ক্ষণে ক্ষণে ঘুরে যেন কুম্ভকার চাক।
    উৎকলের কীর্তন যেমন বেড়াপাক।।
    মধ্যেতে পাগলচাঁদ পড়িল ঢলিয়া।
    দুই নারী পাগলের চরণ ধরিয়া।।
    মাথার নাহিক বাস প্রেম উপলক্ষে।
    ঘন ঘন কম্পে গাত্র বারিধারা চক্ষে।।
    পাড়ার যতেক নারী আসিয়া অমনি।
    কেহ হরিধ্বনি কেহ দেয় হুলুধ্বনি।।
    কোন কোন নাগরী কীর্তন শুনে কাঁদে।
    কোন নারী জল ঢালে সংকীর্তন মধ্যে।।
    সেই জল কীর্তন মাঝারে হয় কাদা।
    যেন সুরধনী ধারা প্রবাহিতা সদা।।
    ক্রমে জল শুকাইয়া হয় গুড়া গোলা।
    পুনঃ পুনঃ গগন মণ্ডলে উড়ে ধুলা।।
    এইরূপ কীর্তন হইল বহুক্ষণ।
    তারক ধরিল দুই বধূর চরণ।।
    কাঁদিয়া কহেন মোর সার্থক জীবন।
    আমি ধন্য হইলাম তোদের কারণ।।
    প্রভু মহানন্দ লয়ে আনন্দ করিলি।
    হরিচাঁদ প্রেম নীরে আমারে ভাসালি।।
    অই ঠাই বসে শান্ত হইল সকল।
    তথা বসি খাইল চাউল আর জল।।
    গলে বস্ত্র করজোড়ে পাগলেরে কয়।
    কুন্দসীর মহোৎসব নিরুৎসব ময়।।
    তোমাবিনে নাহি হয় কোন মহোৎসব।
    তব সঙ্গে এখানে আছে মহোৎসব।।
    শুনিয়া পাগল শীঘ্র শীঘ্র যাত্রা কৈল।
    পূর্বঘাটে এসে সবে জলেতে নামিল।।
    কেহ কেহ ভেসে যায় কুন্দসীর ঘাটে।
    দীননাথ পালের বাটীতে গিয়া উঠে।।
    কেহ কেহ উঠে লোহাগাড়ার ঘাটেতে।।
    সিক্ত বস্ত্রে যায় দীন পালের বাটীতে।।
    দীননাথ বাটী হল সাধুসেবা সব।
    এইরূপ মহানন্দে আনন্দ উৎসব।।
    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত সুধাধিক সুধা।
    তারক যাচিছে হেতু রসনার ক্ষুধা।।


    No comments:

    Post a Comment

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.