শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান, নংঃ ১১-৩০ - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান, নংঃ ১১-৩০


    গান নংঃ ১১-৩০

    ১০ নং সংগীত
    কর নামামৃত পানকর হরি নামামৃত পান
    নামে রুচি হলে নামে করবে প্রেম দান।।
    নামামৃত পান করিলেসুনির্মল প্রেমফলে,
    একেকালে ও আমার মন জুড়াবে পরাণ।।
    যেই নাম সেই হরিভজরে মন নিষ্ঠাকরি,
    নামের সহিত হরিআছেন অধিষ্ঠান।।
    হরিনামের মর্ম জানিপাগল হল শূলপাণি,
    বীণা যন্ত্রে নারদমুনিকরে গুণ গান।।
    পতি মম মহানন্দগতি মম গোলোকচন্দ্র,
    জ্ঞান মম তারকচন্দ্রগুরুচন্দ্র ধ্যান।।
    প্রাণ মন হরিচন্দ্রপদে প্রেম মকরন্দ,
    পান করলি না তার এক বিন্দু অশ্বিনী অজ্ঞান।।
    ১১ নং সংগীত
    শ্রীধাম ওড়াকান্দি যাবি যদি গৌণ করো না
    গৌণ করো না আমার মন অলস হয়োনা।।
    প্রেম বারুণী প্রেমের মেলায় যেতে হেলা করোনা
    গেলে ধর্ম্ম অর্থ মোক্ষ ফলে,ফলের কে করে গণণা।।
    যে গিয়েছে সে পেয়েছে চেয়ে দেখ না
    পেল গোলোকের ধন গোলোক হীরামন ফিরে ঘরে গেলনা।।
    কোলের ছেলে ভূমে ফেলে যত কুলের অঙ্গনা
    তারা কুল ত্যজিয়ে যায় গো ধেয়ে কুলে রইতে পারলে না।।
    জাতি বিদ্যা মহত্বঞ্চ প্রেমের কন্টক পাঁচখানা
    প্রেমের বন্যা এসে গেল ভেসেও তার কিছু রল না
    মহানন্দ ডেকে বলে তারক রসনা
    সবে হরি বলে যায় গো চলে কেবল অশ্বিনী চললো না।।
    ১২ নং সংগীত
    আমার হৃদকদম্ব তরুমূলে দাঁড়াও শ্রীহরি
    আমার এই উৎসববামে বসাবপ্রেমরূপ রাই কিশোরী
    ভক্তিদুতি সাজিয়ে বৃন্দেঅনুরাগ তুলসী শ্রদ্ধা চন্দন দিব ঐ পদে,
    আমার মনের সাধেদেখব হৃদেযুগলরূপের মাধুরী।।
    অষ্ট সাত্ত্বিক অষ্ট সখিচয়ভাবের চামর ঢুলাইয়া বাতাস দিয়ে গায়,
    কেহ বিনা সূতেমালা গেঁথেসাজাবে যতন করি
    বাসনারূপ সাজিয়ে বড়াইযুগল-মিল দেখব বলে আনন্দের সীমা নাই,
    আমার কুমতি কুটিলার দর্প ঘুচাও হে দর্পহারী।।
    হরিনামের বাঁশী করেতে লয়েআমার দেহ গোকুলকর আকুলবাঁশী বাজায়ে,
    যেন অন্য ধ্বনিনাহি শুনিতোমার নাম বংশী শ্রবণ করি
    প্রেমানুগ মহানন্দ কয়আমার শান্তি হরির যুগল-মিলন দেখবি কে কে আয়,
    গোঁসাই তারকচাঁদ কয়এমন সময়আশ্বিনী অলস ভারি।।
    ১৩ নং সংগীত
    গুরুর প্রতি প্রেমভক্তি ভ্রান্ত মন তোর কেন হল না
    ছাড় কুটীনাটী ময়লা মাটিমন করগে ষোল আনা।।
    কর্ম্ম সূত্রে হরি হলে বামগুরু রাখলে রাখতে পারে যায় না পরিনাম
    গুরু গোঁসাই হইলে বামহরিচাঁদ রাখতে পারে না।।
    গুরু বলতে দুটী অক্ষর হয়গু বলিতে চিত্তগুহতমঃ রাশিময়
    রু‘ বলিতে রবি উদয়হলে আর আঁধার থাকে না
    গুরু কৃষ্ণ অভেদ আত্মা হয়তথাপি শ্রীগুরুর মান্য রাখলেন দয়াময়
    ও সে আপনি হরিচারযুগ ভরিকরলেন গুরুর উপাসনা।।
    জীবন যৌবন সপে গুরুর পায়মৎস্যচক্র ভেদ করিল বীর ধনঞ্জয়
    সমর যিনি দ্রৌপদী পায়সহায় ছিল কেলেসোনা।।
    দয়া করি তারকচন্দ্র কয়মন সপে দে অশ্বিনী তুই মহানন্দের পায়
    তবে প্রেমানন্দ হবে উদয় নিরানন্দ আর রবে না।।
    ১৪নং
    তাল-কাওয়ালী
    ভব ব্যাধি সারবি যদি নামৌষধি কর গ্রহণ
    আছে গুরুর কাছে নামৌষধি নিরবধি কর সেবন।।
    সত্য ত্রেতা দ্বাপর গেলনামৌষধি গোপন ছিল
    কলিতে তাই বিলাইলযেমন রোগ ঔষধ তেমন।।
    শুন আমার অবোধ মননামৌষধির অনুপান
    প্রেম মধুর রসায়ণ ভক্তি রস কর অর্পণ।।
    গুরু বৈদ্য ঘরে ঘরেনামৌষধি বিতরণ করে
    শ্রদ্ধাতে পান করলে পরেভব রোগ হবে বারণ।।
    নিস্কাম পথ্য কর বিধানতবে কর ঔষধি পান
    কাম পথ্য র্স্পশিলেরে প্রাণঅবশ্য হবে পতন।।
    তারকচাঁদ কয় বারে বারেপথ্য ঠিক না করলে পারে
    কিসে ভবব্যাধি সারেঅশ্বিনী তুই অভাজন।।
    ১৫ নং সংগীত
    হরিবল বলরে একবার নেশা ছুটবে নাগো আর
    নামামৃত পান করিলে পাবি কি বাহার।।
    তত্ত্ব জানি ত্রিপুরারীপঞ্চমুখে বলে হরি,
    সোনার কাশী ত্যজ্যকরিপাগল দিগম্বর
    চতুর্ম্মুখে পদ্মযোনিহরিবলে দিন রজনী,
    বীণা যন্ত্রে নারদমুনিজপে অনিবার
    হরিনামের তুল্য দিতেকি আছে অবনীতে,
    হরি হতে হরিনামের মহিমা অপার
    হরিনাম সুধাসিন্ধুপান করিলে তার একবিন্দু
    অনায়াসে ভবসিন্ধুহয়ে যাবি পার।।
    দয়াল মহানন্দ বলেঅশ্বিনী তুই এই সকালে,
    হরি বলে তরী খুলেচল প্রেম বাজার।।
    ১৬ নং সংগীত
    আমার মন বড় দুরাশা
    বামন হয়ে হাত বাড়ায়েচাঁদ ধরিতে কর প্রত্যাশা।।
    যেন তেন চন্দ্র নয়রে তমঃ সন্দ নাশা,
    দেব-দৈত্য-নরকীটাদি আরযে চাঁদের করে ভরসা।।
    যোগী ঋষি দিবানিধি যে চাঁদ বলে নেশা,
    যে চাঁদ লাগি সর্বত্যাগীশ্মশানে শিব বাঁধছে বাসা।।
    গোলোকে ভূলোকে থাকে শুনতে কি তামাসা,
    ভক্তের হৃদয় হচ্ছে উদয় হারে যার সরল হৃদয় দেল খোলাসা।।
    চাঁদ বলে যে পড়ছে ঢলে হয়ে দশম দশা
    ও তার অন্তরে বাহিরে সদা দিতেছে রূপের ঝালসা।।
    বলে স্বামী মহানন্দ অশ্বিনী তুই চাষা,
    তোর কর্মদোষে ঘটল না চাঁদ কার পরে বা কর গোসা।।
    ১৭ নং সংগীত
    সংসার সাগর রূপে ভাই মানব মীন সেজেছে,
    কালরূপী এক ধীবর এসেজঞ্জাল জাল পেতে রয়েছে।।
    জঞ্জাল জালে হয়ে বন্দীআমি এড়াতে না পাই সন্ধিবসে সদাই কাঁদি,
    কাল হল তোর দারুণ বিধিজালের ফাঁস এটে দিতেছে।।
    সাধু মোহান্ত মকর যারাজালের ফাঁস কেটে যেতেছে তারাহৃদয় শক্তি পোরা
    অনুরাগে তনু ভরাশিরে ভক্তিকরাত আছে।।
    সাধু মকরের সঙ্গ নিলে ও সে বন্দী রয়না জঞ্জাল জালেসঙ্গে যায় গো চলে
    মুখে হরি হরি বলেপ্রোমানন্দে সুখে আছে।।
    এমন ভাগ্য হবেআমার মন মীন সাধুর সঙ্গ লবেভবের জঞ্জাল যাবে
    গুরু গোঁসাইর দয়া হবেকর্মবন্ধন যাবে ঘুচে।।
    গোলোকচন্দ্র মকর হয়েযাচ্ছে প্রেমসাগরে জোয়ার দিয়েমত্ত মাতাল হয়ে
    অশ্বিনী তুই আকুল হয়ে এবার ঝাঁপদে গোঁসাইর পাছে।।
    ১৮নং
    তাল-ঠুংরী
    যদি যাবি ওপারকর শ্রীগুরু কান্ডারী,
    হরিনামের তরীহরিবলে তরী খোল এবার।।
    যুতের হালির কাঁটা ধরিএক নিরিখে ধর পাড়ি (মন আমার।)
    ওরে অনুরাগে দাঁড় মারিহরিনামে সারী গাও অনিবার।।
    প্রোমবায়ু উঠবে মনের গুণেভক্তি বাদাম দাওরে টেনে
    তোল সাধন মাস্তুল যতনেগুণের ডুবি লাগাওরে তার।।
    ঐহিক সুখে দিয়ে মাত্রাকররে মন ভবযাত্রা
    কর সাধুসঙ্গে শুভযাত্রাপাবিরে আনন্দ বাজার।।
    এই সকালে ধর পাড়িসাধু মহাজন বহর ধরি
    তবে অনায়াসে উঠবে পাড়িজলের বাড়ি লাগবেনা আর।।
    গোঁসাই গুরুচাঁদকে কর নেয়েমহানন্দে যাওরে বেয়ে
    ওরে অশ্বিনী তুই কি সুখ পেয়েভুলে রলি ভবে এবার।।
    ১৯নং
    তাল-ঠুংরী
    ওড়াকান্দি প্রেম বারুণী প্রেমের মেলা দেখসে আয়
    দেখবি যদি নাই বিবাদী পাগলচাঁদ আছে সহায়।।
    গৌরলীলা সাঙ্গকরিওড়াকান্দি এলেন হরি দয়াময়
    প্রভুর কড়ার ছিল মায়ের সনে গো ঠেকে এলেন ভক্তের দায়।।
    প্রভুর পিতা হন যশোমন্তশুদ্ধ শান্ত একান্ত সদাশয়
    প্রভুর দীক্ষাগুরু রামকান্ত (গো) যার বরেতে জন্ম লয়।।
    সাঙ্গোপাঙ্গ লয়ে সঙ্গেউদয় হলেন পরম রঙ্গে পুনরায়
    প্রভুর প্রিয়ভক্ত বিশ্বনাথ (গো) ব্রজনাটু সঙ্গে রয়।।
    শ্রীরাধার ভান্ডারের প্রেমধনজগতে করলেন বিতরণ গোরা রায়
    পুরায় প্রেমাভিনয় করিগুরুচাঁদ হলেন ভান্ডারী প্রেমালয়
    হলেন গোলোকচন্দ্র আবাদকারী (গো) মহানন্দ প্রেম বিলায়।।
    হীরামন পেয়ে প্রেম রতনউষারিয়া করে ভোজন রসনায়
    হয়ে অনুরাগী সর্বত্যাগী (গো) জলের পর নেচে বেড়ায়।।
    তারকচাঁদ প্রেম বণিত হয়েজাহাজ লয়ে বেড়ায় বেয়েও কে নিবি আয়
    প্রেম যে নিয়েছে সেই মেতেছে (গো), পাথারে সাঁতার খেলায়।।
    দশরথ মৃত্যুঞ্জয় লোচনতারা হয় প্রেমের মহাজন এ ধরায়
    কত পূজক ধ্যানী কর্মী জ্ঞানী (গো), প্রেম দিয়ে তাকে ডুবায়।।
    লক্ষীখালীর গোপাল সাধুপান করে হরিনামের মধু মেতে যায়
    সে আপনি মেতে জগত মাতায় (গো), যার নামেতে বাঘ পলায়।।
    হরিবর মনোহর তারাডুবল মুদি নয়নতারা প্রেম গোলায়
    তারা ডুবাইল পুরুষ নারী (গো), হরি চাঁদের প্রেম বন্যায়।।
    বলে গোঁসাই মহানন্দঅশ্বিনী তোর কর্ম মন্দ দুরাশায়
    কেন অভিমানের স্তম্ভ করি (গো), তুই বসে রলি এ সময়।।
    ২০নং
    তাল-গড়খেমটা
    আমার হরিচাঁদের প্রেমের মেলা আনন্দ নগরে
    এই বেলা ভাই করগো মেলা হরিনামের তরী করে।।
    শ্রীহরির প্রেমের মেলা রয়েছে দোকান খোলা,
    যতসব হরিবোলাবেচাকেনা করে।।
    এবার ব্রহ্মার বাঞ্ছিত হরিনাম বিকাইতেছে সস্তাদরে।।
    মেলার গুণ বলব কতদীনহীন কাঙ্গাল যত,
    পেয়ে ধন মনের মতনিচ্ছে সিন্দুক পুরে
    মেলায় যে গিয়েছে সেই পেয়েছেদিতেছে ধন অকাতরে।।
    ছিল ধন অনর্পিতকলিতে সমর্পিত
    জীবের সৌভাগ্য কতকে বলিতে পারে
    শ্রীরাধার খাস ভান্ডার ভেঙ্গে দিতেছে ধন অকাতরে।।
    সুরসিক ভক্ত যারাপ্রেম রসে তনু পোরা,
    সওদাগর হয়ে তারা ভক্তি নিক্তি ধরে
    এবার মন বুঝে ধন করছে ওজন এক মনের কম দেয়না কারে।।
    গুরুচাঁদ প্রেমভান্ডারীগোলকচাঁদ প্রেম প্রহরী,
    তারকচাঁদ ধরে দাঁড়ি দিচ্ছে ওজন করে
    দয়াল মহানন্দ জাহান পূরে দিতেছে ধন ঘরে ঘরে।।
    ভন্ড পাষন্ড যতধন পেয়ে হল মত্ত,
    ত্যজে সংসার অনিত্যসদায় নৃত্য করে
    এবার রিপুর বশেকর্ম্ম দোষেঅশ্বিনী ধন পেলনারে।।
    ২১নং
    তাল -একতাল
    হরিনাম বলরে একান্তে
    প্রাণ সঁপে দেরে মন হরিপদপ্রান্তে
    সমর্পিত দেহ হলেঅনর্পিত প্রেম ফলে,
    হরিচাঁদ হৃদয় দোলেথেকনা আর ভ্রান্তে
    হরি অনুগত হলেতারে প্রণমে কৃতান্তে
    হরিনাম বড়ই মধুরনিকটে নয় বহুদূর,
    যে ভজে সেই সে চতুরভাগবতে পাই শুনতে
    যেই নাম সেই হরি বলে সাধু মোহান্তে।।
    সাধু ভাগবতের প্রমাণসে প্রমাণ নয় অপ্রমাণ,
    কররে নাম সুধাপান সুখ পাবি যে অন্তে
    পঞ্চমূখে পরম সুখে নাম জপে উমাকান্তে।।
    নাম জপা ভক্ত যারাসুধাপান করে তারা,
    প্রেমেতে মাতোয়ারাকে পারে তাই চিন্তে
    আপনি মেতে জগৎ মাতায় হরিনাম মহামন্ত্রে।।
    শ্রীগুরুর বাক্য ধরঅনিত্য তর্ক ছাড়,
    এ দেহ সূক্ষ করযাবে ভব চিন্তে
    অশ্বিনী তোর মানব জনম গেল কান্তে কান্তে
    ২২নং
    তাল-গড়খেমটা
    ভূতলে চাঁদ নেমেছে ভুবন মোহন
    ল চাঁদের আগমনহরিচাঁদের আগমন,
    গেলে শ্রীধাম ওড়াকাঁন্দি পাবি দরশন
    সত্য ত্রেতা দ্বাপর গেলেপূরিতে পূর্ণশশী বাকী ছিল,
    এবার জীবের ভাগ্যোদয়ল পূর্ণ চাঁদ উদয়,
    জীবের চিত্ত তমঃ সন্দ করিতে মোচন।।
    ভকত চকোর যারাহরিচাঁদের সুধাপানে মাতোয়ারা,
    হয়ে ভাবতে বিভোলহরিনামেতে পাগল,
    প্রেমে তনু ডগ মগ করে দুনয়ন
    পূর্ববঙ্গ বাকী ছিলপূরাইতে ভক্তের বাঞ্চা পুনঃ এল,
    সঙ্গে লয়ে ভক্তগণপ্রেম রসেতেমন,
    জগতে প্রেমসুধা করে বরিষণ।।
    লেগে হরিচাঁদের কিরণমাতল তারক মহানন্দ গোলোক হীরামন,
    য়ে মত্ত মাতালমাতায় আকাশ পাতাল,
    এবার দুঃখী তাপীর জুড়াইল তাপিত জীবন।।
    তারকচন্দ্র বলছে কাঁদিউদয় হলরে চাঁদ ওড়াকাঁন্দি,
    দয়াল মহানন্দ কয়সে চাঁদ দেখবি কে কে আয়,
    অশ্বিনী দেখলি না চাঁদ ভরিয়া নয়ন।।
    ২৩নং
    তাল-গড়খেমটা
    হরিচাঁদ রূপে পরাণ হরে নিল
    পরান হরে নিল নয়ন ভূলে গেল,
    এমন মোহন মূরতি তনু কেবা গড়িল।।
    বাঁকা নয়ন জোড়া ভুরুআজানু লম্বিত বাহু কটি সরু,
    তার রুপেরই ছটায়কোটি চাঁদ পদে লোটায়,
    হরিচাঁদ হেরে চাঁদের কলঙ্ক গেল।।
    হেরে হরিচাঁদের ছবিঅধৈরজ হলরে প্রাণ বসে ভাবি,
    আমার একি হল সইআমি কিসে ধৈর্য্য রই,
    হরিচাঁদে হেরে আত্মা তন্ময় হ।।
    সুধাসিন্ধু মথে বিধিনির্জ্জনে গড়িছে সেই গুণ নিধি,
    রূপের তুল্য দিতে নাইগুনে বলিহারি যাই,
    ওরূপ নয়ন পথের ছিদ্র দিয়ে হৃদয়ে পশিল।।
    নয়ন দিয়ে হরিচাঁদেদিবানিশি হরি বলেপরাণ কাঁদে,
    ও তার রূপ খানি যেমন নামটি তেমন,
    জগতের সুধা এনে নামে মাখিল।।
    মহানন্দ চকোর হয়েপাগল হয়েছে চাঁদের সুধা পিয়ে,
    গোঁসাই তারকচন্দ্র কয়ল হরিচাঁদ উদয়,
    অশ্বিনীর ভাগ্যে সে চাঁদ কই ঘটিল।।
    ২৪নং
    তাল-একতাল
    মনে এক বাঞ্ছা ছিল ঘটলনা আমার
    আমা হৃদি পদ্মে হরিচাঁদে সাজায়ে মিলাব চাঁদের বাজার।।
    ভক্তগণ হইয়া তারাআমার হরিচাঁদকে ঘিরিয়ে সবে দাঁড়াবে তারা,
    ও সেই রূপে দিয়ে নয়ন তারাআনন্দে রূপ রসে খেলব সাঁতার।।
    প্রেম কান্তি শান্তি জননীআমার হরিচাঁদের বামে এসে দাঁড়াবেন তিনি
    দেখব চাঁদের সঙ্গে চাঁদবদনীরূপ দেখে যাবে মনের অন্ধকার।।
    আমার মন মঞ্জরী হয়ে গেঁথে চাঁদের মালা চাঁদের গলে দিবে দোলায়ে
    দেবী শান্তি মায়ের আজ্ঞা পেয়েপ্রেম সেবায় মত্ত রব অনিবার।।
    মনে আমার বড় অভিলাসসহস্রা কুঞ্জেতে সাজাইব মহারাস
    বে শান্তি হরিরূপে প্রকাশঐরূপে করেন যদি রাস বিহার।।
    প্রেমানুগ মহানন্দ কয়সেযে ভক্তের বাধ্য ভবারাধ্য ভক্তের মন যোগায়
    এবার সাধন গুণে হবে সদয়অশ্বিনী সে সাধনা নাই তোমার।।
    ২৫নং
    তাল-একতাল
    কলিতে হরিচাঁদ হল উদয়,
    গেল চিত্ত সন্দকর্ম্ম বন্ধআর কি জীবের আছে ভয়
    ভক্তগণ তারা হয়ে হরিচাঁদকে ঘিরিয়েরয়েছে কিবা শোভা তায়,
    জীবের চিত্ত চকোর হয়ে বিভোর প্রেমানন্দে সুধা খায়।।
    লেগে সেই চাঁদের কিরণগোঁসাই গোলোক হীরামনমহানন্দ তারক মৃত্যুঞ্জয়;
    তারা সুধা পিয়েমত্ত হয়েনাম দিয়ে জগত মাতায়
    তিনটি যুগ গত হল পূরিতে চাঁদ বাকী ছিল, তাইতে চাঁদ এর পুনরায়;
    এবার পুরাতে ভক্তের বাসনা তাইতে অবতীর্ণ হয়।।
    এল চাঁদ ওড়াকাঁন্দিযার জন্যে নিরবধি, ভক্তগণ কেঁদে বুক ভাসায়;
    এবার কলির মানুষরতে মানুষল যশোমন্ত তনয়।।
    তারকচাঁদ ডেকে বলেঅশ্বিনী মায় জালে, ভুলে কেন রলি দুরাশায়;
    ও তোর মানব জনব ধন্য হবেচাঁদরে কিরণ লাগলে গায়ে।।
    ২৬নং
    তাল-একতাল
    ত্বরায় চল ভবপারে যাই, হরিনাম তরনী এল ভাই
    হরিনাম তরণী নৌকা খানি কান্ডারী দয়াল নিতাই।।
    হরিনামের তহরণীবোঝাই প্রেম পরশ মণি,
    ভক্তি রতন থরে থরে রূপের ছৈ খানি;
    তাতে শ্রদ্ধা করেড়লে পরেপরে যেতে বাধা নাই।।
    আমার হরি দয়াময়ঠেকে জীবের পারের দায়,
    কলির শেষে বঙ্গদেশে হয়েছে উদয়;
    মুখে বল্লে হরিনাইকো দেরীপার করে আপত্তি নাই।।
    বড় দয়াল অবতারহয় নাই হবে নারে আর,
    অনর্পিত নাম দিতেছে নিয়ে পাপের ভার
    ও সে বিনামূল্যে পার করে দেয় এমন দয়াল দেখি নাই।।
    যাহোক তিন যুগেরই পরঘাটের উঠে গিছে কর,
    হরিচাঁদ পাটনি এল অনেক দিনের পর;
    কত দুঃখী তাপী পার করে দেয়ভব পারের মাশুল নাই।।
    দয়াল মহানন্দ কয়পারে কে কে যাবি আয়,
    পুস্পবন্ত যোগ হয়েছেজীবের ভাগ্যোদয়,
    গোঁসাই গুরুচাঁদের দয়া বিনে অশ্বিনী তোর উপায় নাই।।
    (হরিবল বলরে)
    ২৭নং
    তাল-রাণেটী
    কি ধনে তুষিব গুরু দিবানিশি ভাবি হৃদয়;
    আমি তোমার ধন তোমাকে দিয়ে বসে আছি তোমার আশায়
    আমার বলতে নাইক হেন ধন (হারে) কি ধনে তুষিব গুরু তোমার ঐ চরণ
    তুমি আমার সর্ব্বস্ব ধনজীবন যৌবন দিলাম তোমায়।।
    এদেহের মালিক তুমি হওদিতে যে ধন বাকী থাকে সে ধন তুমি লও।।
    তোমার শীতল প্রেম সাগরে ডুবাও এই বাসনা করি সদায়।।
    এ ব্রক্ষ্মান্ডে আছে যত ধনসকল ধনের কর্ত্তা তুমি ব্রক্ষ্ম-সনাতন;
    তুমি বায়ু রূপে জীবের জীবনরক্ষাকর দীন দয়াময়।।
    অনন্ত মহিমা তোমারজীবে কি বুঝিতে পারে শিবের বুঝা ভার
    তুমি কখন সাকার হও নিরাকারআবক্ষ ব্রক্ষ্ম জ্যোতির্ম্ময়।।
    ২৮ নং
    তাল  গরখেমটা
    চিত্ত পত্র লিখে পাঠাও দেখি শ্রীগুরুর কাছে
    লিখ বিনয় পূর্বক, চির সেবক, গুরু ধন তোমারই কি প্রাণ বাঁচে।।
    নয়ন জলে বানায়ে কালী, মনপাখি পাখারূপ কলম করে লও তুলি
    লিখে পাঠাও মনের কালী, যাতে তোর অন্তরের কালী ঘুচে।।
    শ্রীপাদপদ্মে এই নিবেদন, কোন দিন যেন তলব চিঠি পাঠায় সে শমন;
    সেই চিঠি করিতে বারণ, গুরুধন তোমার বই আর কে আছে।।
    শ্রীচরণে এই প্রার্থনা, জন্ম মৃত্যু জরা ব্যাধি বিধির ঘটনা;
    অন্তরে মর এই বাসনা, যাতে সেই বিধির লিখন যায় মুছে।।
    যে দিন পদে শরণ লয়েছি, সেই দিন হতে এ জীবনে মঙ্গলে আছি;
    একবার দেখা পেলে প্রাণ বাঁচে, অধীনের নিবেদন পদে যাচে।।
    গোঁসাই তারকচাঁদের এই অভিলাষ, অশ্বিনী তোর মানব দেহ করব আমি খাস;
    এবার মন দিয়ে হগে গুরুর দাস, স্বামী মহানন্দ সহায় আছে
    ২৯ নং
    তাল  ঠুংরি
    অপরূপ এক মানুষ এল ভাই, এল ওড়াকান্দি
    বাকা নয়ন জোড়া ভুরু, হেরে দিবানিশি কাঁদি।।
    আজানুলম্বিত বাহু, তারে গ্রাস করেছে প্রেম রূপ রাহু, সঙ্গে ভক্তবহু;
    দেখলে স্থির থাকে না কেহ, তার নয়ন বানে বিন্দি।।
    দেখ তার রুপের চেহারা, কেউ বলে সই শচীর গোরা, কেউ কয় মাখন চোরা
    নব রসে তনু পোরা, বদন জিনি মদন ছাদি।।
    কি কব সেই রুপের কথা, দেখলে পতি ছাড়ে পতিব্রতা খেয়ে ধর্মের মাথা
    শ্রী চরণে নোয়ায় মাথা, তাঁরা ত্যাজিয়া বেদ-বিধি।।
    হেরিয়া তার মুখ শশী, যোগ ভুলে যায় যোগ ঋষি পদে লোটায় আসি।।
    বলে গোঁসাই রাখ দাসী, মোদের ছজন ভজন বাদী।।
    বলে গোঁসাই মহানন্দ, এবার ঘুচল জীবের চিত্ত সন্দ গেল সাধন দ্বন্দ্ব
    অশ্বিনী তুই অজ্ঞানান্ধ, গুরুর চরণে হও বন্দী।।
    ৩০ নং
    তাল  গরখেমটা
    সাধ করে এই ভবে এসে হলিরে মায়ার মুটে
    গুরুদত্ত পরমার্থ নিলরে তোর সব লুটে।।
    মায়াবিনী পাতল মায়া জাল, থেকরে সামাল,
    মায়াজালে বন্দি হলে ঘটবেরে জঞ্জাল
    যেন মাকড়ের জালে মক্ষী বন্দী পড়ে শেষে সংকটে।।
    যদি মায়াজাল এড়াতে চাও, করে জ্ঞানের অসী লও,
    গুরু পদে মন মজায়ে মহানন্দে রও
    শেষে যে ধন চাবি, সেই ধন পাবি, থাকবিরে প্রেমের হাটে।।
    হবে দেহে গুরু কৃপা বল, ছার মনের খল;
    হরির নাম পুঁটলি কর পথেরই সম্বল
    ঘাটের ঘাটমাঝি সে হবে রাজি পার করবে নিষ্কপটে।।
    যদি মন কাটবি মায়াডোর, প্রেমানন্দে হও বিভোর;
    শ্রী গুরুর পাদপদ্ম ফুলে হওরে ভ্রমর
    শেষে প্রেমের মধু পান করিবি, লাগবেরে বড় মিঠে।।
    দয়াল মহানন্দ কয়, শোনরে দুরাশয়,
    অশ্বিনী তোর মানব জনম বিফলেতে যায়
    এমন দুর্লভ জনম পেয়েছিলি, গেলি ভুতের বেগার খেটে

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.