শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ৯৬-১১৫ - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ৯৬-১১৫

    গান নংঃ ৯৬-১১৫


    রাগিনী-বিরহাসী
    ৯৬। তাল -ঠুংরী
    সাধু বৈলে দাও মোরে
    জানিনা সে তত্ত্ব, “কোথায়” কে বসত করে
    দেহ কোথায় স্থিতিসেই ভারতীবলে দাও সব দয়াকরে।।
    । কোথায় থাকে হর পার্ব্বতীগঙ্গাযমুনা সরস্বতী
    ভগবান কোন পদ্মে স্থিতিপুরুষ না প্রকৃতি আকারে।।
    । পৃথিবীর বসতি কোথায়দেহ স্থিতি কোন পদ্মে হয়
    (সাড়ে) চব্বিশ চন্দ্র কোথায় বা রয়,
    কোন বীজে এই দেহ ধরে।।
    । নীল পদ্মটি থাকে কোথায়জিহ্বায় কার বসিত আশ্রয়
    (বল) সেই বারতা সাধু আমায়শুনিবার বাঞ্ছা অন্তরে।।
    । দীনা বলে তত্তব গুণেআদিত্যের ঐ দয়াগুণে
    হরি গোসাইর শ্রী চরণেথাকব জন্ম জন্মান্তরে।।
     
    রাগিনী-বিরহাসী
    ৯৭। তাল-ঠুংরী
    আমি বলবো কিরে আর
    তত্ত্ব বিনে যায়না কখনমনেরি বিকার
    দেহ নবরত্ব না করলি যত্ন,অযত্নে ধন হারালি তোর।।
    । গঙ্গাযমুনাসরস্বতীআরও আছে হর পার্ব্বতী
    দ্বিদলে করেন বসতিত্রিবেণরি জল বয়ে নিরন্তর।।
    । ভগবান সে না হয় মানুষনা হয় প্রকৃতি বা পুরুষ।।
    আত্মা রূপে হৃদ পম্মে রয় বেহুশ
    কখন সাকার হয় নিরাকার।।
    । পৃথিবীর ঐ দ্বাদশ পদ্মেএ দেহ স্থিতি তার মধ্যে
    (সাড়ে) চব্বিশ চন্দ্র হস্ত পদেগন্ডস্থলবক্ষ ভ্রু পর।।
    । গুহ্যমূলে চর্তুদ্দলেস্থিতি হয় জীব মূলাদারে
    রাগবাদিনী জিহ্বা পরেবিরাজ করে সে অনিবার।।
    । আবেগ খায় আর আবেগ রান্ধেনাভিমূলেদশম দলপদ্মে
    হংস রূপে বিহার করেসে নীল পদ্ম ঐ সরবর।।
    । আদিত্য কয় তত্ত্ব ছাড়ামিলেনা সে অধর ধরা
    হরি গোসাইর করণ করাদীনা করগে এই কর্ম্ম সার।।
     
    সৃষ্টি তত্ত্ব
    রাগিনী-উরুশেন
    ৯৮। তাল-ঝাপ
    হরি প্রথম পূর্ন মূলাধার-
    তাহার উর্দ্ধবাগে কেউ নাই আর
    হরি হইতে সৃস্টি সবাকার
    ছিল পূর্বে অন্ধকারবিশ্ব স্থলা করা হে,
    ছিলেন জ্যোতির্ন্ময় রূপ নিরাকার
    । গোলক বীহারি হরিস্বীয় হেদ দু- ভাগ করি,
    হয় প্রকৃতি পুরুষ আকার
    দক্ষিণেতে পুরুষ বামে নারী হে-
    দোহে আনন্দিত হয় অপার।।
    । সৃষ্টি করিবার তরেবীর্য্যদান করিলে তারে,
    গর্ভে ধরে শত মন্বন্তর
    শেষে ডিম্বাকারে প্রসব করে হে
    হয় প্রকান্ড স্বত্ত্ব বর্ণ ধর।।
    । লজ্জান্বিতা হয়ে সতীজলে নিক্ষেপিলা অতি
    জলে ডিম্ব ফাটিল তৎপর
    হল বিরাট রূপীজগৎ ব্যাপী হে,
    থাকে বহুকাল জলশয্যা পর
    । শেষে রামকৃষ্ণগৌর লীলা করি,
    জন্মেন সফলা নগরীহলে যশবন্তেরি কুমার
    সাঙ্গ-পাঙ্গ সঙ্গে পরম রঙ্গে হে,
    নিলেন হরিচাঁদ রূপ অবতার।।
    । বলব কি আর পূর্বের ঘটনশুনরে দীনা অভাজন,
    সাকার ভজন-গুরুর চরণ সার
    হরি গোসাই বলেঅন্ধকারে হে,
    জীবে ঘুরে মরে নিরন্তর।।
     
    সৃষ্টি তত্ত্ব
    রাগিনী-উরুশেন
    ৯৯। তাল-ঝাপ
    প্রথম হরি পরম ব্রহ্ম জ্যোতির্ন্ময়,
    তিনির গোলকেতে স্থিতি হয়,
    তার অংশ রূপ বিরাট কলেবর
    হইল রামকৃষ্ণগৌরদারুব্রহ্ম হে
    লীলা ওড়াকান্দী চমৎকার।।
    । সত্য যুগে বিরাট রূপীছিলে তুমি -----
    লোম কুপে অনন্ত ভূবন যার
    বহুকাল অবস্থান রও ভাসমান হে,
    পরে সৃষ্টি করলে সৃষ্টিধর।।
    । পঞ্চভুতের দেহগড়েদিলে এই জীব সৃষ্টি করে,
    মায়ায় ভুলে নাম লয় না তোমার
    সে সব দুষ্কৃতি পরায়ণগণে হে,
    কর যুগে যুগে তাই উদ্ধার।।
    । প্রলয় কালে এই ভুত সবাই,
    তোমারই ত্রিগুনাত্মীকায়প্রকৃতিতে লীন হয়ে যায়
    পুনঃ সৃষ্টিকালেভুমন্ডলে হেতুমি সৃষ্টি কর সবাকার
    । ধর্ম সংস্থাপনের তরেরক্ষা হেতু সাধুদেরে,
    পুনঃ লীলা কর বারে বার
    দীনা বলে এবারকর উদ্ধার হে,
    আমি পাতকি জগৎ মাঝার।।
     
    তত্ত্বগীতি
    রাগিনী-খেবেন্ডা
    ১০০। তাল-বিষম একাতাল
    এমন প্রশ্ন কোথা পেলে ভাই
    তাহা বল তুমি মম ঠাঁই।।
    । বেড়াও দেশ বিদেশেমনের হরিশে,
    মানুষকে ঠকায়ে ফিরঐ প্রশ্নের রসে
    নাই তোর গুরুর প্রতিনিস্ঠা রতি,
    হরি নামের গন্ধ নাই।।
    । কাজের কাজে নাই মতিসদা কু-কর্মে গতি,
    জনম ভরি হলনা তোর গুরুতে আর্থী
    শুধু বাঘের মত ভঙ্গি অতি,
    ভিতরে ময়লা বোঝাই।।
    । ঐ সব প্রশ্ন ছেড়ে দেওমুখে হরি গুণ গাও,
    প্রেমের মদে মত্ত হয়ে মহানন্দে রও
    দেহের কপটতা সব খুলে দেও,
    প্রশ্নেতে সার বন্তু নাই।।
    । আদিত্য কয় অতি দুঃখেদীনা আছ কি সুখে
    কু-কথায় বিজ্ঞমানহইলিনাম তোর নাই মুখে
    হরি গোসাই বলে সময় গেলে,
    তরাইবে কোন গোসাই।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-জয় জিয়ালাই
    ১০১। তাল-কহরাবা
    শুন বলিরে মন-
    প্রণালীতে কুল পাবিনা কর যেয়ে সাধন
    ভাইরে এক পিতার সন্তান হয়েদ্বেষা-দ্বেষী কি কারণ।।
    । স্বরূপ প্রণালীজিজ্ঞাসিলিআশ্রয় পাত্রের কথা
    না জানিলি সাধন পথেরকোন জায়গায় মাথা
    আরও কয় শাখাকোন পরিবারএ সবে কি প্রয়োজন
    । ধরে সৎগুরু কল্প তরুরিপু কর বারণ
    অনায়াসে শান্তিপুরে করিবি গমন
    মিছে তর্ক দিলেকি ফল ফলে,
    লোককে ঠকাও অকারন।।
    । নানা কথা জিজ্ঞাসিয়েকি কাজ হবে বল,
    সাধন ভজন না করিলেযাবি রসাতল
    ভাইরে তর্ক ছাড়রাজি কর,
    আপন দেহের মালিক জন।।
    । ভাইরে তোর গুরুআমার গুরুএকই ভগবান,
    তবে আবার কেন করদ্বিতীয় গেয়ান
    গুরুর ভক্ত মহৎহও দন্ডবৎ
    দেখে তাদের বেশ ভুষণ।।
    । ভাব ভক্তিপ্রেম শক্তিসদা রেখ মন,
    হিংসা নিন্দা গুরু পদেসব করগে অর্পণ
    ভাইরে ভক্ত দেখলে ভক্তি করে,
    সেবা কর ভক্তের চরণ।।
    । হরি গোসাই বলে এবারগুরু কর সার,
    গুরু বিনে ত্রিভুবনেবন্ধু নাহি আর
    বোকা দীনারে তুই কৃপা সিন্ধুর,
    নাম করিসনে অস্মরণ।।
     
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১০২। তাল-গড়খেমটা
    সাধন করবি কি তুই মলে,
    ভজন করবি কি তুই মলে
    গুরু ধরার সময় হয়না,
    ওজর দেও কাজ আছে বলে।।
    । (ভাবছ) মন্ত্র যেদিন নিববন্ধু বান্ধব খাওয়াইব,
    যোগাড় যন্ত্র বহুত লবনাম নিব বাড়ী গুরু এলে
    তোর ওজর যায় নাসময় হয়নাএই ভাবে দিন চলে
    আজ নিবি কাল নিবি মন্ত্র,
    আশায় আশায় দিন খুয়ালে।।
    । আয়ু যদি ঘাষ বৎসর হয়,
    ওজরে সেই দিন কেটে যায়,
    কাছে আসে অন্তিম সময়মনে কয় গুরু কোথা মিলে
    নাম না নিলেমকি করিলেমবয়সের সময় কালে,
    এমন সুধা থুইয়ে গরল খেলেমজনম গেল মায়ার ছলে।।
    । (যেমন) গরু অমর ঔষধ চিনেআগে সে ভাবে মনে
    খাব ঔষধ মৃত্যু দিনেআশায় তাই রাখে খাব বলে
    জিহ্বা লেহায় মরণ সময়কোথায় ঔষধ রলে,
    তখন হায় হায় করেযায় সে মরে,
    ঔষধ পায়না কোন কালে।।
    । আয়ু হেতার ঠিক দেওয়াসেই দিনে হবে যাওয়া,
    গুরু কেন না ধরিয়াকু-কর্ম্মে মজ রসাতলে
    হবেনা তোর সাধন করাগণার দিন ফুরালে,
    যদি গণার দিনের একদিন কমে
    সেই দিন পাবি কোথা গেলে
    । আদিত্য বলে এবারগুরুর চরণ কর সার,
    এসব অনিত্য সংসারমিছে কেন মর আমার বলে
    বোকা দীনবন্ধু গুরু ছাড়া রলি দস্যুর দলে,
    তোর দস্যু আত্মা ঠেলে দে রে,
    হরি গোসাইর চরণ তলে।।
     
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১০৩। তাল-গড়খেম্টা
    প্রেমিক গুরু ধর চিনেপ্রেমিক গুরু ধর চিনে
    অপ্রেমিকের সঙ্গ নিলে সাধন হয় না কোন দিনে।।
    । শাস্ত্রশ্লোক বক্তা হলেবক বক করে সদা চলে
    তারে গুরু করতে হলেঅধর ধরা শক্তি মিলবে কেনে
    তার বক বকি সারভিতর উসারসারবস্তু না চিনে
    ও তার ঠিক নাইরে দিলনষ্ট হয় বিলকানা বকের আগমনে।।
    । অধর ধরেছে যেই জনবক বকি নাই তার কখন,
    ছয় রিপু করিয়ে দমনপ্রেমে সে মগন রাত্রি দিনে
    পাগল ধারা মাতোয়ারাধারা বয় নয়নে,
    তিনি প্রেম কান্থা করিয়ে ধারণনাম জপে সে মনে প্রাণে।।
    । প্রেমিকের এই নশানাসৎমতিসংকল্পনা,
    তরায় দিয়ে উপাসনাযাহাতে উদ্ধার হয় জীবগণে
    অধর চাঁদকে যে ধরেছেধরগে সেই জনে,
    তবে অধর মানুষ পাবি ধরাঐ মানুষের দয়া গুণে।।
    । আদিত্য বলে দুঃখেভুলিসনে বক বকির বকে,
    সদগুরু ধর সুখেউদ্ধার হবি তার পরশনে
    ওরে দীনা মুর্খ পিতৃধন সূক্ষ্ম পতন দিনে দিনে,
    প্রেমিক হরি গোসাইর স্বভাব নিয়ে,
    হুসের ঘরে থাক চেতনে।।
     
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১০৪। তাল-গড়খেম্টা
    গুরু জেনে কেন ধরনা,
    গুরু চিনে কেন ধরনা
    মন গুরু হয় সর্বশ্রেষ্ঠ পরের কথায় ভুলিও না
    । কেহ করে এই প্রবঞ্চমাতা পিতার গুরু বংশ,
    নাম না নিলে হরি ধ্বংশগুরুত্যাগী কেউ তোকে ছোবেনা
    ঐ কথা ভাই বাজে কথাতাতে মন দিও না
    কুল গুরু না ধরিলেকখন গুরু ত্যাগী হয় না।।
    । কুল গুরু বংশ ধরেবোবা পাগল হলে পরে,
    তবে নাকি গুরু করেকেমনে শিখিবি সাধনা
    নিজে না জানিলেধর্ম্ম শিকাতে পারেনা,
    এমত সিদ্ধান্তগীতায়ভাগবতে আছে নিশানা।।
    । যার কাছে চলে যায় মনগুরু করে পুজ চরণ
    তাঁরে ভুলিও না কখনজ্ঞান কর পূর্ণ কেলে সোনা,
    ভাব ভক্তি ধনপ্রেমিক যে জনগুরু হয় সেই জনা,
    প্রেমিক গুরু ধরকরণ ধরহরিনাম সদা জপনা।।
    । কলিতে নাই দীক্ষা শিক্ষাভুলে যাও অন্য সব কল্পনা,
    হরে নাম কেবলম্ কলৌ নাস্তব্য অন্যথা,
    মনের ঘুচাও ময়লামন দুদিলা কুটিনাটি কু-ভাবনা।।
    । বলব কি ভ্রান্ত নরগণেদীক্ষা নেয় না ব্রাহ্মণ বিনে,
    যজ্ঞসূত না দেখলে নয়নেকঠিন দেহে ভক্তি জম্মেনা
    আদিত্য কয় ব্রাহ্মণ যে হয়ব্রহ্ম থাকে জানা,
    হরি গোসাইর বাণীঅক্ষয় জানিদীনবন্ধু ছাড়িও না।।
     
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ১০৫। তাল-খেম্টা
    চিনিয়ে সদ গুরু কে ধর
    উচ্চ কুলের গুরু ধরলে কেমনে হবি পার
    তারা জাতির গৌরব নিয়ে চলে
    চায় না শিস্য তরাবার।।
    । গুরুর কাছে উচ্চ নীচভিন্ন জাতি নাই,
    (যেমন) সর্ব্বজীবকে সমজ্ঞানেনাম দিয়ে করবেন উদ্ধার।।
    । গুরু শিষ্য একই আত্মাপিতা পুত্রের ভাব,
    তার বিতরে দেখরে ভাই দ্বিথীয় স্বভাব
    তারা নীচ বলে ঘৃণার ছলেছোঁয়না ভারি অহঙ্কার।।
    । ও দুষ্ট মন তোরে কই গুণব্রাহ্মণ বল কাকে
    ব্রহ্ম জানাইতে ব্রাহ্মণ শাস্ত্রনে দেখে
    কেবল দ্বিজ দেখলে ভক্তির উদয়,
    ভক্তি নাই অন্য জাতির উপর।।
    । আদিত্য কয় বলি তোমায় শুনে নাও এবার,
    দিনে দিনে সাধন বিনে দিন হতেছে পার
    হরি গোসাইর বচনদীনা দুর্জ্জন,
    জানিয়ে সদ্ গুরু ধর।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১০৬। তাল-গড়খেম্টা
    এবার বেদ বিধি দাও ছেড়ে,
    এবার বেদ বিধি দাও ছেড়ে
    ও তুই বেদ বিধি জড়িয়ে রলিহরি পাবি কেমন করে।।
    । দেখ বেদ বিধির উপরহরিধন রয় নিরন্তর,
    হও যদি বেদ বিধি পারতাহলে পারিবে তাহারে
    ময়লা বাঁধে মনেবেদ বিধানে ময়লা নাহি ছাড়ে,
    যদি হরি পেতে আশা কররাগের ঘরে থাক মরে।।
    । যেমন ঐ সমুদ্রেতেএনে বালু তুফানেতে,
    নিদারুন চর ফেলে তাতেতেম্নিরূপ বেদ বিধিতে করে
    (লোকের)মনের ভ্রান্তবেদবিধান্ত মতে কার্য্য করে,
    ঐ বেদের বিধান না না হইলে মনের ময়লা যায় না দুরে।।
    । দেহ গুরুকে দিয়ে খাস প্রজা থাক হয়ে,
    খাসমহলে নাম লেখাইয়েথাক সেই খাস মালিকের ঘরে
    এবার হরি নামের মাজন সদারেখ অন্তপুরে,
    কাটবে দেহের ময়লামন দোদিলাকোটি জন্ম জন্মান্তরে।।
    । ডেকে বলে আদত্যহইল বেদ বিধি যত,
    তাতে নাই রে সার পদার্থহরি নামে সর্ব্ব পাপ হরে
    হরি গোসাই বলেগয়া গেলেপিন্ডে কি পাপ যায় রে,
    ভেবে দেখ নাম সূক্ষদীনা মূর্খনামে কোটি কুল তরে।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ১০৭। তাল-খেমটা
    ক্রোধের বাধ্য থেক নারে ভাই
    ক্রোধে ঘটায় মহাপ্রলয়মান্য গণ্য নাই
    ভাইরে ববে এসে ক্রোধের বশে,
    নিয়ে রলি সব বালাই।।
    । ক্রোধ অর্থাৎ রাগ বলেবিপদ সে ঘটায়,
    আত্ম-হত্যানরহত্যা ক্রোধ দ্বারা হয়
    (সোনার) রাজ্য পুড়েশ্নশান করে,
    স্ব চক্ষেতে দেখতে পাই।।
    । কারাগার বাস অর্থ বিনাশগুরু ভক্তি নাশ
    এই সব ব্যাপার হল তাহারক্রোধী ব্যক্তির যশ
    আছে এম্নি রীতিক্রোধী ব্যক্তি,
    তাদের শত্রুর অভাব নাই।।
    । ক্রোধ উত্থাপন হইলেসদজ্ঞান থাকেনা;
    আপনকে পর করতে পারেএই তার নিশানা
    তিনি আপনি আপনার শত্রুশত্রু হয় তার আপন ভাই ।।
    । আদিত্যের আশক্রোধেরই বশদীনা হয়োনা;
    সতত সাবধানে থেকভুলে যেয়ো না
    হরি গোসাইর বচনক্রোধ দুর্জ্জনভক্তির দেশে দিও ঠাঁই।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ১০৮। তাল-খেমটা
    জগৎকে প্রেম কর এবার
    না করলে প্রেম কোন জনমকুল পাবেনা আর
    ভাইরে নিজকে যেমন ভালবাসতেমনি ভাল বাস পর।।
    । হিন্দু খৃষ্টানআর মুসলামানব্রাহ্মণ প্রভৃতি,
    (ধর্ম্ম) অবলম্বি বর্ণ হিংসা করনা অতি
    ভাইরে লোক দেখে তায়জাতির নির্ণয়,
    করার সাধ্য নাই তাহার।।
    । (কোন) মুচিকে দেখে ব্রাহ্মণ অনুমান করা হয়,
    (আবার) ব্রাহ্মণ দেখে নিকৃষ্ট জাতি অনুমান হয়
    যখন পরিচয় হয় হেন সময়অবিশ্বাস হয় তার উপর।।
    । যে মুচিকে দ্বিজ ভ্রম হইয়াছিল,
    তখনে তার প্রতি ঘৃণা আপনি আসিল
    যাকে অপছন্দ হয়ে ছিলদ্বিজ শুনে ভক্তি অপার।।
    । এই ভ্রান্তি দুর কর গিয়েওরে পাষাণ মন,
    সর্ব্ব জীবে সম জ্ঞানরেখ সর্ব্বক্ষণ
    তবে জগৎকে প্রেম করা হবেগুরুবৈ জানবি না আর।।
    । সর্ব্ব জীব ইশ্বরের সন্তানএক ভাই সবাকার,
    শান্ত্রে   পাওয়া যায় সিদ্ধান্তব্যাক্ত চরাচর
    ভাইরে এক ভিন্ন দ্বিতীয় নাস্তিজ্ঞান করিও অনিবার।।
    । উচ্চ বাচ্য জাতিভেদকরিও না ভাই,
    জাতিভেদ মহাপাপ বলেপ্রমানেতে পাই
    শুধু একই পিতার সন্তান হয়ে,
    ভাই ভাই বিরোধের সঞ্চার।।
    । জাতি হিংসায় এ দুনিয়ায় গেল রসাতল,
    ছেড়ে দেও সবহিংসা গৌরবমনেরি গরল
    করে জগৎকে প্রেমদীনা অধম,
    আগম নিগম সাধন কর।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-লম্পট
    ১০৯। তাল-খেম্টা
    হেরিয়ে মানুষের যত কর্ম্ম কারখানা
    এ সে ঘোর কলিতে দুষ্কর্ম্মেতেকত পায় দুঃখ যাতনা।।
    । মাতা পিতার গুণে পুত্রেরশান্তি অশান্তি,
    স্বাস্থ্য চেহারা কিম্বাশরীরের কান্তি
    কারও অতুল সম্পদকেহর যায় বাদ,
    কারু জনম ভরি দেনা।।
    । হলে মাতা পিতা অশিক্ষিতনিজ সন্তানেরে,
    ক্রোধতরে অভিমাপ দেয়সামান্যের তরে
    তাতে ব্যধি যুক্তমেয়ে পুত্রদুঃখ যাতনা ঘুচেনা।।
    । ভাগ্যক্রমে পুত্রের ঘরেযদি সন্তান হয়,
    কর্ম্ম অক্ষম করে দুষ্কামব্যাধিগ্রস্ত রয়
    পেয়ে খেতে কষ্টঅসন্তুষ্টহরিনাম মুখে আসে না।।
    । এই ভাবে তার পূর্ব্ব পুরুষহীন হইয়ে রয়,
    (শাপে) অর্থের অভাবকু স্বভাব,
    আর ব্যাধি নাহি যায়
    করে কম্ম মন্দ অসৎ সঙ্গদিবা নিশি কুভাবনা।।
    । সুশিক্ষিত অতি জ্ঞানীমাতা পিতা হলে,
    অভিশাপ দেয় না কখনেবহুকষ্ট পেলে
    তারা ভাবে মনেক্ষুদ্র জ্ঞানেবলে মন্দ রাগ হব না।।
    । (আদিত্য) বলে রিপুর ছলেজ্ঞান হারাইও না,
    হরি গোসাইর রণ নিয়ে কর সাধনা
    বোকা দীনবন্ধু সাধন বন্ধুগুমানে হারাইওনা।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-উল্টাকেশী
    ১১০। তাল-গড় খেম্টা
    কি গান গাব কেবা শুনে
    কি গান গাব কেবা শুনে
    লোকে কু-কর্ম কু-কথা নিয়েমত্ত থাকে রাত্রিদিনে।।
    । কেহ গুরুর বাক্য ধরেসদ্ভাবেতে থাকলে পরে,
    নিন্দুকে তার নিন্দা করেথাকে আর কলঙ্কের সন্ধানে
    অন্তরেতে ঐ ভাবনা থাকে সর্ব্বক্ষণে,
    তাদের নাই মন সুহ্ম দেহ রুক্ষসদা ভন্ডামি রয় মনে
    । সাধুর বেশ ভুষণ দেখিলে,
    নিন্দুক যায় তার নিন্দার ছলে,
    সাধুর সঙ্গে কথা বলেপূর্ণ অহঙ্কার নিয়ে প্রাণে
    বলে কটু বাক্যে সে অকথ্য ঐ দুষ্ট বেইমানে,
    এই ভাবে দস্যুত্ব করেঘুরে বেড়ায় গায়ের গুমানে।।
    । মন ভাঙ্গায়ে সাধুজনারপাঠায়ে দেয় কুমতির ঘর,
    সাঁতারিয়ে অকূল পাথারমারা যায় নিদারুন তুফানে
    তাহার সাধন ভজন হয়না কখনদুষ্ট কলির টানে,
    শেষে সারা জীবনযায় অকারনগুরুর করণ সাধন বিনে।।
    । আদিত্য কয় বলি তোরেদিন খুয়ালি জুলুম করে,
    যাবি যেদিন যমের ঘরেকি জবাব দিবি তারি সনে
    তখন কোথা রবে হিংসা গৌরব শমনের শাসনে,
    হরি গোসাই বলেগৌরব ফেলেদীনা ঐ নাম বল বদনে।।
     
    লোক শিক্ষা
    ১১১। তাল গড় খেমটা
    কোন প্রশ্নয়ালা গানে শুধু লোক মজায়েছ
    তোর ভাবপ্রেমসঙ্গে নাই সম্বন্ধ,
    কেবল দর্পে কাল কাটায়েছ।।
    । লোক ঠকাতে প্রশ্নের গান শুনাও,
    দুষ্ট মুখে পরম সুখেসুনাম নিয়ে যাও
    মন খোলসা নওগরল ধরে খাও,
    প্রশ্নে গান সব গেয়ে গেয়ে,
    আমার মন জহুরী চেতায়েছ।।
    । ভাব দেখায়ে রঙ্গের মোসন দেও,
    বাঘের সম গর্জ্জন মেরেদুই চক্ষু পাকাও
    দেহে সরলতা নওময়লা ভরে লও,
    যত সতের প্রাণে কষ্ট দিতে
    সেই হেতু ভবে জন্ম নিয়েছ।।
    । লোক ভুলাতে ভাবেরই গান গাও,
    গুরুর করণ সাধন ভজনসে পথে না যাও
    ও তোর শুষ্ক কাষ্ঠের নাওমাঝে মাঝে বাও,
    যদি শমন ঘোলায়ডুবায় সে নাও
    এড়াতে সন্ধান কি তার করেছ।।
    । হরি গোসাই বলে হুসিয়ারী,
    সরল রাস্তায় না হাঁটিলেকষ্ট হয় ভারী
    (নইলে) কেন মিলবে সেই শ্রীহরি,
    দীনা তুই ভজনে বাদ পড়েছ।।
     
    লোক শিক্ষা
    ১১২। তাল-একতালা
    হয় না কথায় কাবু মাষ্টার বাবুমবিদ্যার গৌরবে
    বিদ্যা কামাই করে তর্ক ভরেলোক ঠকায় হিংসা রবে।।
    । কেবল তর্কেরি বাহারমান্য নাই গুরু জনার,
    বলে যথা কুৎসিত কথামাতা-পিতার পর
    হইল বুড়া বুড়ি দোষী ভারীস্ত্রীর মান্য রয় ভবে।।
    । অষ্ট শক্তি মাতা-পিতারদেহ গঠন তাতে সবার,
    বিদ্যার জোরে মা বাবারেবলে কটুত্তর
    দিয়ে প্রাণে কষ্টশাপ ভ্রষ্টহয় পূর্ব্বাপুরুষ সবে।।
    । বাবুর গলে মালা নাইশুধু লুঙ্গি পরা চাই,
    ধর্ম্ম পূণ্য হইল শূন্যমান্য গন্য নাই
    হরি ভক্তের পায়মাথা না নোয়ায়,
    ভাব ভক্তি প্রেম অভাবে।।
    । মাষ্টার কথায় কাতর নয়হরি ভক্ত দেখলে তায়
    তর্ক ভরে জব্দ করেকু নিরে ডুবায়
    ডুবে সাধু জনা সাধন বিনাভব কূপ বৌরবে
    । দীনবন্ধুর এই বাণীপাপের ভার সয়না মেদিনী
    পাপের ভরে বসুন্ধরেশস্যের হয় হানি
    এখন খেতে কষ্টব্যাধি গ্রস্থহয়ে থাকে এই ভাবে
     
    লোকশিক্ষা
    রাগিনী-জয় জিয়ালই
    ১১৩। তাল-কাহারবা
    কর্ম্মে করিস নারে ভুল
    ঐ দেখ সব চেয়ে কর্ম্ম শ্রেষ্ঠ কর্ম্ম সর্বমুল
    যদি করলে কর্ম্ম মিলে ধর্ম্মকর্ম্ম বিনেনাইরে কুল।।
    । কর্ম্ম বলে সকল ফলেস্বর্গ কি নরক,
    কর্ম্মে হয় অসাধ্য ব্যাধিনিতান্ত দুভোগ
    কেহ কর্ম্ম গুনে যায় গোলকে,
    কর্ম্মে পায় অকূলের কূল।।
    । রাজা অন্বরিসের ছেলেরদশ বৎসর আয়ূ ছিল
    কর্ম্ম গুণে অযুত বৎসরআয়ূ সে পেল
    গেল যম দন্ড কর্ম্ম বন্ধনআনন্দ হৃদয় আকুল।।
    । (ঐ দেখ) মুনি ছিল বিশ্বামিত্রগাধির নন্দন,
    মেনকার সঙ্গে তাঁহারহইল মিলন
    তাইতে জন্মে কন্যঅ শকুন্তলাকুরু পান্ডবের আদিমুল।।
    । এই মত দেখ চেয়েকর্ম্মেরি বিহন,
    (অধম) দীনবন্ধু পড়ে রলনা হল সাধন
    দয়াল হরি গোসাইউপায় কি তাই,
    পেলেম না চরণের ধূলা।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-কেলেংড়া
    ১১৪। তাল ঠুংরী
    হরি বল মন দূরে যাবে কাল শমন
    জীবের পরম ধন এল বহু যুগ পর
    ঐ দেখ হরি বিনেকলির জীবেরগতি নাইরে আর।।
    । সত্য ত্রেতা দ্বাপরেরতেএ নাম ছিল গোপনেতে,
    জীবের পরম ভাগ্যেতেকরিল প্রচার
    মনে প্রানে ঐক্য করেএনাম নেরে বদন ভরে,
    অনায়াসে যাবি তরেশঙ্কা নাইরে আর।।
    । ছেড়ে দে তাসপাশাদাবাতন্ত্র-মন্ত্র কর জপা,
    কলিতে হরিনাম জপাঅন্য কথা নাই
    । হরি মানব কুলে আসিয়ে যশবস্তু সূত হয়ে,
    জন্ম নিল সফলা ডাঙায়
    গোসাই রাম কান্তের বরেঅন্নপূর্ণা মাতার ঘরে,
    এল পূর্ণ শক্তি ধরেকরতে জীব উদ্ধার।।
    । ভেবে হরি গোসাই কয়হরি এল এ ধরায়
    হরির তরী ধর রে সবাই
    শুনরে বোকা দীনবন্ধুডাকলি না অনাথের বন্ধু,
    কেমন করে ভবসিন্ধুহয়ে যাবি পার।।
     
    লোক শিক্ষা
    রাগিনী-ঝাঝিট
    ১১৫। তাল-কাওয়ালি
    হরি জীবের জন্য অবতীর্ণ সফলা গ্রামে আসিয়া
    তিনি অনর্পিত ধন করে বিতরণআপনি হরি যাচিয়া।।
    । মায়ের কড়ার শুধিবে বলে,
    বুদ্ধ তপস্যারি ফলেএল নিচু হইয়া
    কারু জাতির গৌরব রবে নারেযারে একচাবি হইয়া।।
    । গৌরলীলা সাঙ্গ করি,
    শ্রীনিবাস রূপ ধরিগোপন লীলা করিয়া
    করে শেষ লীলা ঐ ঈশান কোনেপূর্ণ শক্তি ধরিয়া।।
    । পতিত পান নামটি ধরি এল উড়িয়া নগরী,
    পতিতের লাগিয়া
    হবে পতিতি আবাদ ছাড় বিবাদ,
    লও হরি বল মাত মাতিয়া।।
    । হরি গোসাইর এই সুবচন,
    দীবন্ধু এই পরম ধনদিসনারে তুই চাড়িয়া
    এবার দিন থাকিতে শ্রীহরির নামনেওনা বদন ভরিয়া।।

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.