শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ৭৬-৯৫ - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ৭৬-৯৫

    গান নংঃ ৭৬-৯৫


    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-বিরোলা
    ৭৬। তাল-কাণ্ডয়ালী
    এই হরি নাম মহামন্ত্র সর্ব্ব যুগের সার,
    হাতে কাম মুখে হরিনাম লওরে বারে বার
    ছাড় অসৎসঙ্গ কু-কথা বারে বার
    সত্য বাক্য মনকে সূক্ষণরাখ মন আমার।।
    । ডঙ্কাসিঙ্গাঝাজঢোলকাশী লও ধরি,
    উচ্চস্বরে ব্যক্ত করেবল হরি হরি
    গোলকে গোপনে ছিলকলিতে নাম ব্যক্ত হল,
    মন সাধ মিটাইয়ে নেওপুরিয়া উদর।।
    । বহু শাস্ত্রিক বক্ত যারাতাদের এই রীতি,
    তর্ক দিয়ে জয়ী হইবেমনের এই গতি
    বৃথা তর্ক ছেড়ে দেওপরের সম্বল করে লও,
    পারের বেলা ঘটবে জ্বালাগতি কে তোমার।।
    । শাস্ত্র গ্রন্থ লোক বুঝানদৃষ্টান্ত প্রমাণ,
    উহাতে কখনও পাওয়া যায় না ভগবান
    মন প্রাণ দিয়ে তাঁহারেনয়ন রেখে এক নেহারে,
    যুদ্ধের বেশেরূপের দেশেকরগে সময়।।
    । প্রেমিক গুরুর হুকুম নিয়েযেও সমরে,
    যুদ্ধে অগ্রসর হইওঅতি হুসিয়ারে
    সদা রেখ উর্দ্ধ নয়নপলক মারিও না কখন,
    জুড়িও ঐ রূপের বাণজ্ঞান ধনুক উপর।।
    । অনুরাগ সৈন্যকে নিয়েরণে দেও হানা,
    কাম দ্রোনকে বধ আগেদুষ্ট সেইজনা
    আদিত্য কয় শুনরে দীনাশ্রী হরি নাম ভুলিও না,
    হরি গোসাইর উপাসনাছাড়িও না আর।।
     
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-বিরোলঅ
    ৭৭। তাল-কান্ডয়ালী
    যদি পারের আশা কর ও সুজন মনা;
    সকালে ধরিও পাড়ি-বসে থেক না
    সদা বল হরি হরিদুহাতে হাইল ধরি
    শ্রদ্ধা মাস্তুলে দিয়েবিবেকের টানা।।
    । ভক্তি বাদাম তুলে দিয়েআনন্দ প্রাণে,
    প্রেম বায়ুতে খাটাইওঅনুসন্ধানে
    যখন উঠবে ভাবের তুফানঢেউ খেলিও হয়ে মগন,
    আনন্দ পাবি সর্বক্ষণপূরিবে সব কামনা।।
    । কু-মতির ঐ কু-পবনযদি উথলে,
    উল্টা বেয়ে যেও তরীরাখিও তায় নঙ্গর করি,
    মুখে বল হরি হরিপবনের ভয় রবে না।।
    । ভোর বেলা ধরিলে পাড়িশঙ্কা নাই তাহার,
    অনায়াসে উঠে পাড়িহয়ে যায় সে পার
    শেষ বেলা ধরিলে পাড়িদিবা শেষে বেড়ায় ঘুরি,
    অন্ধকারে ডুবায় তরীদুর্ভোগে মরে সেই জনা।।
    । প্রহ্লাদ দিয়ৈছিল পাড়িঅতি সকালে,
    মহাসুখে পার হয়ে যায়হরি বল বলে
    প্রহ্লাদ চারি ভাইর কনিষ্ঠকর্ম্ম গুণে সর্বশ্রেষ্ঠ
    ত্রি-ভূবনে নাম উৎকৃষ্টরল তাহার ঘোষণা।।
    । আদিত্য কয় দিনে দিনেদিন ফুরায়ে যায়,
    সুখ শয্যায় ঘুমিয়ে রলিপারের কি উপায়
    হরি গোসাই কয় পারের বেলা,
    ঘটবেরে তোর বিষম জ্বালা,
    পাড়ি ধর এই ভোর বেলাপারে যদি যাওরে দীনা।।
     
    রাগিনী-মহসালা
    ৭৮। তাল-ঝুলুন
    এমন সুমধুর হরিনাম নিয়ে একবার দেখনা
    উদর ভরি নিলে পরেঅরুচি কখন হবেনা।।
    । যে পেয়েছে নামের মর্ম্মকরতে চায় সে হরির কর্ম্ম
    চিনে নিয়ে হরি ব্রহ্মহৃদয় করে নাম জপনা।।
    । পেল মর্ম্ম পাগলঅ ভোলঅখেলে সদা নামের খেলা
    তাড়িয়ে দিয়ে ভরের জ্বালাশ্মশানেতে দিচ্ছে হানা।।
    । পঞ্চাননে পঞ্চমুখেজপে ঐ নাম পরম সুখে
    ব্রহ্মাজপে চর্তুমুখেজপে নারদ নিয়ে বীন।।
    । আদিত্য কয় দীনবন্ধুপার হও যদি ভব সিন্ধু
    হরি গোসাই পারের বন্ধুসদা করিস তাই ধারণা
     
    রাগিনী-হেলারি
    ৭৯। তাল-ঝাপ
    এল সোনার মানুষ ওড়াকান্দী
    কে দেখবি ত্বরায় চলে আয়
    মানুষ দেখলে জুড়ায়তাপিত জীবন,
    প্রেম হিল্লোলে মন গলিয়ে যায়।।
    । যদি সেই মানুষ ধরতে চাওমুখে হরি গুনগান গাও
    নিরীখ ধরে সদা রও সেই মানুষ পানে,
    এবার কামের ঘরে কপাট মেরেনামের হুঙ্কার ছাড় সদায়।।
    । সেই মানুষ শান্তিপুরেশান্তি মায়ের স্নেহাগারে
    গেলে পরে দেখবি তারেজুড়ারি জীবন
    তবে প্রেমানন্দে কাল কাটাবি,
    দেখতে পাকি ঐরুপ সদায়।।
    । সেই মানুষ ধরা বিষম দায়শান্তিপুরে থাকে সদায়,
    ধরতে গেলে ছুটিয়ে পালায়
    তুই কেমন করে ধরবি তারেউল্টাকলে চলে সদায়।।
    । (দয়াল) হরি গোসাইর দয়াবানী,
    করলে গুরুর করন জানি,
    পাবি সেই মানুষের দরশন
    বোকা দীনারে তুইকরলি না করন,
    মানুষ মিলবে কোন গুনের দায়।।
     
    রাগিনী-গুজরাটিয়া
    ৮০। তাল-আদ্ধা
    এল কলির শেষে পাগল বেশে,
    এল পাগল হরিচাঁন
    আমার হরিচাঁদের প্রেম বাজারে,
    যেতে পারে হয় যার একমন।।
    । হরিচাঁদের নির্ম্মল করনযার মন করেছে হরন,
    তার কি ঘরে থাকে প্রাণ
    ও সে ঘরের বাহিরহয়ে গিয়াছেত্যাজ্য করে সব কুলমান।।
    । হরিচাঁদের ঐ রূপ বরনদেখলে জুড়ায় তাপিত জীবন,
    এমন রূপ কেউ দেখনাই
    ঐ রূপ দেখবি যদি নিরবধিহরিচাঁদ বলে সদা কান।।
    । কর গুরুচাঁদের করনসে হয় প্রেমের মহাজন,
    ডেকে বলে কে নিবি আয়
    বলে কে নিবি কে নিবি তোরাধর বলে যাচে প্রেমধন।।
    । হরি গোসাই পেয়ে প্রেমধনজগতে করলেন বিতরণ
    মাতাইল এ ত্রিভূবন
    ও সে মাতাইল পুরুষ নারীমাতৃলনা দীনবন্ধুর মন।।
     
    মনশিক্ষা
    রাগিনী-ঘুগুট
    ৮১। তাল-আড়া
    আমার মন পাখীতে বুঝ মানে না উপায় কি করি
    আমি দিবানিশি বুঝাই তারে রে মন,
    পাখীর নয়নে ঝরে না বারি।।
    । পাখী আনন্দ হৃদি পিঞ্জরেসপ্ত তালায় বসত করে রে
    পাখী বাল ভাল আহার করে রে মন
    হরি নামে যায় না গড়াগড়ি।।
    । পাখী ঘৃত মাখন ননী খেয়েরল বন পানে চেয়ে রে
    আমার কি লাভ হলপাখী পুষে রে মন,
    পাখী কখন জানি যাবে উড়ি।।
    । পাখী কেন হরি বল বলেনাভাবিতেছি সেই ভাবনারে
    পাখী সদা জপে কু-মন্ত্রণা রে মন,
    পাখী একদিনও না বলল হরি।।
    । পাখি হরিচাঁদের চরণ ভূলেসর্ব্বদা কু-বুলি বলে রে
    দীনা বলে নামে পাষান গলেরে মন,
    আমার মন গল্ল না জনম ভরি।।
     
    মনশিক্ষা
    রাগিনী-অরুণভেরী
    ৮২। তাল-ঠুংরী
    শ্রী হরির ঐ কৃপা বৃক্ষে,
    মন পাখী তুই পড় যেয়ে উড়ে
    যাবি খেদ শরীরেকুতুহলেহরিচাঁদ কৃপা নগরে।।
    । পাখী প্রেম বায়ুতে যাবি ভর করি,
    ভক্তির পাখা দিয়ে ঝাকাযাবিরে উড়ি
    বসবি দয়াডালেসে নাম ফুলে
    মধু পান কর উদর ভরে।।
    । পাখী কৃপা নগর হরির অবস্থান,
    নামের মধু খাও রে শুধুকরনা গুমান
    এবার শ্রদ্ধা রাখি ও মন পাখী,
    রও কৃপা বৃক্ষের উপরে।।
    । (ডালে) আশার বেড়ি থাক জড়ায়ে,
    কল্পতরু ফলের পানেসদা রও চেয়ে
    চেয়ে রও চিরকালমিলবে সে ফল
    স্থান পাবি শান্তি কুটীরে।।
    । দীনা বলে উপায় কি করি,
    মন পাখীতে লয় না কথাঐ দুঃখে মরি
    করে কু-ভাবনা কু-পথ হানা,
    হরি নামের বুলি নাহি ধরে।।
     
    রাগিনী-ইরাহারা
    ৮৩। তাল-ঝাপ
    মন পাখি তুই হরি বলে বাহু তুলে ডাক দেখি
    ও তুই ডাকলে পরে দেখবি তারেজুড়াবে তোর দুই আঁখি
    । জংলি ভাষা ত্যাজ্য করেহরি নাম বিরাগ ভরে,
    প্রেমশ্বরে ডাক পাখি
    তবে পাখি জনম যাবে কেটেযাবি শেসে প্রেমের হাটে,
    নামে ঝরবে দুই আঁখি।।
    । সদা কর জোরা মালিহেলা করে দিন খুয়ালি,
    কার আশায় হয়ে সুখী
    পাখি চিরকাল কাটালি হেলেকাঁদবিরে তুই নদীর কুলে,
    হারাবি তোর দুই আঁখি।।
    । স্থুলের কথা ভুলে গিয়েকু-কর্ম্মে রলি মজিয়ে,
    পারের উপায় করলি কি
    পাখি এ দেহের গৌরব ছাড়ভব পারের সম্বল কর,
    তা বিনে তো গতি কি।।
    । এসেছ ভবে কি ধন লয়েকি ভাবেতে যাও চলিয়ে,
    রবির সুতকে বলিবি কি
    যে দিন হস্ত পদ বন্ধন করেনিয়ে যাবে যমের ঘরে,
    কি বলে দিবি ফাঁকি।।
    । ভবে এসে রলি বসেকাল কাটালি রঙ্গ রসে,
    এমনি দিন যাবে নাকি
    হরি গোসাই বলে কর্ম্ম ফলেদীনা গেলি রসাতলে,
    বিষয় চিন্তা গায় মাখি।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-উরুশেন
    ৮৪। তাল-ঝাপ
    দয়া করে বল সাধু ভাই
    আমি প্রেমিক গুরু কোথা পাই প্রেমিক গুরু চিনব কেমনে
    কি তার রতি মতিভাবের গতি হে
    বল বসত করে কোন খানে।।
    । কি প্রকারে যাবে জানাপ্রেমিক গুরুর কি নিশানা,
    কি আকার তার কি বেশ ভূষনে
    কেমন আঁকি তারারূপ চেহারা হে,
    তারে ধরিব কি সন্ধানে।।
    । অধর মানুষ যে ধরেছেযাব আমি তারি কাছে,
    চিনায়ে দেও সেই গুরুধনে
    আমার এই আকিঞ্চনকরব সাধন হে,
    সদা থাকিব তাঁর চরনে।।
    । প্রেমিক গুরুর সহবাসেথেকে আমি মন উল্লাসে
    পূজব তাঁরে অতি যতনে
    আমি পেলে দেখাসুজন সখা হেসাধন করিব মন প্রাণে।।
    । আদিত্যের ঐ সু-আদেশেহরি গোসাইর কৃপাদেশে,
    যাব বলে বাসনা মনে
    ভেবে দীনা বলেচরণ তলে হেরব এ দেহ সমর্পণে।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী  ভাটিয়াল
    ৮৫। তাল  ঝাপ
    কত গুনে এঘরখানি গড়েছিল কোন গুণমনি,
    ও সে কোথা থাকে কেউ না দেখে,
    কার কাছে শুনিব বাণী।।
    । তাঁহার গুণের কথা বলিব কত,
    সেই ঘরের ভিতরে কলকরেছে যত
    ও তার জোড়ায় জোড়ায় কব্জা এটে,
    বসাল কল সে সন্ধানী।।
    । চিনিনা চিনিয়ে দেও তারে,
    কোথায় তাহার হয় উৎপত্তিকি নামটি ধরে
    আমি কেমন করে ধরব তারেকোথায় রয় সে গুণমণি
    । সেই ঘরেতে আছে আট কোঠা,
    না জানি তার নয়দরজাকি ভাবে আটা
    আরও কোথায় বা তার মটিকোঠা,
    কোথায় রেখেছে প্রেম রতœ খানি।।
    । (ঘরে) চৌষট্টি জন কার নাম কি ধরে,
    কার কোন খানে হয় বসতিবলে দেও মোরে
    ভেবে দীনা বলেকি কৌশলে,
    পাব হরি গোসাইর দয়া কণি
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-মেনলোহই
    ৮৬। তাল-কান্ডয়ালি
    তুই করলি না তোর দেহের নিরুপণ
    হারাইলি আত্ম তত্ত্বপরমার্থ গুরুতত্ত্ব পরম ধন।।
    । নয়টি জেলায় দেহরাজ্যপেয়াদামৃধা পঞ্চ বাধ্য,
    ছয় জনেতে তহশীলদারীকরেন গ্রাহ্য
    নবীন রাজা নামটি ধরিবসে আছে অন্তপুরি,
    ঘুমের ঘরে কপাট মারিআছে মুমেতে অচেতন।।
    । ছয় জনে ছয় তহশলি নিয়েভ্রমে জিলা মোকাম মিয়ে
    তহশলি করে সন্ধ্যানেতেঅতি গোপনে
    তহশীলের মাল করে চুরিতিলেক মাত্র হয়না দেরি
    সহরিয়া চোর সন্ধান ভারিদিক ভুলায়ে করে হরণ
    । তাতে তিন মহকুমা চারটি থানালোভি কামুক যেতে মানা
    গেলে পরে ঘটে যন্ত্রনাসেই রাগ দরবারে
    স্থুলপ্রবর্ত্তসাধকসিদ্ধিচার থানার চার নিয়ম বুদ্ধি
    হাকিম হয় তার সর্ব্ব সিদ্ধিহুজুরে হয় বিচার পতন
    । মেরুদন্ডের দক্ষিণভাগেপিঙ্গলা নাড়ী বিরাজ করে,
    মধ্যেতে সুষুুা থাকেইড়া নাড়ীর যোগে
    রাজার হল এই তিন নারীচলে তারা দ্রুত ভারী,
    কফপিত্তবায়ু লয়ে চলেতেছেসেই নারী তিন জন।।
    । ইড়াসুষুুাপিঙ্গলাসত্ত্বরজতম গুনে করে খেলা,
    যে দিন তারা হয় উতলাজীবের সারা দায়
    ভেবে বলে হরি গোসাইদীনবন্ধু তোর রক্ষা নই,
    হারাইলি আত্ম তত্ত্বচিনলি না সেই ড়গুরু কি ধন।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-জয় জিয়ালই
    ৮৭। তাল-কহরাবা
    রিপুর পীড়নে-
    সারা জীবন যায় অকারন তত্ত্ব না জেনে,
    আমি না জানিলেম গুরু তত্ত্বদেহে কে রয় কোন খানে।।
    । চতুর্দ্দল হয় কোনখানেতেবসতি কাহার,
    বল গুরু দয়া করেধরে কোন আকার
    সে কি কাজের হয় অধিপতিকি কাজ করে সে জানে।।
    । ষড়দলটি কোন খানেতেবল সেই বাণী,
    সেই পদ্মেতে বসত করেকোন গুণমনি
    তাহার কি আকৃতিনা পাই স্থিতি,
    কি কাজ তার ভার বহনে।।
    । দশম দল আর দ্বাদশদলেথাকে কোন কোন জন,
    কার কি বর্ণকি কার কর্ম্মবলে দেও এখন
    আরও কোনখানে ঘোড়শদল দ্বিদল,
    কোখানে থাকে কোন জনে।।
    । সবার স্বরূপ কি কাহার রূপতাহা শুন্তে চাই,
    কি কার্য কার হয় অধিকারবল হে গোসাই
    হরি গোসাই এবার তত্ত্ব জানবারবাসনা দীনার মনে।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-জয় জিয়ালই
    ৮৮। তাল-কহরাবা
    তত্ত্ব বলব কিরে তায়
    গুহ্যমূলে চতুর্দ্দলে জীবাত্মা সে রয়
    তার আকার হল রক্ত বর্ণভার বহন তার জল কাজ হয়।।
    । আরও শুন বলিরে তাইতত্ত্বের বাণী,
    ভূতাত্মা সে লিঙ্গ মুলে শাস্ত্রেতে জানি
    আছে হরিতাল বর্ণ তাহারষড়দলে রয় সদায়।।
    । পরম আত্মা নাভিতে রয়দশম দলেতে,
    আকার হয় তার বিদ্যুৎ বর্ণকর্ম্ম বায়ূতে
    আছে আত্মারাম বক্ষস্থলেদ্বাদশদল বসত আশ্রয়।।
    । চন্দ্র বর্ণ আকার হয় তারআহার হরি কথা,
    হাস্য হয়ে সদা থাকেআনন্দ যথা,
    প্রেমানন্দ অপার থাকে বিভোরতিনি যে আনন্দময়।।
    । কণ্ঠস্বথলে ষোড়শ দলেআত্মা রামেশ্বর,
    আকার হয় তার সূর্য্য বর্ণ হরি কথা সার
    আছে বুদ্ধি জ্ঞানরস আস্বাদনহরি ভজন সর্ব্বদায়।।
    । মস্তকেতে দ্বিদল পদ্মসহস্র আরে,
    পরম আত্মা রয় তাহার নামমহাজন ধরে
    হরি গোসাইর বাণীতত্ত্বখানিশুনরে দীনা দুরাশয়।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ৮৯। তাল-ঠুংরী
    আমার দেহখানি গুণমণি গড়িয়ে সে কোথা গেল
    আমার আঠার মোকামের পাশে,
    কে কোন খানে থাকে বল।।
    । আমার দেহের খবর বল সাধু ভাই,
    দেহের মালিক কোথায় থাকেতারে কেমনেতে পাই
    হয় তার কি আকৃতিরূপের জ্যোতি,
    কোথায় তার বসতি বল।।
    । দেহে আট কোঠরা নয় দরজা হয়,
    কোনখানেতে মহাশক্তির বসতি আশ্রয়
    বল নয় দরজায় কে কে থাকে,
    জীবাত্মার স্থান কোথা বল।।
    । ব্রহ্মা বিষ্ণু থাকে কোথা,
    দয়া করে বল সাধু সেই সব বারতা
    বল হাকিনী কোন খানে থঅকেশুনিবার বাসনা হল।।
    । ভাবি আমি নিশি দিনে,
    মানব দুর্লভ জনম গেলতত্ত্ব বিহনে
    হরি গোসাইর দয়া বিনেদীনার সাধন না হইল।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-অরুণভেরি
    ৯০। তাল-ঠুংরী
    অনিবার্য্যে দেহ রাজ্যের
    খবর যেয়ে জেনে নে এবার
    শ্রীশ্রীহরির ভাব সংকীর্ত্তন
    জানলে দেহের খবরঘুচবে আঁধার,
    দেহ তোর হবে দীপ্তাকার।।
    । আঠার মোকামের পাশে রয়,
    একবারে বলিব কতকথা সমুদয়
    আছে দেহের মালিক সহস্রারে,
    পরম ব্রহ্ম জ্যোতির্ম্ময় যার।।
    । চতুর্দ্দলে রয় মহাশক্তি,
    জীবাত্মা ধন তাহার কোলে করে বসতি
    আরও ভ্রু-মধ্যে দ্বিদলেতে,
    হাকিনী সে রয় নিরন্তর।।
    । লিঙ্গে ব্রহ্মা করে অবস্থান
    পাট মধ্যে মহাবিষ্ণুথাকে সর্ব্বক্ষণ
    আছে ব্রহ্মা লিঙ্গে মনোরঙ্গে,
    খেলা করতেছে অনিবার।।
    । দেহের রাজা হরিধনে
    ডাক তারে প্রেম ভরেআকুল প্রাণে
    হরি গোসাই বলে তত্ত্ব বিনে,
    দীনারে তোর নাই পারা পার।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-বিরলা
    ৯১। কতাল-কান্ডয়ালী
    আর কত বুঝাব তোরে বল দেখি আমায়
    বুঝাইলে বুঝা মাননা এ ভারি বিষ্ময়
    তোর বুঝ নিতে কি জনম যাবেসাধন ভজন করবি কবে,
    শুনে নেরে নিঘুর ভাবেকে কোন খানে রয়,
    । নাভি মুলের অগ্রভাবে সূর্যের স্থিতি,
    তাহার অগ্রে বকায়ু পিত্তকরে বসতি
    তালু মুলে চন্দ্রের বাসরাহু করে সর্ব্বনাশ,
    অকালেতে গিয়ে রাহু গ্রাস করে তাহায়।।
    । ঋতুকালে চন্দ্র সূর্যের যদি হয় মিলন,
    সেই দিবসে পুর্ণিমাজেনে লবে মন
    দীপ্ত করে সপ্ত তালস্বর্গ মত্ত পাতাল ভূতল,
    পূর্ণ হয়ে পূর্ণ চন্দ্র জম্মে দুনিয়ায়।।
    । কাম রাহুর ঐ উত্তেজনে চন্দ্র কম্পিত,
    গ্রাস করে না যেন সদা থাকোহুসিয়ার মত
    হবি যদি সর্ব্ব জয়ীজানিসনে আর গুরু বৈ,
    রবির সুতে কোন মতেছোবে না তোমায়।।
    । আদিত্য কয় অজ্ঞানতায়রবি কতদিন,
    জন্মে জন্মে সাধন বিনেকরলি দেহ ক্ষীন
    হরি গোসাইর পদে নতহয়ে থাকগে মনের মত,
    দীনা তোরে বলব কততত্ত্বেরি বিষয়।।
     
    তত্ত্বগীতি
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ৯২। তাল-গড়খেমটা
    এবার চিনে লও গে তারে
    এবার চিনে লও গে তারে
    পিতৃধন হয় মহারত্নআদি শক্তি মুলাধারে।।
    । মুলাধার রক্ত আকারতাতে ধরে চারটি আকার,
    ব হতে চারি অক্ষরআছে তাই শাস্ত্রের মাঝারে,
    মায়া ডাকিনী শক্তিবয় সে তথাকারে,
    সাড়ে তিন প্যাচে তিনিকুন্ডলিনীআছে শ্রীহরিকে ঘিরে।।
    । পরম আত্মা পরম ব্রহ্মযার হাতে এ ব্রহ্মান্ড,
    করতে পারে অসীম কান্ডজিনিতে শক্তি নাই সংসারে
    তিনি কখন সাকারহয় নিরাকারএক এক বর্ণ ধরে,
    ক্ষণেক আরাম নাই তার বিশ্রামকখন বাহির কখন ঘরে।।
    । ডেকে বলে আদিত্যহরি গোসাই জানে তত্ত্ব,
    শিখে নিলে তার মাহাত্ম্যযাবি তুই আব্রহ্ম ভেদ করে
    বোকা দীনবন্ধু ঘুরে মরকেন অন্ধকারে,
    তুই জ্ঞানের আলো জ্বালাইয়েহুশের ঘরে থাকিস পড়ে।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-খাম্বাজ
    ৯৩। তাল-খেম্টা
    গুরু তত্ত্ব না জানিয়েআগে কেন ধর মূল,
    তাইতে কি তোর প্রেমের গাছে ফুটবে ফুল
    গুরু তত্ত্ব আগে জান মনপ্রেম লতায় বেড়বে দুকূল।।
    । মনরে গুরু তত্ত্ব না জেনেগুরুর করণ বিহনে,
    প্রেমের গাছে ফুল ফোটেনা কখনে
    গুরুর করণ করলে পরেপ্রেমের গাছের পাবি মূল।।
    । মনরে ভেবে দেখ ঐ নির্গমেআগম নির্গম সাধনে,
    অধর চাঁদকে পেতে পারে সব জনে
    আগম নিগম সাধন বিনেঅধর চাঁদকে পাওয়া ভুল।।
    । মন রে গুরুর তত্ত্ব যেয়ে জানগুরুর বাক্য সদা মান,
    তাহলে তোর হবে প্রেমের অঙ্কুর
    সেই অঙ্কুরে লতা বেড়েসেই লতায় ধরিবে ফুল।।
    । মনরে হরি গোসাই বলে গুনদীনবন্ধু কর সাধন,
    অসুর হয়ে রবি নাকি চিরদিন
    যে দিন শমন এসে বাঁধবে কশে,
    পিটায়ে ভাঙ্গবে দুকূল।।
     
    তত্ত্ব গীতি
    রাগিনী-দেবগিরী
    ৯৪। তাল-ঠুংরী
    ঘর কে গড়িল কোথা রল তালাস করসিল না
    ঘরের মধ্যে কে রয় সেই সমুদয়,
    নেহার করে একদিন দেখলিনা।।
    । চৌরশি ক্রোশ ঘরখানিহাড়ের গাথনি,
    সেই ঘরেতে দিয়েছে তায়চামড়ার ছাউনি
    তার জোড়ায় জোড়ায় কব্জা এটেগড়েছে ঘর সেই জনা।।
    । জ্ঞানের আলো বসাইলমাক্তার উপর,
    সেই আলো বন্ধ হলেজগৎ অন্ধকার
    আলো বন্ধ হয় ঐ কু-বাতাসেসে বিনে আর বন্ধ হয় না
    । ঘরের মধ্যে আট কোঠরানয় দরজা হয়,
    নয় জন দ্বারী নয় দরজায়দাঁড়াইয়ে রয়
    তার আঠার মোকামের পাশেআরও আছে আঠার জনা।।
    । ঘরের মধ্যে কাল কামিনীরয় নামটি ধরে
    নিন্দ্রাযোগে সে সর্ব্বধননিয়ে যায় হরে
    ঘরে আরও আছে পঞ্চজনাঘরের মালিক আছে একজনা
    । হরি গোসাই বলে যদিধরবি মালিক জন,
    অনায়াসে শান্তিপুরেকরিবি গমন
    তোর ঘরের মালিক নয় বহুদুর দীনবন্ধু করগে সাধনা।।
     
    রাগিনী-অরুন ভেরী
    ৯৫। তাল-ঠুংরী
    হরি গুনমণি গড়ে তিনি দেহ রাজ্য করলেন স্থিতি
    রাজ্যে নয়টি জেলা আঠার মোকাম
    মন মন্ত্রী হয় চালকপতি।।
    । নাভির অগ্রে সূয্যের অবস্থান,
    (তালু) পরে সহস্রারেচন্দ্র আছে নিরূপন
    তাইতে চন্দ্রসূর্য্যে দেহরাজ্যে আলো করে দিবা রাতি।।
    । আছে স্বর্গমর্ত্যপাতালভূতল,
    বীতলতলাতলরসাতল এই সপ্ততল
    আছে সপ্ত সাগর রাজ্যের ভিতর,
    তাতে রয় সাত মহামতি।।
    । দেহের রাজ হরি দয়াময়,
    ভক্তিভরে ডাক তারে কাতর হৃদয়
    ও তুই ধরগে তারে সেই অধরে,
    ছেড়ে কুল মান জাতি।।
    । দেহের কোন খানে কি খুঁজে বেড়ালে,
    পরম রতন পায়না কখনপ্রেম ভক্তি নইলে
    ছেড়ে কুটি নাটি ময়লা মাটিগুরু পদে রাখো আর্থী।।
    । হরি গোসাই বলে গুরু করে সার,
    মন-প্রাণ সমর্পয়ে মরার মতো মর
    দীনা হওগে রতমনের মতমিলবে জগৎ গুরুপতি।।

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.