শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান,নংঃ ৩১-৫০ - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান,নংঃ ৩১-৫০



    গান নংঃ ৩১-৫০

    ৩১।
    তাল  গর খেমটা
    কামিনী কাল নাগিনী, ফনিনীর বিশাল বিষ
    ও যার নিঃশ্বাসে ব্রক্ষান্দ নাশে, না যেন কেন হস্ত দিস।
    সে ফনীর ভঙ্গি বোঝা দায়, মুনির মন ভুলায়,
    কত ওঝা বৈদ্য সাপুড়ে খেল, দেখতে লাগে ভয়;
    ও সে ইশারাতে মানুষ মজায়, নয়ন দেখে চিনে নিস।।
    সে ফণীর যুগল মণি রয়, বক্ষে শোভা পায়,
    দেখলে পড়ে একেবারে মানুষ ভেক লোভায়,
    ওসে আকর্ষণে আহার যোগায়, তাই দেখে কেউ দিসনে হিস।।
    সে ফনির বিলাস বনে বাস, মনে অভিলাষ,
    কাম্য বনে আসা যাওয়া করে বার মাস,
    কেন গুরু চাঁদের বাক্য ফেলে সেই বনে ভ্রমন করিস।।
    যে ফনীর মন্ত্র শুন ভাই, শ্রী গুরুর দোঁহাই,
    হরির নামটি মহামন্ত্র টা বিনে আর নাই,
    গুরুর বাক্য করে ঐক্য, মাবলা ধূল পড়া দিস।।
    মহানন্দের ভারতী, তুই শোনরে দুর্মতি,
    গুরু কল্প ইসার মুলে থাক দিবারাতি,
    অশ্বিনী তোর হয় না মতি, ঘরে বসে কি করিস।।
    ৩২ নং
    তাল  গরখেমটা
    হরিধন প্রাপ্ত হলে তাহলে কি হয় লাভ,
    স্বভাব দোষে, সকল নাশে, যদি না ঘচে স্বভাব
    যদি স্বভাব ঘুচে যায়, অভাব নাহি রয়,
    প্রেমে তনু দগ মগ হরি তারে চায়,
    যেমন বতসের পিছে গাভী বেড়ায়, সদায় করে হাম্বা রব।।
    স্বভাব দোষ এমনি অলক্ষী, শোন তার স্বাক্ষী,
    শ্রীরাম লক্ষণ পেয়েছিল, মাছরাঙ্গা পাখী,
    পাখী জানল না তার মাহাত্ম্য কি, নিল মাছ ধরা বর ত্যজে সব।।
    স্বভাব দোষ এমনি কুলক্ষণ, তার সাক্ষী কপীগণ,
    বনে বসি শ্রীরাম শশী পেল সর্ব জন,
    শেষে রাবন মারি লঙ্কাপুরী, হল রাম ত্যজে নারী বল্লভ।।
    হনুমান স্বভাব ঘুচায়ে, পঞ্চজন লয়ে
    শ্রীরাম পদে মনকে বেঁধে থাকলো ভাব লয়ে,
    হনু রাম চরণে প্রাণ সঁপিয়ে, পেল রাম পদ বল্লভ।।
    গোঁসাই গুরু চাঁদ বলে, স্বভাব ঘুচিলে,
    শঙ্করের হৃদিনিধি হরিধন মিলে,
    অশ্বিনী তোর এই কপালে, ঘটবে কি সেই গোঁসাইর ভাব।।
    ৩৩। নং
    তাল একতালা
    হরিনাম সুধা পানে, পানে যে মেতেছে
    হয়ে নামে মত্ত, পেয়ে তত্ত্ব, জন্ম মৃত্যু এড়ায়েছে।।
    (হারে জয় করেছে)
    করে সমুদ্র মন্থন, সুধা খেল দেবগণ;
    তাঁরা জন্ম মৃত্যু এড়াইতে নাড়িল কখন
    হরিনাম সুধা পান যে করেছে, কোটী ব্রহ্মার পতন সেই দেখেছে
    (হারে সেই দেখেছে)
    হরি নাম সুধা সুধা নয়, প্রেম মধু নিস্কাম কর্পূর তায়,
    পঞ্চরসে গিল্টি করা নব রসাস্রয়।
    আছে ভক্তি মাখা স্বরে ঢাকা, অনুরাগ সুতার বেন্ধেছে
    (হারে তার বেন্ধেছে)
    হরি নাম এমনি রসাল, তত্ত্ব জেনে মহাকাল;
    পঞ্চ মুখে পান করে নাম হইয়ে বেহাল।
    পিয়ে নামের সুধা ভব ক্ষুধা জন্ম মৃত্যু ঘুচায়েছে
    (হারে জয় করেছে)
    অনরপিত ছিল হরির নাম, দয়া করি হরি গুণধাম,
    কলির জীবে বিলাইল কেউরে না হয় বাম।
    তাইতে শিব হতে জীব ধন্য মানি হরির নাম প্রাপ্ত হয়েছে
    (হারে জয় করেছে)
    নদের চাঁদ ছিল হরি চাঁদ, জীবের কাটতে মায়ার ফাঁদ,
    শ্রী চরণে কোটী চন্দ্র ঘুচল চিত্ত আধ
    বলে মহানন্দ গেল সন্দ, অশ্বিনী কেন কাঁদিস মিছে
    (হারে ভাবিস মিছে)
    ৩৪।
    তাল ঠুংরি
    হরি চাঁদের অপার লীলারে লীলা বুঝবে সাধ্য কার
    লয়ে নিজ নারী ব্রহ্মচারী ঘুচাইতে ব্যভিচার।।
    আপনি হইয়া নম্র জীবকে শিক্ষা দিতে ধর্ম পুনঃ হলেন অবতার
    গার্হস্থ্য প্রশস্ত ধর্ম জগতে করলে প্রচার।।
    জীবে দয়া নামে রুচি গুরু নিষ্ঠা সর্ব শুচি করলেন এই তত্ত্ব সার।।
    হয়ে সত্যবাদী জিতেন্দ্রিয় ঘুচাইলেন অহংকার।।
    বৈষ্ণবের কুটি নাটি সাধন ভজন ময়লা মাটি এতে কুল পাবে না আর
    হয়ে হরিবোলা, প্রেমে ভরা হরির নামটি কর সার।।
    নাড়া দরবেশ গৌড়ে বাউল ত্যজে প্রভু হলেন আউল অটল নিষ্ঠে ব্যবহার
    জীবের চিত্ত সন্দ কর্ম বন্ধ, ঘুচাইলেন অন্ধকার।।
    গোঁসাই তারক চাঁদের বাণী স্বহস্তে লিখলেন তিনি লীলামৃতে প্রমাণ তার
    ওরে অশ্বিনী তোর যায়না ভ্রান্তি, মন হল না সংস্কার।।
    ৩৫ নং
    তাল  একতালা
    হরি গুণ ঘুনে দেহ জ্বারে নিল
    আমি না জানি মর গুণমণিরে
    কোন গুনে তনু জারিল আমার মন মজাল।।
    গুণাতীত গুনের সীমা নাই, তারে কোন গুনেতে পাই,
    সত্ত্ব, রজ তম ত্রিগুণ, ও যার গুনে পায় না ঠাঁই
    যেন কি গুণ দিয়ে জারল হিয়ে, যেমন কাঁচা বাঁশে ঘুন লাগাল।।
    (হারে এই করিল)
    হরি গুণ বৈশ্যস্মপায়ন জ্বর, ও যার নাহি অবসর,
    ধিক ধিক করে জীবন জ্বলে, হারে প্রাণ বাঁচা ভার।
    ও তার প্রেমানলে, মলেম জ্বলে রে অবশেষে এই করিল।।
    (হারে কোথায় গেল)
    ফনীর বিষ কিসেতে গনি, হলাহল বিষের গুণ জানি,
    কাল কূট বিষে কি করিবে, ও গো সজনী।
    আমার হরি বিষে, জীবন নাশে রে, মরমেতে ছোঁ মারিল।।
    (জীবন জ্বলে গেল)
    হরি গুণ কে বলে ভাল, ঘুনে তনু জারিল;
    ঘরের বাহির করে আমায় পাগল করিল
    যেন হাই হুতাস বাতুলের মত, আমার কাঁদতে জনম গেল।।
    (ভাগ্যে এই কি ছিল)
    স্বামী মহানন্দ কয়, সে গুণ লেগেছে যার গায়;
    প্রাণ লয়ে তার টানাটানি, হারে গৃহে থাকা দায়
    গোঁসাই তারক বলে এই কপালে, অশ্বিনী তোর কই ঘটিল।।
    (হারে কই তা হল)
    ৩৬ নং
    তাল গড়খেমটা
    দেখে মতুয়ার খেলা, এবার দেখে মতুয়ার খেলা।
    দক্ষিনদ্বারে দিয়ে তালা যম হয়েছে হরি বোলা।।
    কেঁদে বলে চিত্রগুপ্ত, আজ হইতে ঘুচল জ্বালা;
    ওরে পাপ পুণ্য হল শূন্য, হরি বলে সার করিব বৃক্ষতলা 
    কেঁদে বলে শমন দূতে, হাতের দণ্ড ভুমে ফেলা;
    লয়ে গলায় বসন, লইগে শরণ, মতুয়ারা দয়ার সাগর হৃদয় খোলা।।
    পুজকধ্যানী, কর্মীজ্ঞানী বাহিরে জপে তিলক মালা;
    দেখে মতুয়ার ধারা, দুব্ল তাঁরা, আজ হতে তন্ত্র মন্ত্র ঠেলে ফেলা।।
    কাজের মতুয়া গোলোক চন্দ্র সিংহের ধ্বনি জিনিয়া গলা;
    ও তার ধ্বনি শুনে বিপদ গণে, তরাসে কাম কলি কয় পালা পালা।।
    কাম কলির প্রতিজ্ঞা ছিল গৌড় প্রেমে দিব ধুলা;
    এবার ঘাটে মাঠে বার উঠায়ে, শেষে মিলাইব কলির মেলা।।
    ও তার, সাক্ষাৎ প্রমাণ চাদারদহ জানে যত মেয়ে পোলা;
    কতো মারামারি, ব্যভিচারী, তেমনি বার সরা হিজল খেজুর তলা।।
    ডেকে বলে তারকচন্দ্র বার দেখে কেউ হসনে ভোলা;
    কেন সুধা থুয়ে গরল খাবি, অশ্বিনী ধর পাগলের করণ মালা।।
    ৩৭ নং
    তাল গড়খেমটা
    এবার শুনলেম মতুয়ার পাড়া, যেয়ে দেখলেম মতুয়ার পাড়া
    যত মতুয়া মাতাল হয়ে বেহাল, কাজ করে বেদ বিধি ছাড়া।।
    মতুয়া পাড়া উথছে সারা শুনলেম তাঁদের আইন কড়া;
    কারুর কুলের গৌরব থাকলে পড়ে, এদলে এসে কেহ হসনে খাড়া।।
    আদি মতুয়া ওড়াকান্দি নদীয়ায় ছিলেন শচীর গোরা;
    ও সে মায়ের করার শুধব বলে এসেছে ওড়াকাঁদি নিমাই নাড়া।।
    কাজের মতুয়া নারিকেল বাড়ি অনুরাগে তনু পোরা;
    ও যার হহুংকারে গোলোক লড়ে তার কাছে বাউল গৌড়ে পল ধরা।।
    আর এক মতুয়া নারিকেল বাড়ি প্রেমানন্দে মাতোয়ারা
    তারে দেখলে ভোলে পুরুষ নারী, নবদ্বীপ ছিলেন তিনি নিতাই নাড়া।।
    আর এক মতুয়া রাউতখামার বীর করুণা রসে হয় ভরা;
    ওসে মরিলে বাঁচাইতে পারে পাথারে ভ্রমন করে নৌকা ছাড়া।।
    আর এক মতুয়া জয়পুরে রয় নবরসে তনু ভরা;
    ও যার নাম নিলে হয় শমন দমন, নামটি তার তারকব্রহ্ম রসের চুড়া।।
    মতুয়া নামের কি মাহাত্ম্য ইহা নি কেউ জানিস তোরা;
    তাঁরা কতক গোপী কতক কপি এ যুগেতে একমত হয়েছে জোড়া।।
    অশ্বিনী কয় দিন বয়ে যায়, ধরলাম না সেই মতুয়ার ধারা;
    স্বামী মহানন্দের দয়া বিনে, হয়েছি গুরু চাঁদের চরণ ছাড়া।।
    ৩৮।
    নং তাল গড় খেমটা
    যদি ধরবি মতুয়ার বুলি, যদি ধরবি মতুয়ার বুলি
    ত্যজ্য কর সাধন ভজন, দীক্ষা শীক্ষা কপ্নি ঝুলি।।
    মতুয়ার বুলি ধরতে গেলে জাত কুলে দে জলাঞ্জলী;
    হয়ে পাগল পারা মাতোয়ারা,
    হরি বলে কাঁদবি শেষে গলি গলি।।
    মতুয়া যারা প্রেমিক তাঁরা, প্রেমানন্দে করছে কেলি;
    নিলে মতুয়ার স্বভাব, ঘুচবে অভাব,
    হারে, ফুটবেরে তোর কুসুম কলি।।
    মতুয়া পাগল, হয়ে বিভোল, প্রেমপানে হও মত্ত অলি;
    রলে মতুয়ার করণ সাধন ভজন,
    হারে, তুই সন্ধ্যা আহ্নিক ফেলবি ঠেলি।।
    মতুয়া নামে, ধরাধামে বহিরঙ্গে দিত গালি;
    এবার মতুয়া হয় জগতপুজ্য,
    মাধুরজ্য প্রেমের পাত্র প্রাণ পুঁতলি।।
    ডেকে কয় তারক রসনা, অশ্বিনী আজ তোরে বলি;
    যদি মতুয়া হবি প্রাণ জুড়াবি,
    সব অঙ্গে মাখবি মতুয়ার চরণ ধুলি।।
    ৩৯ নং
    তাল ঠুংরি
    নিদাঘেতে দাগ লাগালি রে হরি দয়াময়
    হারে তোর লাগি প্রাণ যায়
    দুঃখ পাশরা নয়ন তারা, পাশরা না যায় তোমায়;
    আমার মন প্রাণ করে চুরি, পাগল করলি আমায়।।
    তোর বিচ্ছেদ বিরহ দাহ, দহিছে আমার হৃদয়;
    আমার মনের আগুন জ্বলে দ্বিগুণ, কি আগুন লাগালি গায়।।
    চিন্তানল হইল প্রবল, দাবানল লাগে কোথায়;
    ও তোর বিরহ বারবানলে, এ জীবন মর জ্বলে যায়।।
    সরল প্রানে দাগা দিয়ে, গরল ঢালি দিলি গাঁয়;
    ও তোর বিচ্ছেদ ভুজঙ্গ হয়ে, দংশেছে আমার হৃদয় ‌
    বলে গোঁসাই মহানন্দ, অশ্বিনী হ নিরাশয়;
    আমার হরি চাঁদের নিহেতু প্রেম সহজে কি পাওয়া যায়।।
    ৪০। নং
    তাল  ঠুংরি
    রত্নডাঙ্গা বিলের কুলেরে ওকে সাজালেন হরি
    দেখলেম রাখাল সনে, গোচারণে ভুবন মোহন রূপধারী।।
    কস্তরী কুসুম তুলে, মালা গাথি দিচ্ছে গলে হেরে ভুলিতে নারি;
    যত রাখাল মিলে বাহু তুলে, বলতেছে হরি হরি।।
    ব্রজে ছিল নন্দের দুলাল, সাজাইতে ব্রজ রাখাল রে যেন সেই রূপ মাধুরী।।
    যেন সেই কালা চাঁদ, সেই রূপের চাঁদ, গোপীর মন করে চুরি।।
    বিশ্বনাথ ব্রজনাথ সঙ্গে, ধেনু রাখে পরম রঙ্গে রে, ব্রজের ভাব মনে করি
    গোষ্ঠে করে দর্প, কাল সর্প খেলিছে লাঙ্গুল ধরি।।
    প্রিয় সখা বিশ্বনাথ, বিসুচিকায় হল মৃত্যু রে ধূলায় যায় গড়াগড়ি
    তারে বাঁচাইয়ে, গোধন লএ গোষ্ঠে যায় করে ধরি।।
    গোলোক চাঁদের মনচোরা, মহানন্দের মনহরা রে ভক্তের মনোরঞ্জনকারী
    ভেবে অশ্বিনী কয়, দীন দয়াময়, ঐ রূপ যেন নেহারী।।
    ৪১। নং
    তাল  ঠুংরি
    নারিকেল বাড়ির গোলোক পাগলরে, ও যার মহিমা অপার
    গিয়া গঙ্গাচন্নায়, প্রেমের বন্যায় করলেন গঙ্গা অবতার।।
    সাধু রাইচরণের বাড়ি, কদলী গাছ রোপণ করিরে, ঘটে দিয়ে আম্রস্বর;
    লয়ে পুরুষ নারী বলে হরি, করলেন মহারাস বিহার।।
    গঙ্গাচন্নার দক্ষিন ভাগে, মধুমতীর মরা রোগে রে করলেন লীলা চমৎকার;
    লয়ে ভক্তগণ, গঙ্গাস্নানে, গঙ্গাকে করলেন সাকার।।
    মদনমোহন রামমোহন কার্ত্তিক, গোঁসাইর পদে অতি আর্তিরে, অক্রুর শম্ভু রামকুমার;
    তারা হনুমান মুরতি হেরে পাথারে খেলায় সাঁতার।।
    মারুতি মুরতি হয়ে, সুরধনি মাথায় লয়ে রে, যেন সাক্ষাৎ গঙ্গাধর;
    গঙ্গা লয়ে শিরে, নৃত্য করে ম বেলে ঘাট হয় আবিষ্কার।।
    রুহিদাসের চর্ম্মকাঠয়, ডাকলে গঙ্গা হলেন উদয় রে, আছে শাস্ত্রে তাই প্রচার;
    বলে তারকচন্দ্র ছাড় সন্দ অশ্বিনী হও নির্বিকার।।
    ৪২। নং
    তাল একতাল
    আয় না ভাই সবে মিলে যাই, দেখতে গুরুচাঁদে।
    ভক্তি প্রেমের গুরু কল্পতরু, হারে যার জন্যপরাণ কাঁদে।।
    শ্রী ধাম ওড়াকান্দিতে, তথা যায় ছত্রিশ জাতে প্রসাদ খাচ্ছে এক পাত্রে;
    এবার যার যেমন মন, সে পায় তেমন, বঞ্চিত না হয় প্রসাদে।।
    যত ভক্ত শুক-শারী, তারা যায় সারি সারি, বলে জয় জয় শ্রীহরি,
    হরি নামের মধু, না পেলে শুধু, যায় কিরে সাধে সাধে।।
    গোঁসাই জগদীশ ঠাকুর, তার মহিমা প্রচুর, ও তার চরিত্র মধুর,
    কুবের তিন কড়ির, তোড়ানি খেয়ে, গোঁসাই নাচতেছে প্রেমানন্দে।।
    জগদীশ গুণনিধি, করলেন কামনা নদী, তথা স্নান করে যদি;
    ও তার মোক্ষ ফলের নাই অবধি, গুরুচাঁদ রাখেন পদে।।
    গোঁসাই তারক চন্দ্র কয়, ধামে যাওয়া বড় দায়, ভাগ্যে কি যেন কি হয়,
    এবার অশ্বিনী ভুলিল মায়ায়, কেঁদে মরি ঐ খেদে
    ৪৩ নং
    তাল ঠুংরি
    গুরু চাঁদ এমন চাঁদকে ভবে আনিল, কোন গুনে জগমন বান্ধিল।
    জগমন বান্ধিল, জগমন প্রাণ বান্ধিল।।
    এক পলকে দেখলে শতবার, অনিবার্য পিপাসা হারে বাড়ে অনিবার,
    জীবের চিত্ত চকোর, হয়ে বিভোর, রূপরসে মেতে গেল।।
    না জানি কি মোহিনী জানে, কুলজার মন প্রাম ধরিয়া টানে,
    কিবা বাল্য বৃদ্ধ গুণে বাধ্য, রূপ দেখে পাগল হল।।
    হরি নামের তরণী লয়ে, অকামনা প্রেম ভক্তি বোঝাই করিয়ে,
    প্রভুর ভক্তের সঙ্গে, পরম রঙ্গে জগতে বিলাইল গো।।
    অকাতরে বিলায় প্রেম ধন, অচৈতন্য কলির জীবে করিতে চেতন,
    এল পরম দয়াল, দুঃখী কাঙ্গাল তাপিতের প্রাণ জুড়াল।।
    আনন্দে চাঁদ মহানন্দ কয়, কোটী চন্দ্র বিরাজে মোর গুরু চাঁদের পায়,
    এবার অশ্বিনী ভুলিস না মায়ায়, প্রেমের বাজারে চলো
    ৪৪ নং
    তাল  ঠুংরী
    হরি চাঁদ, হেরে জীবন জুড়াল,
    ও প্রেম রসে হারে জগত মাতালো।।
    দুঃখী তাপীর জুরাতে জীবন, ওড়াকান্দি হরিচাঁদ এবার করলেন আগমন,
    তোরা দেখসে আসি, জগতবাসী হরি চাঁদ উদয় হলো।।
    নব রসে শ্রী অঙ্গ মাখা, অধরে সুধাকর ও তার দুনয়ন বাকা,
    সে যে ব্রজ নাতুর প্রাণ সখা, ভাবেতে বোঝা গেল।।
    শান্তি মায়ের হৃদয়েরই ধন, যোগে পায়না যোগীগণ, তারা করে যোগ সাধন
    তারে পাবার লাগি সর্ব ত্যাগী, হীরামন পাগল হ।।
    কি দিব তাঁর রূপের তুলনা, গগনের চাঁদ মলিন হয়, হেরে রূপের জোৎস্না;
    এবার পুরাতে জীবের বাসনা, হরি চাঁদ ভবে এলো।।
    ডেকে বলে তারক রসনা, আমার মনের মানুষ হরিচাঁদে কর উপাসনা;
    দয়াল মহানন্দের এই বাসনা, অশ্বিনী ধামে চলো।।
    ৪৫ নং
    তাল একতালা
    মনের মানুষ ধরা, মনরে ফেরা মুখের কথা নয়
    তারে ধরবি যদি নিরবধি, নে বধিরান্ধ বোবাশ্রয়।।
    বধিরান্ধ বোবার স্বভাব ধর, তবে অধর ধরা পড়বে ধরা, তারে ধরার মতো ধর;
    থাক যুতের ঘরে রূপ নিহারি, তবে মানুষ পাওয়া যায়।।
    আমিত্ব দূর যখন হবে, তবে হবে যে ভাব বাহ্য স্বভাব, কিছু না রবে;
    এই দশা তোর যখন হবে, দেখবি জগত মানুষ ময়।।
    মনের মানুষ যদি ধরতে চাও, আত্মস্বার্থ ত্যজে প্রেমে মজে অনুগত হও;
    হলে অনুগত মনের মত, মন মানুষ হবে সদয়।।
    প্রেম নগরে হয় তার বসতি, ও সে প্রেমিক বড় ভালবাসে প্রেমে যার আর্তি;
    ও সে প্রেমিক পেলে, করে কোলে, প্রেমশুন্য দেখিলে লুকায়।।
    ডেকে বলে তারক রসনা, মনের মানুষ হরিশ্চন্দ্র কর উপাসনা
    এবার অশ্বিনী পূরবে বাসনা, মহানন্দের করুণায়।।
    ৪৬ নং
    তাল গড় খেমটা
    মোরা কেন নবদ্বীপ যাব, শূন্য নদীয়ায় কি ফল পাব
    ও সে নদিয়ার চাঁদ এই হরিচাঁদ, হেরে জীবন জুড়াব।।
    গোঁসাই রামকান্তের বরে, প্রভু যশমন্তের ঘরে
    জীবের জন্য অবতীর্ণ হল এবারে,
    এবার বর্তমানে পেলাম তারে, কেন তীর্থবাসী হবো।।
    তীর্থে নাহি প্রয়োজন, ও সে তীর্থের মহাজন,
    লয়ে গয়া কাশী, তীর্থ কাশী আরও বৃন্দাবন
    এবার ওড়াকান্দি এল সে ধন, গেলে বর্তমান দেখতে পাবো।।
    ভারত ভাগবত রামায়ন তন্ত্র গ্রন্থ অগণন
    কোন শাস্ত্রে নমঃশুদ্রের পাই না নিদর্শন;
    এবার শাস্ত্র মতে, করে সাধন, কেমনে তারে পাবো।।
    তাইতে পুনঃ অবতার, হল হরি চাঁদ আমার;
    হরির লীলামৃত গ্রন্থ, দলিল আছে তার;
    কর দলিল অগ্রাহ্য, ছাড় বাহ্য, আমরা সবে হরির দাস হবো।।
    গুরু চাঁদের এই বাণী, ও তুই শোনরে অশ্বিনী,
    সে চরণে জন্ম নিল, পতিতপাবনী
    এবার সেই মানুষ এল এদানী, ভব চরণ পারের বান্ধব।।
    ৪৭ নং
    তাল গড়খেমটা
    আমার মন চল যাই গুরুর দরবারে
    কেন সাধে সাধে সংসারমেদে, বন্দী রলি কারাগারে।।
    নির্মল গুরুর কাছারি, তথায় নাই জুয়াচুরি;
    কামুকের দণ্ড ভারি আইন অনুসারে।।
    গুরু পাস করেছে পরোয়ানা কপট মিথ্যাবাদীর যেতে মানা;
    হিংসুকের হয় যন্ত্রণা, কৃপাদণ্ডে জব্দ করে।।
    তথায় হয় সাধুর দরবার, অসাধুর নাই অধিকার;
    তেছে সুক্ষ বিচার, সত্যের আইন ধরে।।
    এবার রতি মায়া কমি হলে, তারে অমনি ধরে দিচ্ছে জেলে;
    ছেঁড়া এক কান্থা গলে, রাখছে তারে বেহাল করে।।
    ভেঙ্গেছে গুরুর তবিল, করগে ভক্তি আপিল,
    অনুরাগ রাখ উকিল, প্রেমিক জুরিদারে।।
    তুই খালাস হবি অনায়াসে, শেষে যাবিরে মন মানুষের দেশে;
    প্রেমিকের সহবাসে, থাকবিরে মন শান্তিপুরে।।
    শ্রীগুরুর বিচার শুনে, যম রাজার শঙ্কা মনে।
    শরণ লয়ে চরণে, বলছে করজোড়ে।।
    আমি আর যাবনা মতুয়া নগর, যত মতুয়া মাতাল প্রেমে বিভোর
    ইচ্ছে হইগে নফর, ঘটলোনা তা কর্মান্তরে।।
    গুরুচাঁদ ত্রাণ কর্তা, হরিচাঁদ হরে আত্মা;
    গোলোকচাঁদ দিচ্ছে বার্তা, ডেকে উচ্চস্বরে।
    দয়াল মহানন্দ বলছে কাঁদি, উঠলো প্রেমের তুফান ওড়াকান্দি;
    অশ্বিনী তর্কবাদী ডুব দিলিনা রূপসাগরে।।
    ৪৮ নং
    তাল গড়খেমটা
    গুরুচাঁদ পাঠাইওনা যমের কাছারি
    আমায় কৃপা ডোরে বন্দী করে, রেখ তোমার প্রেম হুজুরী।।
    হয়েছি অপরাধী, শ্রীপদে রাখ বাঁধি;
    না হয় পাঠাও ওড়াকান্দি, শান্তিমায়ের পুরী।
    আমায় খাটনি দাওহে মনের মতো, হব গুরুচাঁদের অনুগত;
    করব ঐ চরণ ধৌত, দাও আমারে এই কামজারী।।
    হয়েছি ফেরারী, হস্তে দাও কৃপা ডুরি;
    পদে দাও দয়া বেড়ী, রাখ বন্দী করি
    আমায় যদি দাওহে দ্বীপান্তর, পাঠাও মায়া সিন্ধু পারে,
    পুনঃ না আসি ফিরে , প্রেম দ্বীপে দাও চালান করি।।
    চরণে হলেম দোষী, গলায় দাও দয়া রসি;
    অনুরাগের চাপরাশি,তশীল করুক ভারী।
    আমায় জুড়ে ভক্তি ঘানির গাছে, যেন কৃপা বেত্র মারে পিছে;
    যাতে অপরাধ ঘুচে, শমন রাজার কি ধার ধারি।।
    শ্রী গুরুর প্রেমের জেলা, তথায় নাই ত্রিতাপ জ্বালা;
    যতসব হরিবলা করে চৌকিদারি
    আমায় শাসন কররে আইন মতে, রাখবে সদা সুক্ষ পথে;
    ছোঁবেনা রবির সূতে, প্রেমানন্দে বলবো হরি।।
    ডেকে কয় তারক চন্দ্র, অশ্বিনী নাই তোর সন্দ;
    সহায় তোর মহানন্দ কৃতান্ত ভয়বারী।
    এবার হগে গুরুর দাসানুদাস, তুই এ মামলাতে পাবি খালাস;
    পূরবে মনের অভিলাষ, করিস না আর জুয়াচুরি।।
    ৪৯ নং
    তাল গড়খেমটা
    গুরু কৃপা দৃষ্টি দয়া দৃষ্টি হচ্ছে বরিষণ
    দেহ কঠিন জমি জঙ্গলা ভুমি,
    জ্ঞানাস্ত্রে আবাদ কর অবোধ মন
    নিষ্ঠা নিস্কাম জুড়ে দুই আবাল
    ভাবের জোয়াল জুতের লাঙ্গল দিয়া যোড়াও হাল;
    দেহ চাষ করলে তোর ফিরবে কপাল;
    গুরুধন ভক্তি বীজ করবেন বপন।।
    তোর ভক্তি লতা বাড়বে অনুক্ষণ
    অনুরাগের বেড়া দিয়া হুশার থাক মন
    যেন ছয়টা অজা ছোঁয়না কখন,
    এ লতা যাবে নিত্য বৃন্দাবন।।
    ও সে নিত্য ব্রজে আনন্দ কানন,
    আহ্লাদিনির সঙ্গে গুরুর হতেছে মিলন
    তোর ভক্তি লোটায় করলে বন্ধন,
    আনন্দে দেখবি সে যুগল মিলন।।
    তোর ভক্তি লতায় সিঞ্চ প্রেম বারি
    প্রতিষ্ঠা রূপ ডালপাতা মন ফেলাওগে ঝুড়ি,
    এবার ফলাফলের আশায় ছাড়ি
    নিস্ফলের মর্ম্ম জানে রসিক জন।।
    স্বামী মহানন্দের দয়া যে অপার
    তোর ভক্তি লতা বাড়বে যাতে করছে সে যোগাড়
    গোঁসাই তারক চাঁদের বাঞ্ছা এবার
    অশ্বিনীর লতায় ফলুক প্রেম রতন।।
    ৫০নং তাল - গড়খেমটা
    মন মালি তোর দেল বাগিচায় উঠলরে ভক্তি মুকুল
    দিনে দিনে বাড়বে লতা ফুটবে প্রেমানন্দ ফুল।।
    ফুটলে প্রেমানন্দ ফুলহবে সৌরভে আকুল;
    মুক্তি আশা ভক্তির নাশার ভেঙ্গে যাবে মূল;
    নয়ন জলে ভাসবে দুকুলমিলবেরে অকুলের কুল।।
    লতা হইলে সবলফলবেরে সুফল;
    হরি মাণিক ফলবে লতায় পথের সম্বল;
    সে যে সাধনের ধন চিন্তামণি অনাদি যার না পায় মূল।।
    লতায় বিঘ্ন অতিশয়শোনরে মনুরায়;
    বৈষ্ণব অপরাধহাতী মাথাযেন না লওয়ায়,
    যদি লতা শুণ্ডে জড়ায়এক কালে করবে নির্ম্মূল।।
    যেজন সুজন মালী হয়ঐ লতার কৃপায়;
    অনায়েসে প্রাপ্ত হয় সে হরি দয়াময়;
    শেষেপ্রেমানন্দে সাঁতার খেলায়ভাসিয়ে দিয়ে জাতিকুল।।
    মহানন্দের এই বাণীশোনরে অশ্বিনী;
    ভক্তিলতায় সিঞ্চন করে প্রেম তরঙ্গিনী;
    হুসার থাক দিন রজনীদেখ জেন না হয় ভুল।।

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.