প্রথম অংশ
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ বন্দনা
মাতা পিতার বন্দনা
পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম সর্ব শাস্ত্রে কয়।
ভাবিয়া পিতার পদ রাখিনু মাথায়।।
যাহার কৃপায় আমি এ জগতে আসি।
তাহার শরণে পাপ খণ্ডে রাশি রাশি।।
না বুঝিয়া কত পাপ করেছি চরণে।
এ পাপের নাহি ক্ষমা সে চরণ বিনে।।
কত কষ্টে পিতা মোর করেছে পালন।
পিতৃ ঋণ শোধ দিতে পারে কোন জন।।
পিতা যে পরম বস্তু সাধনের ধন।
পূঁজিলিনা সে চরণ ওরে মূঢ় মন।।
মায়াজালে হয়ে বন্দি সে সব ভুলিলি।
ঘরেতে রাখিয়া ধর বাহিরে খুঁজিলি।।
যখনে ছিলিরে মন পিতৃ-মণি পুরে।
তথা হতে আইলিরে জননী জঠরে।।
দশ মাস দশ দিন ছিলি মাতৃগর্ভে।
মাতা মোর কত কষ্ট করে কত ভাবে।।
অসহ্য যাতনা মাতা সহে হাস্য মুখে।
আশাতে বাঁধিয়া বুক সদা থাকে সুখে।।
দশ মাস দশ দিন যখনে হইল।
প্রসব করিতে মাতা কত কষ্ট পেল।।
তারপর কতভাবে করেছে পালন।
স্তন দুগ্ধ দিয়ে মোরে বাঁচায় জীবন।।
তবু মাতা দিন রাত প্রফুল্ল-অন্তরে।
স্নেহভরে কোলে করে কত যত্ন করে।।
নিজে না খাইয়া মাতা খাওয়ায়েছে মোরে।
মলমূত্র ধোঁয়ায়েছে ঘৃণা নাহি করে।।
এত কষ্ট করে মাতা তবু হাসি মুখে।
মা শব্দের তুল্য দিতে আর কিছু নাই।
ঐ চরণে গয়া গঙ্গা সব কিছু পাই।।
এহেন মায়ের পদ ভাবিয়া অন্তরে।
লিখিলাম এই পুথি মা বাপের বরে।।
মাতা পিতার চরণে করিলাম স্তুতি।
পাপ দেহে যেন মোর জাগয়ে ভকতি।।
তাই বলি ওরে মন হরি হরি বল।
কান্দিয়া বিনোদ বলে বেলা ডুবে গেল।।
ভাবিয়া পিতার পদ রাখিনু মাথায়।।
যাহার কৃপায় আমি এ জগতে আসি।
তাহার শরণে পাপ খণ্ডে রাশি রাশি।।
না বুঝিয়া কত পাপ করেছি চরণে।
এ পাপের নাহি ক্ষমা সে চরণ বিনে।।
কত কষ্টে পিতা মোর করেছে পালন।
পিতৃ ঋণ শোধ দিতে পারে কোন জন।।
পিতা যে পরম বস্তু সাধনের ধন।
পূঁজিলিনা সে চরণ ওরে মূঢ় মন।।
মায়াজালে হয়ে বন্দি সে সব ভুলিলি।
ঘরেতে রাখিয়া ধর বাহিরে খুঁজিলি।।
যখনে ছিলিরে মন পিতৃ-মণি পুরে।
তথা হতে আইলিরে জননী জঠরে।।
দশ মাস দশ দিন ছিলি মাতৃগর্ভে।
মাতা মোর কত কষ্ট করে কত ভাবে।।
অসহ্য যাতনা মাতা সহে হাস্য মুখে।
আশাতে বাঁধিয়া বুক সদা থাকে সুখে।।
দশ মাস দশ দিন যখনে হইল।
প্রসব করিতে মাতা কত কষ্ট পেল।।
তারপর কতভাবে করেছে পালন।
স্তন দুগ্ধ দিয়ে মোরে বাঁচায় জীবন।।
তবু মাতা দিন রাত প্রফুল্ল-অন্তরে।
স্নেহভরে কোলে করে কত যত্ন করে।।
নিজে না খাইয়া মাতা খাওয়ায়েছে মোরে।
মলমূত্র ধোঁয়ায়েছে ঘৃণা নাহি করে।।
এত কষ্ট করে মাতা তবু হাসি মুখে।
মা শব্দের তুল্য দিতে আর কিছু নাই।
ঐ চরণে গয়া গঙ্গা সব কিছু পাই।।
এহেন মায়ের পদ ভাবিয়া অন্তরে।
লিখিলাম এই পুথি মা বাপের বরে।।
মাতা পিতার চরণে করিলাম স্তুতি।
পাপ দেহে যেন মোর জাগয়ে ভকতি।।
তাই বলি ওরে মন হরি হরি বল।
কান্দিয়া বিনোদ বলে বেলা ডুবে গেল।।
শ্রীশ্রী হরিচাঁদ বন্দনা
নম নম হরিচাঁন্দ পতিত পাবন।
তব শ্রীচরণে মোর থাকে যেন মন।।
সাধনা না জানি প্রভু ভজন না জানি।
নিজ গুণে দাও তব চরণ দু’খানি।।
তুমি হরি গুণনিধি জগতের সার।
এ ভব সাগর হতে কর মোরে পার।।
তোমার গুণের সীমা বর্ণিতে কি পারি।
গুণের অতীত তুমি দয়াল শ্রীহরি।।
তোমার ইশারাতে এ জগত চলে।
তোমার মায়াতে প্রভু এ জগত ভোলে।।
সত্য যুগে ছিলে তুমি নাম রূপ ধরি।
ত্রেতা যুগে রাম রূপে জন্মিলেন হরি।।
দ্বাপর যুগেতে প্রভু কৃষ্ণ অবতার।
কলিতে গৌরাঙ্গ রূপে হইল প্রচার।।
তারপর ওড়াকান্দি হলে অবতার।
ঐ চরণে কোটি কোটি করি নমস্কার।।
নম নম শান্তি মাতা জগত জননী।
হরিচাঁদ প্রাণপ্রিয়া লোচন নন্দিনী।।
চরণ যুগলে মাগো করি নিবেদন।
দয়া করে অধমেরে দিও শ্রীচরণ।।
হরি নাম প্রচারিতে হইলে প্রকাশ।
অধমেরে কর প্রভু শ্রী চরণে দাস।।
নমঃ নমঃ যশোমন্ত ঠাকুরের পিতা।
নমঃ নমঃ অন্নপূর্ণা ঠাকুরের মাতা।।
নমঃ নমঃ কৃষ্ণদাস প্রভু জ্যেষ্ঠ ভাই।
চরণেতে কোটি কোটি প্রণাম জানাই।।
নমঃ শ্রী বৈষ্ণব দাস অংশ অবতার।
নমঃ নমঃ গৌরি দাস মহিমা অপার।।
নমঃ শ্রী স্বরূপ দাস সবার কনিষ্ঠ।
ঠাকুর চরণে যার ভক্তি একনিষ্ঠ।।
নমঃ নমঃ শ্রীসুধন্য ধীর অবতার।
নমঃ নমঃ শ্রীপতিচাঁদ তাহার কোঙর।।
নমঃ নমঃ মঞ্জুলিকা মাতা ঠাকুরাণী।
করপুটে বন্দি আমি চরণ দু’খানি।।
নমঃ শ্রী প্রমথচাঁদ তুমি গুণমণি।
নমঃ নমঃ বীণাপাণি মাতা ঠাকুরাণী।।
নমঃ নমঃ অংশুপতি নমঃ শচিপতি।
নমঃ শ্রীহিমাংশুপতি পদে করি স্তুতি।।
ঠাকুর হইতে এল ঠাকুরের অংশ।
করজোড়ে বন্দি আমি ঠাকুরর বংশ।।
অধম বিনোদ বলে দিতে নারি সীমা।
কৃপা করে অধমেরে করে দিও ক্ষমা।।
তব শ্রীচরণে মোর থাকে যেন মন।।
সাধনা না জানি প্রভু ভজন না জানি।
নিজ গুণে দাও তব চরণ দু’খানি।।
তুমি হরি গুণনিধি জগতের সার।
এ ভব সাগর হতে কর মোরে পার।।
তোমার গুণের সীমা বর্ণিতে কি পারি।
গুণের অতীত তুমি দয়াল শ্রীহরি।।
তোমার ইশারাতে এ জগত চলে।
তোমার মায়াতে প্রভু এ জগত ভোলে।।
সত্য যুগে ছিলে তুমি নাম রূপ ধরি।
ত্রেতা যুগে রাম রূপে জন্মিলেন হরি।।
দ্বাপর যুগেতে প্রভু কৃষ্ণ অবতার।
কলিতে গৌরাঙ্গ রূপে হইল প্রচার।।
তারপর ওড়াকান্দি হলে অবতার।
ঐ চরণে কোটি কোটি করি নমস্কার।।
নম নম শান্তি মাতা জগত জননী।
হরিচাঁদ প্রাণপ্রিয়া লোচন নন্দিনী।।
চরণ যুগলে মাগো করি নিবেদন।
দয়া করে অধমেরে দিও শ্রীচরণ।।
হরি নাম প্রচারিতে হইলে প্রকাশ।
অধমেরে কর প্রভু শ্রী চরণে দাস।।
নমঃ নমঃ যশোমন্ত ঠাকুরের পিতা।
নমঃ নমঃ অন্নপূর্ণা ঠাকুরের মাতা।।
নমঃ নমঃ কৃষ্ণদাস প্রভু জ্যেষ্ঠ ভাই।
চরণেতে কোটি কোটি প্রণাম জানাই।।
নমঃ শ্রী বৈষ্ণব দাস অংশ অবতার।
নমঃ নমঃ গৌরি দাস মহিমা অপার।।
নমঃ শ্রী স্বরূপ দাস সবার কনিষ্ঠ।
ঠাকুর চরণে যার ভক্তি একনিষ্ঠ।।
নমঃ নমঃ শ্রীসুধন্য ধীর অবতার।
নমঃ নমঃ শ্রীপতিচাঁদ তাহার কোঙর।।
নমঃ নমঃ মঞ্জুলিকা মাতা ঠাকুরাণী।
করপুটে বন্দি আমি চরণ দু’খানি।।
নমঃ শ্রী প্রমথচাঁদ তুমি গুণমণি।
নমঃ নমঃ বীণাপাণি মাতা ঠাকুরাণী।।
নমঃ নমঃ অংশুপতি নমঃ শচিপতি।
নমঃ শ্রীহিমাংশুপতি পদে করি স্তুতি।।
ঠাকুর হইতে এল ঠাকুরের অংশ।
করজোড়ে বন্দি আমি ঠাকুরর বংশ।।
অধম বিনোদ বলে দিতে নারি সীমা।
কৃপা করে অধমেরে করে দিও ক্ষমা।।
ভক্তগণ বন্দনা
নমঃ নমঃ হীরামন ভক্ত চূড়ামণি।
নিজগুণে দাও তব চরণ দু’খানি।।
নমঃ শ্রীগোলকচন্দ্র পাগল গোঁসাই।
চরণেতে কোটি কোটি প্রণাম জানাই।
নমঃ নমঃ শ্রীলোচন বড় দয়াময়।
দয়া করে অধমেরে রাখ রাঙ্গা পায়।।
নমঃ নমঃ মৃত্যুঞ্জয় সাধু শিরোমণি।
দন্তে তৃণ ধরি বন্দি চরণ দু’খানি।
নিজগুণে দাও তব চরণ দু’খানি।।
নমঃ শ্রীগোলকচন্দ্র পাগল গোঁসাই।
চরণেতে কোটি কোটি প্রণাম জানাই।
নমঃ নমঃ শ্রীলোচন বড় দয়াময়।
দয়া করে অধমেরে রাখ রাঙ্গা পায়।।
নমঃ নমঃ মৃত্যুঞ্জয় সাধু শিরোমণি।
দন্তে তৃণ ধরি বন্দি চরণ দু’খানি।
(এখানে মনে হয় দু এক লাইন জ্ঞাপ হয়ে গেছে)
তোমার কৃপাতে পাই অমূল্য রতন।।
লীলামৃত গ্রন্থখানী শুধার মতন।।
নমঃ নমঃ শ্রী অশ্বিনী প্রেমের মূরতি।
যাহার কৃপাতে পাই হরিচাঁদ গীতি।।
নমঃ নমঃ দশরথ পদ্মবিলা বাসি।
ঠাকুরের নামে প্রেমে হইল উদাসী।।
নমঃ নমঃ হরিপাল মহিমা প্রচুর।
গহন বাদার মধ্যে দেখিল ঠাকুর।।
নমঃ শ্রীগোপাল সাধু কি মধু পাইয়া।
দক্ষিণ দেশ মাতাল হরিনাম দিয়া।।
নমঃ নাটু, নমঃ ব্রজ, নমঃ বিশ্বনাথ।
দিবানিশি থাকিতেন ঠাকুরের সাথ।।
উদ্দেশ্য বন্দিনু আমি যত ভক্তগণে।
অগণিত ভক্তবৃন্দ আছে যে যেখানে।।
তোমার কৃপাতে পাই অমূল্য রতন।।
লীলামৃত গ্রন্থখানী শুধার মতন।।
নমঃ নমঃ শ্রী অশ্বিনী প্রেমের মূরতি।
যাহার কৃপাতে পাই হরিচাঁদ গীতি।।
নমঃ নমঃ দশরথ পদ্মবিলা বাসি।
ঠাকুরের নামে প্রেমে হইল উদাসী।।
নমঃ নমঃ হরিপাল মহিমা প্রচুর।
গহন বাদার মধ্যে দেখিল ঠাকুর।।
নমঃ শ্রীগোপাল সাধু কি মধু পাইয়া।
দক্ষিণ দেশ মাতাল হরিনাম দিয়া।।
নমঃ নাটু, নমঃ ব্রজ, নমঃ বিশ্বনাথ।
দিবানিশি থাকিতেন ঠাকুরের সাথ।।
উদ্দেশ্য বন্দিনু আমি যত ভক্তগণে।
অগণিত ভক্তবৃন্দ আছে যে যেখানে।।
শ্রীশ্রী তারক চাঁদের জন্ম কথা
হরিচাঁদ গুরুচাঁদ করিয়া স্মরণ।
তারকের জন্ম কথা করিব বর্ণন।।
হরিচাঁদ ভক্ত তুমি তারক সুজন।
আমার মস্তকে থাকি করিও লিখন।।
সূর্য্যনারায়ণ ছিল ডুমুরিয়া গায়।
লীলামৃতে লেখা আছে তার পরিচয়।
সৃষ্টিধর নামে ছিল তাহার নন্দন।।
হরিভক্ত মহাজ্ঞানী ছিল সেই জন।
তিনি মোরে ভালবাসে পুত্রের সমান।।
আমাদের বাড়ী তিনি আসিত যাইত।
তারক চাঁদের কথা তিনি যে কহিত।।
তার মুখে শুনিতাম এসব কাহিনী।
তার আশির্বাদে হয় আমার লিখনী।।
তারকের পিতা ছিল কাশীনাথ নামে।
কালীভক্ত ছিল তিনি এই ধরাধামে।।
মাথায় চিকন কেশ ছিল সুশোভন।
চেহারায় দেখা যায় বেশ ষড়ানন।।
কালীভক্ত শিরোমণি সরল হৃদয়।
দিবা নিশি কালী নামে গাহিয়া বেড়ায়।।
এই ভাবে কত দিন গত হয়ে গেল।
বিবাহ করিতে সবে তাহাকে কহিল।।
কাশীনাথ দিল মত তার গুরুজনে।
মেয়ে দেখিবারে গেল তাহাদের সনে।।
কন্যা কর্তা মেয়ে এনে দেখাল তখন।
অন্নদা নামেতে মেয়ে অতি সু-শোভন।।
মেয়ে দেখে সকলের পছন্দ হইল।
মেয়েটিকে ঘেরে যেতে আদেশ করিল।।
অমনি অন্নদা দেবী প্রণাম করিয়া।
সজল নয়নে গেল ঘরেতে চলিয়া।।
ঘরে গিয়ে কাশীনাথ করে দরশন।
অন্নদা হইল অতি আনন্দিত মন।।
মস্তকের চুল দেখে আনন্দ পাইল।
মনে মনে স্বামী রূপে বরণ করিল।।
তারপর সবে মিলে বলিল বচন।
কি ভাবে সমন্ধ হবে কর নির্ধারণ।।
কন্যা কর্তা বলিলেন সকলের কাছে।
বিষয় সম্পদ কিবা এ ছেলের আছে।।
নিজ মুখে কাশীনাথ বলিল তখন।
শুনিয়া কন্যার পিতা বিষাদিত মন।।
বলিলেন এ সম্বন্ধ আমি করিব না।
উচ্চ আশা আছে মোর মনের ধারণা।।
তাই শুনে সবে মিলে কিছু না বলিল।
জল পান করে সবে বিদায় হইল।।
তাই শুনে সে অন্নদা অন্য বাড়ী গিয়ে।
কাশিনাথে ডাকাইল অন্য লোক দিয়ে।।
ঘরের মধ্যেতে নিয়ে বসিবারে দিল।
ছল ছল আখি দু’টি কহিতে লাগিল।।
শুন শুন শুন তুমি আমার বচন।
চরণেতে করি আমি এক নিবেদন।।
চুল যদি নাহি কাট কোনদিন তুমি।
তব চরণেতে দাসী হয়ে রব আমি।।
করজোড়ে এই কথা কহিল অন্নদা।
ও চুলের যত্ন আমি করিব সর্বদা।।
তাই শুনি কাশীনাথ কহিল তখন।
এ সত্য করিয়া বলে মধুর বচন।।
এই চুল কোন দিন কাটিব না আমি।
পত্নী রূপে এই ভাবে হও যদি তুমি।।
এই কথা বলে তিনি বিদায় হইল।
প্রফুল্ল অন্তরে মেয়ে গৃহে চলে গেল।।
তারপর সে অন্নদা পিতার নিকটে।
ছল ছল আখি দু’টি বলে করপুটে।।
শুন শুন শুন পিতা আমার বচন।
এ ছেলের কাছে মোর সব সমর্পণ।।
আমাকে করিতে সুখি তব ইচ্ছা পিতা।
চিরসুখী হব আমি শুন মোর কথা।।
অন্নদার পিতা শুনি এহেন বচন।
মস্তকেতে হস্ত দিয়া কহিল তখন।।
তোমার মনের বঞ্ছা আমি পুরাইব।
জয়পুরে গিয়া আমি সম্বন্ধ করিব।।
জয়পুরে গিয়া শেষে সম্বন্ধ হইল।
কাশীনাথ অন্নদার মিলন ঘটিল।।
অন্নদার মন বাঞ্ছা হইল পূরণ।
কাশীনাথের হইল আনন্দিত মন।।
দাম্পত্য জীবনে তারা হলো আনন্দিত।
কালী মার চরণেতে ভকতি করিত।।
এই ভাবে বহু দিন গত হয়ে গেল।
অন্নদার গর্ভে কোন সন্তান না হল।।
এই ব্যাথা নিয়ে তারা সংসার করিত।
অন্নদাকে বন্ধ্যা বলে সকলে ভাবিত।।
কাশীনাথ কবিগান শিক্ষা করি লয়।
মাঝে মাঝে কবিগান গাহিয়া বেড়ায়।।
সূর্য নারায়ণ ছিল দলের দোয়ার।
অতি সুমধুর ছিল তার কণ্ঠস্বর।।
এই ভাবে কত দিন গত হয়ে গেল।
মনের বেদনা তার মনেতে রহিল।।
একদিন নৌকা যোগে কলিকাতা যায়।
প্রতিবেশী তিন জন ছিল সে নৌকায়।।
কলিকাতা গিয়ে তারা গঙ্গা স্নান করি।
পাপদেহ জুড়াইয়া বলে হরি হরি।।
পরেতে দক্ষিণেশ্বর কালীর মন্দিরে।
মালা দিয়ে ভক্তি করে প্রফুল্ল অন্তরে।।
মাতৃ ভক্ত কাশীনাথ করে তব স্তুতি।
নয়ন জলেতে ভাসি দেখে মাতৃমুর্তি।।
যখনেতে কাশীনাথ প্রণাম করিল।
চুলের বাতাস মার অঙ্গেতে লাগিল।।
তারপর সবে মিলে নৌকায় আসিল।
যার যার কেনা বেচা সকলে করিল।।
নৌকাতে আসিয়া সবে করিল ভোজন।
সন্ধ্যা হল দেখে সবে কহিল তখন।।
রাত্রি বেলা নৌকা বেয়ে যাব না কখন।
ভোর বেলা নৌকা ছেড়ে করিব গমন।।
নিদ্রা ঘোরে কাশীনাথ স্বপনে দেখিল।
কালীমাতা এসে তার শিয়রে বসিল।।
হাসি মুখে কালী মাতা কহিল তখন।
শুন শুন কাশীনাথ আমার বচন।।
তোমার চুলের বাও লাগে মোর গায়।
তাহাতে হইল মোর প্রফুল্ল হৃদয়।।
চুল কেটে দিয়ে যাও শুন বাছাধন।
মম বাক্য কভু তুমি কর না লঙ্ঘন।।
চোমর করিয়া তুমি হাতে দিয়া যাও।
দিবা নিশি তব চুলে লব আমি বাও।।
কাশীনাথ বলে মাগো আমি চুল নাহি দিব।
কোন মতে এই চুল আমি না কাটিব।।
কালীমাতা বলে তুই ছারে খারে যাবি।
চুল যদি নাহি দিবি পরাণে মরিবি।।
কাশীনাথ বলে মাগো তোমারে জানাই।
পরাণ তেজিতে মোর কোন চিন্তা নাই।।
সত্য ভঙ্গ করিবারে আমি না পারিব।
সত্য রক্ষা করিবারে পরাণ তেজিব।।
তাই শুনে কালীমাতা অদৃশ্য হইল।
নিদ্রা থেকে কাশীনাথ জাগিয়া উঠিল।।
একি আজি দেখিলাম ঘুমের ঘরেতে।
ভয়েতে আকুল প্রাণ লাগিল কাঁপিতে।।
অকস্মাৎ ভেদবমি হইল তাহার।
মল ত্যাগ করিলেন দুই তিন বার।।
এই ভাবে কলেরায় মৃত পায় হল।
মা মা বলিয়া কাশী ডাকিতে লাগিল।।
কেন্দে বলে ওগো মাতা বলি তব ঠাই।
তোমার চরণ বিনে অন্য গতি নাই।।
তোমার সেবক আমি তব নাম লই।
এই বুঝি মরিলাম ওগো ব্রহ্মমই।।
এই ভাবে কাশীনাথ কান্দিতে লাগিল।
শেষ রাত্রে কালীমাতা নৌকাতে আসিল।।
স্বরূপেতে দেখা দিয়ে কহিল তখন।
শুন শুন কাশীনাথ আমার বচন।।
সত্য করিয়াছ তুমি রমনীর ঠাই।
সেই জন্যে তার গর্ভে পুত্র কন্যা নাই।।
চুল যদি কেটে যাও আমার গোচরে।
সেই গর্ভে এক পুত্র হবে মম বরে।।
ব্যাসদেব জন্ম লবে এসে তব ঘরে।
সার গ্রন্থ লিখে যাবে এই ধরা পরে।।
এত বলি কালীমাতা হল অন্তর্ধান।
তাই দেখ কাশীনাথ হারাইল জ্ঞান।।
ক্ষণেক চেতনা পেয়ে কান্দিতে লাগিল।
ধীরে ধীরে নৌকা হতে কুলেতে নামিল।।
ক্ষৌরকার দিয়ে চুল কাটিল তখনে।
চোমর করিয়া দিল মায়ের চরণে।।
কেন্দে কেন্দে কাশীনাথ প্রণাম করিল।
নয়নের জলে বক্ষ ভাসিতে লাগিল।।
তার পরে ধীরে ধীরে নৌকায় আসিয়া।
ভাগীদের কাছে সব কহিছে কান্দিয়া।।
শুনিয়া সবাই তাই আশ্বর্চ্য হইল।
কালীমার প্রীতে সবে হরিধ্বনি দিল।।
তার পর সবে মিলে আনন্দ হৃদয়।
কালী কালী বলি সবে তরী খুলে দেয়।।
আনন্দেতে সবে মিলে তরণী বাহিল।
তিন দিন পরে তরী ঘাটেতে আসিল।।
তরী হতে নেমে সবে গৃহেতে চলিল।
সবাকার কাছে সব ঘটনা জানা’ল।।
শুনিয়া সকলে তাই আনন্দ হৃদয়।
কালীমার প্রীতে সবে হরিধ্বনি দেয়।।
এই ভবে কতদিন গত হয়ে গেল।
কিছু দিন পরে দুর্গা পূজা করেছিল।।
বড় আশা কাশীনাথ করে মনে মনে।
বুক চিরে রক্ত দিল মায়ের চরণে।।
সে সব বৃতান্ত লীলামৃতে লেখা আছে।
নিজ হাতে শ্রী তারক তাহা লিখিয়াছে।।
লক্ষ দূর্গা নাম বট পত্রেতে লিখিয়া।
পূজা করে ভবানীর কান্দিয়া কান্দিয়া।।
অন্নদার মন বাঞ্ছা হইল পূরণ।
কিছু দিন পরে হইল গর্ভের লক্ষণ।।
সেই গর্ভে জন্ম নিল তারক সুজন।
সবাকার মন বাঞ্ছা হইল পূরণ।।
অগ্রহায়ণ মাসেতে শনিবার দিনে।
অমাবস্যা তিথী তাহে জন্মে শুভক্ষণে।।
তারকের জন্ম ক্ষণে হেন জ্ঞান হয়।
আকাশে বাতাসে যেন হরিগুণ গায়।।
জয়ধ্বনি উলুধ্বনি করে বামাগণে।
আনন্দে মাতিল সবে হরিগুণ গানে।।
এ দীন বিনোদ বলে পাঁচালীর ছন্দে।
হরিচাঁদ ছবিখানি হৃদয়েতে বন্দে।।
তাই বলি ভাই সব বেলা বেশি নাই।
হরিচাঁদ প্রিতে সবে হরিবল ভাই।।
তারকের জন্ম কথা করিব বর্ণন।।
হরিচাঁদ ভক্ত তুমি তারক সুজন।
আমার মস্তকে থাকি করিও লিখন।।
সূর্য্যনারায়ণ ছিল ডুমুরিয়া গায়।
লীলামৃতে লেখা আছে তার পরিচয়।
সৃষ্টিধর নামে ছিল তাহার নন্দন।।
হরিভক্ত মহাজ্ঞানী ছিল সেই জন।
তিনি মোরে ভালবাসে পুত্রের সমান।।
আমাদের বাড়ী তিনি আসিত যাইত।
তারক চাঁদের কথা তিনি যে কহিত।।
তার মুখে শুনিতাম এসব কাহিনী।
তার আশির্বাদে হয় আমার লিখনী।।
তারকের পিতা ছিল কাশীনাথ নামে।
কালীভক্ত ছিল তিনি এই ধরাধামে।।
মাথায় চিকন কেশ ছিল সুশোভন।
চেহারায় দেখা যায় বেশ ষড়ানন।।
কালীভক্ত শিরোমণি সরল হৃদয়।
দিবা নিশি কালী নামে গাহিয়া বেড়ায়।।
এই ভাবে কত দিন গত হয়ে গেল।
বিবাহ করিতে সবে তাহাকে কহিল।।
কাশীনাথ দিল মত তার গুরুজনে।
মেয়ে দেখিবারে গেল তাহাদের সনে।।
কন্যা কর্তা মেয়ে এনে দেখাল তখন।
অন্নদা নামেতে মেয়ে অতি সু-শোভন।।
মেয়ে দেখে সকলের পছন্দ হইল।
মেয়েটিকে ঘেরে যেতে আদেশ করিল।।
অমনি অন্নদা দেবী প্রণাম করিয়া।
সজল নয়নে গেল ঘরেতে চলিয়া।।
ঘরে গিয়ে কাশীনাথ করে দরশন।
অন্নদা হইল অতি আনন্দিত মন।।
মস্তকের চুল দেখে আনন্দ পাইল।
মনে মনে স্বামী রূপে বরণ করিল।।
তারপর সবে মিলে বলিল বচন।
কি ভাবে সমন্ধ হবে কর নির্ধারণ।।
কন্যা কর্তা বলিলেন সকলের কাছে।
বিষয় সম্পদ কিবা এ ছেলের আছে।।
নিজ মুখে কাশীনাথ বলিল তখন।
শুনিয়া কন্যার পিতা বিষাদিত মন।।
বলিলেন এ সম্বন্ধ আমি করিব না।
উচ্চ আশা আছে মোর মনের ধারণা।।
তাই শুনে সবে মিলে কিছু না বলিল।
জল পান করে সবে বিদায় হইল।।
তাই শুনে সে অন্নদা অন্য বাড়ী গিয়ে।
কাশিনাথে ডাকাইল অন্য লোক দিয়ে।।
ঘরের মধ্যেতে নিয়ে বসিবারে দিল।
ছল ছল আখি দু’টি কহিতে লাগিল।।
শুন শুন শুন তুমি আমার বচন।
চরণেতে করি আমি এক নিবেদন।।
চুল যদি নাহি কাট কোনদিন তুমি।
তব চরণেতে দাসী হয়ে রব আমি।।
করজোড়ে এই কথা কহিল অন্নদা।
ও চুলের যত্ন আমি করিব সর্বদা।।
তাই শুনি কাশীনাথ কহিল তখন।
এ সত্য করিয়া বলে মধুর বচন।।
এই চুল কোন দিন কাটিব না আমি।
পত্নী রূপে এই ভাবে হও যদি তুমি।।
এই কথা বলে তিনি বিদায় হইল।
প্রফুল্ল অন্তরে মেয়ে গৃহে চলে গেল।।
তারপর সে অন্নদা পিতার নিকটে।
ছল ছল আখি দু’টি বলে করপুটে।।
শুন শুন শুন পিতা আমার বচন।
এ ছেলের কাছে মোর সব সমর্পণ।।
আমাকে করিতে সুখি তব ইচ্ছা পিতা।
চিরসুখী হব আমি শুন মোর কথা।।
অন্নদার পিতা শুনি এহেন বচন।
মস্তকেতে হস্ত দিয়া কহিল তখন।।
তোমার মনের বঞ্ছা আমি পুরাইব।
জয়পুরে গিয়া আমি সম্বন্ধ করিব।।
জয়পুরে গিয়া শেষে সম্বন্ধ হইল।
কাশীনাথ অন্নদার মিলন ঘটিল।।
অন্নদার মন বাঞ্ছা হইল পূরণ।
কাশীনাথের হইল আনন্দিত মন।।
দাম্পত্য জীবনে তারা হলো আনন্দিত।
কালী মার চরণেতে ভকতি করিত।।
এই ভাবে বহু দিন গত হয়ে গেল।
অন্নদার গর্ভে কোন সন্তান না হল।।
এই ব্যাথা নিয়ে তারা সংসার করিত।
অন্নদাকে বন্ধ্যা বলে সকলে ভাবিত।।
কাশীনাথ কবিগান শিক্ষা করি লয়।
মাঝে মাঝে কবিগান গাহিয়া বেড়ায়।।
সূর্য নারায়ণ ছিল দলের দোয়ার।
অতি সুমধুর ছিল তার কণ্ঠস্বর।।
এই ভাবে কত দিন গত হয়ে গেল।
মনের বেদনা তার মনেতে রহিল।।
একদিন নৌকা যোগে কলিকাতা যায়।
প্রতিবেশী তিন জন ছিল সে নৌকায়।।
কলিকাতা গিয়ে তারা গঙ্গা স্নান করি।
পাপদেহ জুড়াইয়া বলে হরি হরি।।
পরেতে দক্ষিণেশ্বর কালীর মন্দিরে।
মালা দিয়ে ভক্তি করে প্রফুল্ল অন্তরে।।
মাতৃ ভক্ত কাশীনাথ করে তব স্তুতি।
নয়ন জলেতে ভাসি দেখে মাতৃমুর্তি।।
যখনেতে কাশীনাথ প্রণাম করিল।
চুলের বাতাস মার অঙ্গেতে লাগিল।।
তারপর সবে মিলে নৌকায় আসিল।
যার যার কেনা বেচা সকলে করিল।।
নৌকাতে আসিয়া সবে করিল ভোজন।
সন্ধ্যা হল দেখে সবে কহিল তখন।।
রাত্রি বেলা নৌকা বেয়ে যাব না কখন।
ভোর বেলা নৌকা ছেড়ে করিব গমন।।
নিদ্রা ঘোরে কাশীনাথ স্বপনে দেখিল।
কালীমাতা এসে তার শিয়রে বসিল।।
হাসি মুখে কালী মাতা কহিল তখন।
শুন শুন কাশীনাথ আমার বচন।।
তোমার চুলের বাও লাগে মোর গায়।
তাহাতে হইল মোর প্রফুল্ল হৃদয়।।
চুল কেটে দিয়ে যাও শুন বাছাধন।
মম বাক্য কভু তুমি কর না লঙ্ঘন।।
চোমর করিয়া তুমি হাতে দিয়া যাও।
দিবা নিশি তব চুলে লব আমি বাও।।
কাশীনাথ বলে মাগো আমি চুল নাহি দিব।
কোন মতে এই চুল আমি না কাটিব।।
কালীমাতা বলে তুই ছারে খারে যাবি।
চুল যদি নাহি দিবি পরাণে মরিবি।।
কাশীনাথ বলে মাগো তোমারে জানাই।
পরাণ তেজিতে মোর কোন চিন্তা নাই।।
সত্য ভঙ্গ করিবারে আমি না পারিব।
সত্য রক্ষা করিবারে পরাণ তেজিব।।
তাই শুনে কালীমাতা অদৃশ্য হইল।
নিদ্রা থেকে কাশীনাথ জাগিয়া উঠিল।।
একি আজি দেখিলাম ঘুমের ঘরেতে।
ভয়েতে আকুল প্রাণ লাগিল কাঁপিতে।।
অকস্মাৎ ভেদবমি হইল তাহার।
মল ত্যাগ করিলেন দুই তিন বার।।
এই ভাবে কলেরায় মৃত পায় হল।
মা মা বলিয়া কাশী ডাকিতে লাগিল।।
কেন্দে বলে ওগো মাতা বলি তব ঠাই।
তোমার চরণ বিনে অন্য গতি নাই।।
তোমার সেবক আমি তব নাম লই।
এই বুঝি মরিলাম ওগো ব্রহ্মমই।।
এই ভাবে কাশীনাথ কান্দিতে লাগিল।
শেষ রাত্রে কালীমাতা নৌকাতে আসিল।।
স্বরূপেতে দেখা দিয়ে কহিল তখন।
শুন শুন কাশীনাথ আমার বচন।।
সত্য করিয়াছ তুমি রমনীর ঠাই।
সেই জন্যে তার গর্ভে পুত্র কন্যা নাই।।
চুল যদি কেটে যাও আমার গোচরে।
সেই গর্ভে এক পুত্র হবে মম বরে।।
ব্যাসদেব জন্ম লবে এসে তব ঘরে।
সার গ্রন্থ লিখে যাবে এই ধরা পরে।।
এত বলি কালীমাতা হল অন্তর্ধান।
তাই দেখ কাশীনাথ হারাইল জ্ঞান।।
ক্ষণেক চেতনা পেয়ে কান্দিতে লাগিল।
ধীরে ধীরে নৌকা হতে কুলেতে নামিল।।
ক্ষৌরকার দিয়ে চুল কাটিল তখনে।
চোমর করিয়া দিল মায়ের চরণে।।
কেন্দে কেন্দে কাশীনাথ প্রণাম করিল।
নয়নের জলে বক্ষ ভাসিতে লাগিল।।
তার পরে ধীরে ধীরে নৌকায় আসিয়া।
ভাগীদের কাছে সব কহিছে কান্দিয়া।।
শুনিয়া সবাই তাই আশ্বর্চ্য হইল।
কালীমার প্রীতে সবে হরিধ্বনি দিল।।
তার পর সবে মিলে আনন্দ হৃদয়।
কালী কালী বলি সবে তরী খুলে দেয়।।
আনন্দেতে সবে মিলে তরণী বাহিল।
তিন দিন পরে তরী ঘাটেতে আসিল।।
তরী হতে নেমে সবে গৃহেতে চলিল।
সবাকার কাছে সব ঘটনা জানা’ল।।
শুনিয়া সকলে তাই আনন্দ হৃদয়।
কালীমার প্রীতে সবে হরিধ্বনি দেয়।।
এই ভবে কতদিন গত হয়ে গেল।
কিছু দিন পরে দুর্গা পূজা করেছিল।।
বড় আশা কাশীনাথ করে মনে মনে।
বুক চিরে রক্ত দিল মায়ের চরণে।।
সে সব বৃতান্ত লীলামৃতে লেখা আছে।
নিজ হাতে শ্রী তারক তাহা লিখিয়াছে।।
লক্ষ দূর্গা নাম বট পত্রেতে লিখিয়া।
পূজা করে ভবানীর কান্দিয়া কান্দিয়া।।
অন্নদার মন বাঞ্ছা হইল পূরণ।
কিছু দিন পরে হইল গর্ভের লক্ষণ।।
সেই গর্ভে জন্ম নিল তারক সুজন।
সবাকার মন বাঞ্ছা হইল পূরণ।।
অগ্রহায়ণ মাসেতে শনিবার দিনে।
অমাবস্যা তিথী তাহে জন্মে শুভক্ষণে।।
তারকের জন্ম ক্ষণে হেন জ্ঞান হয়।
আকাশে বাতাসে যেন হরিগুণ গায়।।
জয়ধ্বনি উলুধ্বনি করে বামাগণে।
আনন্দে মাতিল সবে হরিগুণ গানে।।
এ দীন বিনোদ বলে পাঁচালীর ছন্দে।
হরিচাঁদ ছবিখানি হৃদয়েতে বন্দে।।
তাই বলি ভাই সব বেলা বেশি নাই।
হরিচাঁদ প্রিতে সবে হরিবল ভাই।।
No comments:
Post a Comment