শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য


    মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য



    পর্ব- ১


    ভাগবতের আলোকে কোয়ান্টাম থিওরী (Quantum Theory) ভাগবতে মহাবিশ্বের যে পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা প্রদান করিয়াছে কোয়ান্টাম তত্ত্ব সেটার অংশ বিশেষ । ভাগবতের আলোকে কোয়ান্টাম তত্ত্ব এখানে আলোচনা করা হল । পরমাণুর সংজ্ঞা - চরমঃ সদ্বিশেষাণামনেকোহসংযুতঃ সদা । পরমাণুঃ স বিজ্ঞেয়ো নৃণামৈক্যভ্রমো যতঃ ।। (ভাগবত ৩/১১/১) অনুবাদ - জড় জগতের যে ক্ষুদ্রতম অংশ অবিভাজ্য এবং দেহরূপে যাহার গঠন হয় না, তাহাকে বলা হয় পরমাণু । তাহা সর্বদা তাহার অদৃশ্য অস্তিত্ব নিয়ে বিদ্যমান থাকে, এমনকি প্রলয়ের পরেও । জড় দেহ এই প্রকার পরমাণুর

    সমণ্বয়, কিন্তু সাধারন মানুষের সেই সম্বন্ধে ভ্রান্ত ধারনা রয়েছে । এই শ্লোকে পরমাণুর সংজ্ঞা প্রদান করা হইয়াছে । এ বিষয়ে আমরা পরবর্তী পোষ্টে আলোচনা করব ।মহাবিশ্ব পরমাণু দ্বারা গঠিত - সত এব পদার্থস্য স্বরূপাবস্থিতস্য যৎ । কৈবল্যং পরমমহানবিশেষো নিরন্তর ।।(ভাগবত ৩/১১/২) অনুবাদ - পরমাণু হইতেছে ব্যক্ত জগতের চরম অবস্থা । যখন তাহারা বিভিন্ন প্রকারের শরীর নির্মাণ না করিয়া তাহাদের স্বরূপে স্থিত থাকে, তখন তাহাদের বলা হয় পরম মহৎ ।ভৌতিক রূপে নিশ্চয়ই অনেক প্রকারের শরীর রহিয়াছে, কিন্তু পরমাণুর দ্বারা সমগ্র জগৎ সৃষ্টি হয় । এই শ্লোকে বর্ণনা করা হইয়াছে, পরমাণু দ্বারা জগত গঠিত যাহা কোয়ান্টাম তত্ত্বে বলা হইয়াছে । ভগবান পরমাণু থেকে বিশাল ব্রহ্মান্ড সব জায়গায় বিরাজিত - পরমাণুপরমমহতো-সত্বমাদ্যন্তান্তরবর্তী ত্রয়বিধুরঃ ।আদাবন্তেহপি চ সত্ত্বানাং যদ্ ধ্রুবং তদেবান্তরালেহপি।।(ভাগবত ৬/১৬/৩৬) অনুবাদ - এই জগতে পরমাণু থেকে শুরু করিয়া বিশাল ব্রহ্মান্ড এবং মহত্তত্ত্ব পর্যন্ত সব কিছুরই আদি, মধ্য এবং অন্তে আপনি বর্তমান রহিয়াছেন । অথচ আপনি আদি, মধ্য এবং অন্ত রহিত সনাতন । এই তিনটি অবস্থাতেই আপনার অবস্থা উপলব্ধি করা যায় বলিয়া আপনি নিত্য । যখন জগতের অস্তিত্ব থাকে না, তখন আপনি আদি শক্তিরূপে বিদ্যমান থাকেন । এই শ্লোকে বর্ণনা করা হইয়াছে প্রলয়ের সময় পরমাণু ধ্বংস হইয়া শক্তিতে পরিণত হয়, আবার যখন সৃষ্টি শুরু হয় তখন শক্তি থেকে পরমাণু সৃষ্টি হয় । পরবর্তী পোষ্টে আমি আলোচনা করব সৃষ্টির শুরুতে গর্ভোদক নামক শক্তি থেকে সবকিছু সৃষ্টি হয় ।কোয়ান্টাম তত্ত্বে বর্ণনা করা হইয়াছে শক্তি হইতে পরমাণু সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু শক্তি আসল কোথা থেকে ? এই প্রশ্নের উত্তরে বিজ্ঞানীরা বলেছেন এই মহাবিশ্বে সর্বমোট শক্তির পরিমাণ ০ (শূন্য) , এই প্রশ্নের সাথে এই উত্তরের কি সামঞ্জস্য তা আমি উপলব্ধি করতে পারছি না । আমাদের প্রশ্ন শক্তি আসল কোথা থেকে ? তার উত্তরে বলল, মহাবিশ্বের সর্বমোট শক্তির পরিমাণ শূন্য । কিভাবে এই সমস্যার সমাধান হল তা আমি উপলব্ধি করতে পারছি না । শক্তি কোথা হইতে আসিল- শাস্ত্রে তা এভাবে প্রদান করিয়াছে একোহপ্যসৌ রচয়িতুং জগদন্ডকোটিং যচ্ছক্তিরস্তি জগদন্ডচয়া যদন্তঃ অন্ডান্তরস্থপরমাণুচয়ান্তরস্থং গোবিন্দমাদি পুরুষং তমহং ভজামি ।। (ব্রহ্ম সংহিতায় ৫/৩৫) অনুবাদ – আমি পরমেশ্বর ভগবান গোবিন্দের ভজনা করি, যিনি তাঁহার এক অংশের দ্বারা প্রতিটি ব্রহ্মান্ড এবং প্রতিটি পরমাণুতে প্রবিষ্ট হইয়াছেন, এইভাবে তিনি সমগ্র সৃষ্টিতে তাঁহার অনন্ত শক্তির প্রকাশ করিয়াছেন । এই শ্লোকে বর্ণনা করা হইয়াছে ভগবানের শক্তি পরমাণুতে প্রবেশ করিবার ফলে সৃষ্টি কার্যক্রম শুরু হয় অর্থাৎ পরমাণু ভগবানের শক্তি থেকে সৃষ্টি হয় । শক্তি আসিল কোথা থেকে তার উত্তর শাস্ত্রে বলা হয়েছে, শক্তি ভগবান থেকে এসেছে । পরে আমি ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি পর্বে আলোচনা করব এই মহাবিশ্ব প্রধান নামক একটি চিন্ময় বা বিপরীত পদার্থ থেকে সৃষ্টি হয়েছে । সুতরাং বলা যায় পরমাণু চিন্ময় বা বিপরীত পদার্থ থেকে সৃষ্টি হয়েছে যা বিজ্ঞানীদের ধারণা । সুতরাং বলা যায় বৈজ্ঞানিকেরা যে অসম্পূর্ণ কণাবাদী তত্ত্ব (Quantum Theory) আবিষ্কার করেছেন ভাগবত সেটাকে আরো পূর্ণাঙ্গভাবে প্রকাশ করিয়াছে ।



    পর্ব- ২

    বৈদিক মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য (The Vedic Concept of Creation of the whole Universe) মহাবিশ্ব আসিয়াছে কোথা থেকে এবং যাচ্ছে বা কোথায় ? মহাবিশ্বের কি কোন শুরু ছিল ? যদি থাকিয়া থাকে তবে তাহার আগে কি ঘটেছিল ? কালের চরিত্র কি ? কাল কি কখনও শেষ হবে ? আমি কে ? কোথা হইতে আসিয়াছি ? কোথায় যাব ? আমি এরূপ প্রশ্ন করিতেছি কেন ? এ সকল মানুষের শাশ্বত প্রশ্ন এর সঠিক উত্তর জানবার জন্য বিজ্ঞানীরা বহুদিন যাবৎ গবেষণা করিতেছে । এসব বিষয় নিয়ে অসংখ্য বিজ্ঞানী গবেষণা করিয়াছেন এবং এখনো করছে । তাহারা ইতিমধ্যে মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য বিষয়ে অনেক তত্ত্ব, মতবাদ, হাইপোথিসিস, সূত্র আবিষ্কার করেছেন । বিজ্ঞানীদের অনেক আবিষ্কার আছে পরস্পর বিরোধী একটির সাথে অন্যটির মিল নেই । মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য বিষয়ে যে সকল মতবাদ বিজ্ঞানীরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করিতেছে সেইগুলি নিম্নে প্রকাশ করা হইল । ১) আইনষ্টাইনের ব্যাপক আপেক্ষিক তত্ত্ব (Einstein’s Law of Relativity) 
    ২) বিগব্যাঙ্গ থিওরী (Big Bang Theory) 
    ৩) বিগ ক্রাঞ্চ (Big Crunch Theory) 
    ৪) বুদবুদ তত্ত্ব (Bubbles Theory) 
    ৫) কণাবাদীতত্ত্ব (Quantum Theory)
    ৬) মানবতত্ত্ব নীতি (Anthropic Principle) 
    ক) দুর্বল মানবতত্ত্ব নীতি (Weak Anthropic Principle) 
    খ) সবল মানবতত্ত্ব নীতি (Strong Anthropic Principle) 
    এই নীতিগুলি সম্বন্ধে ভাগবতে বিস্তারিত আলোচনা করা হইয়াছে । 
    দেখা গিয়াছে বেশিরভাগ নীতির মধ্যে সামঞ্জস্য নাই । আজ বিজ্ঞানী সমাজের সামনে একটি চ্যালেঞ্জ, মহাবিশ্ব সম্বন্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ সম্পূর্ণ তত্ত্ব আবিষ্কার করা এবং আমরা যে বিশ্বে বসবাস করি তাহার একটি সম্পূর্ণ বিবরণ দেওয়া । নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিজ্ঞানী স্টিফেন ডব্লূ হকিং তাঁহার A Brief History of Time (কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস) বইটিতে আবেদন করেছেন ভবিষ্যতে হয়ত আমাদের চেয়ে বুদ্ধিমান মানুষের আগমন ঘটবে যারা মহাবিশ্ব সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রদান করতে পারবে । আমার মতে ভাগবত (বৈদিক শাস্ত্র) মানুষের সেই আদিম ইচ্ছাকে পূরণ করিতে পারবে । ভাগবতে বিশ্বব্রহ্মান্ড বা মহাবিশ্বের গঠন সম্বন্ধে অত্যন্ত পূর্ণাঙ্গ ও গঠনমূলক বর্ণনা করেছে যদি সেইসব বর্ণনা পূর্ণাঙ্গভাবে উল্লেখ করা হয় তা হলে একটি বৃহৎ গ্রন্থে রূপ নিবে সেইজন্য অত্যন্ত সংক্ষেপে কিছু উল্লেখ করা হল যারা বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টি রহস্য পূর্ণাঙ্গভাবে জানতে চান তাদেরকে ভাগবত পড়িতে হবে । ভাগবতের আলোকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি রহস্য উপলব্ধি করতে হলে আমাদের কয়েকটি বিষয় সম্বন্ধে ধারণা নিতে হইবে । জড় জগত (Material World) আমরা যে জগতে বাস করি তাকে জড় জগত বলে । এই জগত জড় অর্থাৎ প্রাণহীন, ইহার সৃষ্টি ও ধ্বংস আছে । এই সৃষ্টি ও ধ্বংস কার্যক্রম চক্রাকারে চলিতে থাকে অর্থাৎ প্রথমে সৃষ্টি হয় তারপর কিছুদিন অবস্থান করে, কিছুদিন পর আবার ধ্বংস হয় । সুতরাং জড় জগতের সৃষ্টি, অবস্থান এবং ধ্বংস শাশ্বত নিয়মে নির্দিষ্ট সময় পর পর ঘটিতেছে । এইভাবে বিচার করিলে দেখা যায়, জড় জগতের সৃষ্টি ও ধ্বংস শাশ্বত ইহার কোন শুরু বা শেষ নাই । জড় জগত পুণঃপুণঃ সৃষ্টি ও ধ্বংস হয় ---- সর্বভূতানি কৌন্তেয় প্রকৃতং যান্তি মামিকাম্ । কল্পক্ষয়ে পুনস্তানি কল্পানি কল্পাদৌ বিসৃজাম্যহম্ । প্রকৃতিং স্বামবষ্টভ্য বিসৃজামি পুনঃ পুনঃ ভূতগ্রামমিমং কৃৎস্নমবশং প্রকৃতের্বশাৎ ।। (ভাগবত ২/১০/৩) অনুবাদ কল্পান্তে সম্পূর্ণ সৃষ্টি, যথা জড় জগত এবং প্রকৃতিতে ক্লেশ প্রাপ্ত জীব আমার দিব্য দেহে লয় প্রাপ্ত হয় এবং নতুন কল্পের আরম্ভে আমার ইচ্ছার প্রভাবে তাহারা পুণরায় প্রকাশিত হয় । এ ভাবে প্রকৃতি আমার নিয়ন্ত্রনে পরিচালিত হয় । আমার ইচ্ছার প্রভাবে তাহা পুণঃপুণঃ প্রকট হয় এবং লয় হয় । স এষ আদ্যঃ পুরুষঃ কল্পে কল্পে সৃজত্যজঃ । আত্মাত্মন্যাত্মনাত্মানং স সংযচ্ছতি পাতি চ ।। (ভাগবত ২/৬/৩৯)অনুবাদ সেই আদিপুরুষ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মরহিত হওয়া সত্ত্বেও প্রথম অবতার মহাবিষ্ণু রূপে নিজেকে বিস্তার করিয়া এই ব্যক্ত জগতের সৃষ্টি করেন । তাঁহার মধ্যেই অবশ্য সৃষ্টি প্রকাশিত হয় এবং জড় পদার্থ ও জড় অভিব্যক্তি সবই তিনি স্বয়ং কিছুকালের জন্য তিনি তাহাদের পালন করেন এবং তারপর তিনি পুণরায় তাহাদের আত্মসাৎ করিয়া নেন । উপরের শ্লোক দুইটি থেকে বুঝা যায় জড়জগত পুণঃপুণঃ সৃষ্টি এবং ধ্বংস হচ্ছে । আমরা জড় জগতের একটি ব্রহ্মান্ডের মধ্যে অবস্থিত পৃথিবী নামক গ্রহে বসবাস করিতেছি । এরকম অনন্তকোটি ব্রহ্মান্ড নিয়া বিশ্ব ব্রহ্মান্ড গঠিত । ইহাকে জড়জগত বলে । ব্রহ্মান্ডের সংখ্যা -------- ক্ষিত্যাদিভিরেষকিলাবৃতঃ সপ্তভির্দশগুণোত তরৈরন্ডকোশঃ । যত্র পতত্যণুকল্পঃ সহস্রকোটিকোটিভি স্তদনন্তঃ ।। (ভাগবত ৬/১৬/৩৭) অনুবাদ প্রতিটি ব্রহ্মান্ড মাটি, জল, আগুন, বায়ু, আকাশ, মহতত্ত্ব এবং অহংকার এই সাতটি আবরণের দ্বারা আচ্ছাদিত এবং প্রতিটি আবরণ পূর্ববর্তী থেকে দশগুন অধিক । এই ব্রহ্মান্ডটি ছাড়া আরও কোটি কোটি ব্রহ্মান্ড রহিয়াছে এবং সেইগুলি আপনার মধ্যে পরমাণুর মতো পরিভ্রমণ করিতেছে । তাই আপনি অনন্ত নামে প্রসিদ্ধ । এই শ্লোকে বর্ণনা করা হইয়াছে ব্রহ্মান্ডের সংখ্যা কোটি কোটি । জড় জগত সম্বন্ধে আধুনিক বিজ্ঞানের ধারণা সঠিক । কারণ বিজ্ঞানে বলা হয়েছে কোটি কোটি গ্রহ নক্ষত্র লইয়া এই মহাবিশ্ব বা বিশ্বব্রহ্মান্ড গঠিত ।


    পর্ব- ৩




    ব্রহ্মান্ড কতগুলি গ্রহ, নক্ষত্র, সূর্য, চন্দ্র নিয়ে একটি ব্রহ্মান্ড গঠিত হয় ।যেমন – আমাদের সৌর পরিবারের সাথে আরো কিছু গ্রহ নক্ষত্র যোগ করিলে আমাদের ব্রহ্মান্ড গঠিত হয় ।ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে প্রত্যেকটি ব্রহ্মান্ডের একটি নির্দিষ্ট আয়তন এবং আবরণ রয়েছে।প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের ব্যাসের গভীরতা আলাদা আলাদা ।যেমন –আমাদের ব্রহ্মান্ডেরর ব্যাস শ্রীশুক উবাচ এতাবানেব ভূবলয়স্য সন্নিবেশঃ। প্রমাণলক্ষণতো ব্যাখ্যাতঃ॥(ভাগবত ৫/২১/১) অনুবাদ শুকদেব গোস্বামী বলিলেন–হে রাজন,এইভাবে আমি প্রমাণ এবং লক্ষণ প্রদর্শন পূর্বক ব্রহ্মান্ডের পরিমাণ বর্ণনা করিলাম। এই শ্লোকে আমাদের ব্রহ্মান্ডের ব্যাসের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।পরবর্তী শ্লোকে দেখিব আমাদের ব্রহ্মান্ডের ব্যাস ৫০কোটি যোজন বা ৪০০কোটি মাইল।আমাদের ব্রহ্মান্ডকে ৪গুন ধরিয়া অন্য ব্রহ্মান্ডগুলি বড় হইতে থাকে অর্থাৎ আমাদের পরবর্তী ব্রহ্মান্ডের আয়তন ৫গুণ।ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে এইভাবে হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি গুণ বড় ব্রহ্মান্ড রয়েছে।ব্রহ্মান্ডের আবরণ (Layer of Universe) প্রত্যকটি ব্রহ্মান্ড ৭টি আবরনের দ্বারা আবৃত। ব্রহ্মাণ্ডের আবরনের ধরন ও ব্যাস বিকারৈঃ সহিতো যুক্তৈর্বিশেষাদিভিরাবৃতঃ। আন্ডকোশো বহিরয়ং পঞ্চাশৎ কোটিবিস্তৃতঃ॥(ভাগবত ৩/১১/৪০) অনুবাদ আটটি জড় উপাদানের সমন্বয়ে ষোড়শ প্রকার বিকার থেকে প্রকাশিত এই যে ব্রহ্মান্ড,তাহার অভ্যন্তর পঞ্চাশ কোটি যোজন বিস্তৃত এবং নিম্নলিখিত আবরণের দ্বারা আবৃত। এইখানে ব্রহ্মান্ডের আবরণের কথা বলা হয়েছে এবং ব্রহ্মান্ডের ব্যাস ৫০কোটি যোজন তাহা উল্লেখ করা হয়েছে।এখানে ব্রহ্মান্ডের আবরণের যে উপাদান সেইগুলিকে বিকার গ্রস্ত বলা হয়েছে অর্থাৎ গ্যাসীয় অবস্থায় বিদ্যমান।যেমন–জলের আবরণ ইহা H2 ও O2গ্যাস দ্বারা গঠিত,ব্রহ্মাণ্ডের আবরণগুলি বিকার গ্রস্ত হওয়ার জন্য একটি ব্রহ্মান্ড থেকে অন্য ব্রহ্মান্ডে আলোক রশ্মি গমন করতে পারে । ব্রহ্মান্ডের আবরণ দশোত্তরাধিকৈর্যত্র প্রবিষ্টঃ পরমাণুবৎ। লক্ষ্যতেহন্তর্গতাশ্চান্যে কোটিশো হ্যন্ডরাশয়ঃ॥(ভাগবত ৩/১১/৪১)অনুবাদ ব্রহ্মান্ডকে আবৃত করে যে সমস্ত তত্ত্ব,তাহা উত্তরোত্তর দশগুন অধিক বিস্তৃত এবং সমস্ত ব্রহ্মান্ডগুলি এক বিশাল সমন্বয়ের পরমাণু মতো প্রতিভাত হয় । এই শ্লোকে বর্ণনা করা হইয়াছে ব্রহ্মান্ডের প্রথম আবরন থেকে দ্বিতীয় আবরণ দশ গুন বড়,তৃতীয় আবরণ আবার দ্বিতীয় থেকে দশ গুন বড় এভাবে ক্রমান্বয়ে আবরণগুলির বিস্তৃতি বাড়িতে থাকে।শ্লোকের দ্বিতীয় অংশে আরো বর্ণনা করা হয়েছে আবরণগুলি বৃত্তাকারে ব্রহ্মান্ডকে ঘিরিয়া রাখিয়াছে এই জন্য ইহা দেখতে একটি পরমাণুর মত গোল।এখানে ব্রহ্মান্ডের আবরণকে পরমাণুর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে যাহা অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।একটি পরমাণুতে প্রোটন ও নিউট্রনকে কেন্দ্র করে ইলেকট্রন গুলি এমনভাবে সন্নিবেশিত হয়েছে যাহাতে কেন্দ্রকে বাহির হইতে দেখ যায় ঠিক সেরকম ব্রহ্মান্ডের ৭টি আবরণ থাকা সত্ত্বেও ব্রহ্মান্ডকে বাহির হইতে দেখ যায় এবং ব্রহ্মান্ড থেকে আলোক নির্গত হইতে পারে।প্রত্যেকটি ব্রহ্মান্ড গোলাকার বল বা পরমাণু মত সেই বিষয়টিও এখানে উল্লেখ করা হয়েছে।প্রতিটি ব্রহ্মান্ডের ভিতরে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা রয়েছে যাহা গোলাকার।প্রতিটি ব্রহ্মান্ড ৭টি আবরণ দ্বারা আবৃত সেই আবরণগুলি বিভিন্ন পদার্থ দ্বারা গঠিত। ব্রহ্মান্ডের আবরণের বিস্তৃতি এতদন্ডং বিশেষাখ্যং ক্রমবৃদ্ধৈর্দশোত্তরৈঃ।তোয়াদিভিঃ পরিবৃতং প্রধানেনাবৃতৈর্বহিঃ। যত্র্রলোকবিতানোহয়ং রূপং ভগবতো হরেঃ॥(ভাগবত ৩/২৬/৫২) অনুবাদ এই ব্রহ্মান্ডকে বলা হয় জড়া প্রকৃতির প্রকাশ।তাহাতে জল,অগ্নি,বায়ু,আকাশ,অহংকার এবং মহত্তত্ত্বের যে আবরণ রহিয়াছে,তাহা ক্রমান্বয়ে পূর্বটির থেকে পরবর্তী আবরণটি দশ গুণ অধিক এবং তাহার শেষ আবরনটি হইতেছে প্রধানের আবরণ।এই ব্রহ্মান্ডে ভগবানের বিরাটরূপ বিরাজ করিতেছে,যাহার দেহের একটি অংশ হচ্ছে চতুর্দশ ভুবন।এই শ্লোকে ব্রহ্মান্ডের ৭টি আবরণের পদার্থের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।প্রতিটি আবরণ পূবটির থেকে ১০ গুণ চওড়া।যেমন ব্রহ্মান্ডের প্রথম আবরণটি জলের তৈরী এখানে জল মানে জলের বিকার অবস্থা যা আগের শ্লোকে দেখানো হয়েছে অর্থাৎ জলের বায়বীয় অবস্থায় অবস্থান করে।ব্রহ্মান্ডের ব্যাস ৫০ কোটি যোজন অর্থাৎ জলের আবরণ ৫০×১০=৫০০ কোটি যোজন পুরু।এইভাবে পরবর্তী আবরণগুলি বৃদ্ধি পেতে থাকে। যদি ব্রহ্মান্ডের ব্যাস X ধরা হয় তা হলে ব্রহ্মান্ডের আবরণকে নিম্নলিখিত ভাবে প্রকাশ করা যায়। ব্রহ্মান্ডের আবরণগুলির সংক্ষিপ্ত বর্ণনা ১ম আবরণ১০×X=১০X চওড়া জল (বিকার অবস্থা)দিয়ে তৈরী ২য় আবরণ১০X×১০=১০০X বিস্তৃতি/ চওড়া আগুন দিয়ে তৈরী ৩য় আবরণ১০০X×১০=১০০ বিস্তৃতি/ চওড়া বায়ু দিয়ে তৈরী ৪র্থ আবরণ১০০০X×১০=১০০০০X বিস্তৃতি/চওড়া আকাশ(ইথার)৫ম আবরণ ১০০০০X×১০=১০০০০০X বিস্তৃতি/চওড়া অহংকার(সূক্ষ্ম পদার্থ যা সাধারণভাবে অনুভব করা যায় না কিন্তু ইহা জড় পদার্থ) ৬ষ্ঠ আবরণ১০০০০০X×১০=১০০০০০০X বিস্তৃতি চওড়া মহতত্ত্ব (বিশ্বব্রহ্মান্ড তৈরীর প্রাথমিক পদার্থ যা দ্বারা ব্রহ্মান্ড তৈরী হয়) ৭ম আবরণ১০০০০০০X×১০=১০০০০০০০০X বিস্তৃতি চওড়া প্রধান(সূক্ষ্ম অব্যক্ত বস্তু, যা অনুভব করা যায় না, ইহাকে সাধারণভাবে শূন্যস্থান বলা যাইতে পারে) মোট–১১১১১১১০X বিস্তৃতি/চওড়া উপরের হিসাব থেকে দেখা যায় ব্রহ্মান্ডের মোট আবরণের বিস্তৃতি ব্রহ্মান্ডের ব্যাসের ১কোটি ১১লক্ষ গুণ বড়, এভাবে হিসাব করলে দেখা যায় আমাদের পার্শ্ববর্তী ব্রহ্মান্ডের আবরণের বিস্তৃতি আমাদের চেয়ে একটু বেশী কারণ আমাদের নিকটতম ব্রহ্মান্ডটি ৫গুণ আর আমাদের ব্রহ্মান্ডটি ৪গুণ সুতরাং আমাদের চেয়ে কিছুটা বড় সেজন্য সেটির আবরণ আমাদের চেয়ে আরো একটু পুরু হইবে।


    পর্ব- ৪ 

    চিন্ময় জগতে কালের প্রভাব নাই প্রবর্ততে যত্র রজস্তমস্তয়োঃ সত্ত্বং চ মিশ্রং ন চ কালবিক্রমঃ । ন য্ত্র মায়া কিমুতাপরে হরে- রনুব্রতা যত্র সুরাসুরার্চিতাঃ (ভাগবত ২/৯/১০) অনুবাদ ভগবানের সেই ধামে রজো তমোগুণ নাই, এমনকি সেখানে সত্ত্বগুনেরও প্রভাব নাই । সেখানে বহিরঙ্গা মায়াশক্তির প্রভাব তো দূরের কথা, কালেরও প্রভাব নাই । মায়া সেখানে প্রবেশ করিতে পারে না । সুর এবং অসুর উভয়ে কোনরম ভেদবুদ্ধি না করিয়াই ভগবানের পূজা করেন । এই শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে, চিন্ময় জগতে কালের কোন প্রভাব নাই । কাল এক প্রকার শক্তি, এই শক্তির দ্বারা ভগবান জড় জগতসহ সবকিছু সৃষ্টি, ধ্বংস এবং নিয়ন্ত্রন করেন, কালের প্রভাবে সব কিছু পরিবর্তিত হয়, আজকের যুবক ৫০ বছর পর বৃদ্ধে পরিণত হয় কালের প্রভাবে । যেহেতু চিন্ময় জগতে কালের কোন প্রভাব নাই, তাই সেখানে সবকিছু অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকে ।(বিঃ দ্রঃ – কৃষ্ণ যখন অর্জুনকে গীতার জ্ঞান দান করছিলেন তখন কৃষ্ণের বয়স ছিল ১২৫ বছর কিন্তু তার এত বয়স সত্ত্বেও তাকে দেখা গিয়েছিল ২৫ বছরের যুবকের মত কারন ভগবান কৃষ্ণের দেহ ছিল চিন্ময় [সৎ, চিৎ, আনন্দময়]তাই তার উপর কালর প্রভাব পরে না) , চিন্ময় জগতে সব কিছু জীবন্ত যেখানে জড় বা প্রাণহীন কোন বস্তু নাই । আমরা জড় জগতে প্রানীর দেহে যে আত্মার প্রভাব অনুভব করি, সেই আত্মা জড় জগত থেকে সৃষ্টি হয় নাই । আত্মা চিন্ময় বস্তু, ইহার কোন সৃষ্টি বা ধ্বংস নাই । সেজন্য ইহা চিন্ময় জগতের বস্তু অর্থাৎ আত্মা চিন্ময় জগত থেকে এই জড় জগতে এসেছে । আত্মাকে সাধারণ ভাষায় জীবন বা প্রাণ বলে । কিছু বিজ্ঞানী মত প্রকাশ করিয়াছেন গভীর সমুদ্রে সূর্যলোকের প্রভাবে কতগুলি জড় বস্তুর সম্মিলনে প্রাণ বা জীবন বা আত্মা সৃষ্টি হয়েছে । আবার কেউ বলছেন পানি থেকে জীবন সৃষ্টি হয়ছে । আমাদের মনে রাখতে হবে, জড় বা প্রাণহীন বস্তু থেকে জীবন সৃষ্টি হতে পারে না । জীবন বা আত্মা হল উৎকৃষ্ট উচ্চ স্তরের বস্তু সেটা কখনও নিম্নস্তরের জড় বস্তু থেকে সৃষ্টি হতে পারে না । বিজ্ঞানীরা বহুদিন যাবৎ গবেষণা করছে এই মহাবিশ্বে জীবন বা আত্মা কোথা থেকে এসেছে । সেই প্রশ্নের উত্তরে ভাগবত বলিতেছে আত্মা চিন্ময় জগত থেকে এসেছে ।চিন্ময় জগতের চিন্ময় ব অপ্রাকৃত বস্তু, এর সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই চিন্ময় জগত থেকে আত্মার আগমন হয়েছে এবং চিন্ময় জগতে ফিরে যাওয়া ইহার মূল লক্ষ্য-এই জন্য মানব জীবনের মূল লক্ষ্য হল শ্বাশত জীবন অর্থাৎ চিন্ময় জগতে ফিরে যাওয়া। আত্মা চিন্ময় জগত থেকে আসে অপরেয়মিতস্ত্বন্যাং প্রকৃতিং বিদ্ধি মে পরাম্ । জীবভূতাং মহাবাহো যয়েদং ধার্যতে জগৎ ।। (গীতা ৭/৫) অনুবাদ হে মহাবহো, এই নিকৃষ্টা প্রকৃতি ব্যতীত আমার আর একটি উৎকৃষ্টা প্রকৃতি রহিয়াছে । সেই প্রকৃতি চৈতন্য স্বরূপা ও জীবভূতা; সেই শক্তি থেকে সমস্ত জীব নিঃসৃত হইয়া এই জড় জগতকে ধারণ করিয়া আছে । এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে ভগবানের অন্য একটি উৎকৃষ্টা চৈতন্য স্বরূপা অর্থাৎ চিন্ময় জগত আছে যা জীবভূত অর্থাৎ সেখান থেকে জীবন বা আত্মা এসেছে । চিন্ময় জগতকে আলোকিত করার জন্য জড় জগতের মত সূর্যালোকের প্রয়োজন নাই । সূর্যালোকের যে উৎস ব্রহ্ম জ্যোতি, তাহার দ্বারা চিন্ময় জগত আলোকিত হয় । চিন্ময় জগতে সূর্যোলোক বা চন্দ্রালোকের প্রয়োজন নাই ন তদ্ ভাসয়তে সূর্যো না শশাঙ্কো ন পাবকঃ । যদ্ গত্বা ন নিবর্তন্তে তদ্ধাম পরমং মম ।। (গীতা ১৫/৬)অনুবাদ আমার সেই রম ধাম সূর্য, চন্দ্র অথবা বিদুৎ আলোকিত করিতে পারে না । সেখানে গেলে আর এই জড় জগতে ফিরিয়া আসিতে হয় না । এ শ্লোকে বর্ণনা করা হয়েছে পরমধাম বা চিন্ময় জগত সূর্য, চন্দ্র বা বিদুৎ আলোকিত করতে পারে না । চিন্ময় জগতের জলও জীবন্ত বস্তুর মত ক্রিয়া করে । যেমন – ব্রহ্মা হিরণ্যকশিপুর ভক্ষিত শরীরে যখন চিন্ময় জল সিঞ্চন করেন, তখন হিরণ্যকশিপু নব যৌবন প্রাপ্ত হয় । চিন্ময় জলের প্রভাব ইত্যুক্তৃদিভাবো দেবো ভক্ষিতাঙ্গং পিপীলিকৈঃ ।কমন্ডলুলেনৌক্ষদ্দিব্যেনামোঘরাধসা ।। (ভাগবত ৭/৩/২২) অনুবাদ শ্রীনারদ মুনি বললেন – হিরণ্যকশিপুকে এই কথা বলিয়া, এই ব্রহ্মান্ডের আদিদেব ব্রহ্মা তাহার কমন্ডুলু থেকে অব্যর্থ দিব্য জল নিয়া পিপীলিকা কর্তৃক ভক্ষিত হিরণ্যকশিপুর দেহে সিঞ্চন করিয়াছিলেন । তাহার ফলে হিরণ্যকশিপুর শরীর পুণরুজ্জীবিত হইয়াছিল । মানুষ উন্নত কর্মের দ্বারা চিন্ময় শরীর লাভ করতে পারে, সেই শরীর দ্বারা সে মহাশূন্য ভ্রমণ করতে পারে এবং ভগবানের সঙ্গ করার সুযোগ পায়। নারদ মুনির শরীর চিন্ময় প্রযুজ্যমানে ময়ি তাং শুদ্ধাং ভাগবতীং তনুম্ । আরব্ধকর্মনির্বাণো ন্যপতৎ পাঞ্চভৌতিকঃ ।। (ভাগবত ১/৬/২৮) অনুবাদ এই শ্লোকে নারদ মুনি তাহার জড় শরীর ত্যাগের পর চিন্ময় শরীর লাভের কথা বর্ণনা করেছেন । চিন্ময় জগতের বিপরীত প্রতিফলন এই জড় জগত বা বিশ্বব্রহ্মান্ড । আমাদের এই মহাবিশ্ব যা দ্বারা তৈরী এর বিপরীত পদার্থ দ্বারা চিন্ময় জগত তৈরী । ভগবানের জড় জগতের ধাম চিন্ময় জগতের প্রতিরূপ কৃষ্ণলোক সম্বন্ধে জীব গোস্বামী স্কন্দ পুরাণের বর্ণনার উল্লেখ করেছেন যা যথা ভুবি বর্তন্তে পুর্যো ভগবতঃ প্রিয়াঃ তাস্তথা সন্তি বৈকুন্ঠে তদ্ভল্লীলার্থমা দৃতাঃ ।। জড় জগতে দ্বারকা, মথুরা এবং গোলোক আদি ভগবানের ধামসমূহ চিৎজগতে ভগবতধামের অবিকল । সায়ম্ভূবতন্ত্রে চতুর্দশাক্ষর মন্ত্রের প্রভাব সম্বন্ধে শিব এবং পার্বতীর আলোচনায় তা প্রতিপন্ন হয়েছে । সেখানে বলা হয়েছে চিন্ময় জগতের নীচে জড়জগত অবস্থিত নানাকল্পলতাকীর্ণং বৈকুন্ঠং ব্যাপকং স্মরেৎ । অধঃ সাম্যং গুণানাঞ্চ প্রকৃতিঃ সর্বকারণম্ ।। (চৈতন্য চরিতামৃত ১/৫/১৮ অনুবাদ মন্ত্র জপ করিবার সময় সর্বদা চিৎজগতের কথা স্মরণ করা উচিত, যাহা অন্তহীনভাবে ব্যাপ্ত এবং সমস্ত মনোরথ পূর্ণকারী কল্পবৃক্ষে পূর্ণ । সেই বৈকুন্ঠলোকের আধোভাগে জড় সৃষ্টির কারণস্বরূপা প্রকৃতি অবস্থিতা । এখানে বর্ণনা করা হয়েছে চিন্ময় জগতের নীচে জড় জগত অবস্থিত ।

    পর্ব- ৫

    চিন্ময় জগত সন্মন্ধে বিজ্ঞানীদের ধারণা (Concept of Scientists about Spiritual World) চিন্ময় জগত বা বিপরীত জগত সন্মন্ধে বিজ্ঞানীদের সুস্পষ্ট কোন ধরনা নাই তবে চিন্ময় জগতের কিছু ইঙ্গিত বিজ্ঞানীদের বিবরণে পাওয়া যায় । ষ্টিফেন হকিং রচিত কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বইটিতে তিনি বর্ণনা করেছেন । বিজ্ঞানীদের ধারনা ইলেকট্রনের নিশ্চয় একটি জুড়ি থাকবে অর্থাৎ থাকবে একটি বিপরীত ইলেকট্রন (Anti-Electron)কিংবা পজিট্রন । ১৯৩২ সালে পজিট্রন আবিষ্কৃত হয় । ফলে ডিরাকের তত্ত্বের সত্যতা প্রমাণিত হয়, এই আবিষ্কার ১৯৩৩ সালে ডিরাকের নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্তির পথিকৃৎ । আমরা এখন জানি প্রতিটি কণিকারই একটি বিপরীত-কণিকা (Anti-Particle) আছে । তাহার সঙ্গে কণিকাটি বিনাশপ্রাপ্ত (annhilated) হতে পারে (বলবাহী কণাগুলির ক্ষেত্রে বিপরীত কণিকা এবং কণিকাটি অভিন্ন) , বিপরীত কণিকা দ্বারা গঠিত বিপরীত পৃথিবী এবং বিপরীত মানুষও থাকতে পারে । কিন্তু আপনার বিপরীত সত্তার সঙ্গে দেখা হলে তাহার সঙ্গে করমর্দন করবেন না । তা করিলে আলোর ঝলকে মিলাইয়া যাবেন । বিজ্ঞানীদের এ বর্ণনা থেকে ধারনা করা যায় তারা একটি বিপরীত জগতের কথা ভাবিতেছেন এবং বিপরীত পদার্থের মানুষ থাকাও সম্ভব বিজ্ঞানীদের এই ধারনা আংশিকভাবে চিন্ময় জগতকে ইঙ্গিত করে । একটি পরমাণু ইলেকট্রন (Electron), প্রোটন (Proton) এবং নিউট্রন (Neutron) কণিকা দ্বারা গঠিত । ২০(বিশ) বছর আগ পর্যন্ত মনে করা হত এইগুলি মৌল কণিকা । কিন্তু ১৯৬৯ সালে বিজ্ঞানী মারে গেলম্যান (Murray Gell Mann) প্রমাণ করেন নিউট্রন এবং প্রোটন কার্ক (Quark) নামক কণিকা দ্বারা গঠিত । প্রতিটি নিউট্রন এবং প্রোটন ৩টি করে কার্ক দ্বারা গঠিত । এ আবিষ্কারের জন্য গেলম্যান সাহেব নোবেল প্রাইজ পান । এখন পর্যন্ত কার্ককে মৌল কণা হিসাবে বিবেচনা করা হয় । অন্যান্য নীহারিকাতে পদার্থ প্রোটন এবং নিউট্রন অথবা বিপরীত প্রোটন এবং বিপরীত নিউট্রন দ্বারা গঠিত কিনা এ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের কোন প্রত্যক্ষ প্রমান নাই । একই নীহারিকাতে দুইয়ের মিশ্রণ থাকতে পারে না । কতগুলি নীহারিকা পদার্থ দিয়ে গঠিত এবং কতগুলি নীহারিকা বিপরীত পদার্থ দিয়ে গঠিত এরকম সম্ভবনা নাই । বিপরীত কার্কের তুলনায় কার্কের সংখ্যা অত বেশী কেন ? দুইয়ের সংখ্যা এক না হওয়ার কারণ কি ? দুইয়ের সংখ্যা সমান না হওয়া আমাদের সৌভাগ্য । তাহার কারণ, সে রকম হলে সমস্ত কার্ক এবং বিপরীত কার্ক মহাবিশ্বের আদিমকালে পরস্পরকে ধ্বংস করিয়া ফেলিত । মহাবিশ্ব বিকিরণে ভর্তি থাকিত, কিন্তু বিশেষ কোন পদার্থ থাকত না । মনুষ্যজীবন বিকাশ লাভ করবার মতো কোন নীহারিকা, কোন তাঁরকা, কোন গ্রহ থাকত না । শুরুতে যদি দুইয়ের সংখ্যা সমান থাকিয়াও থাকে, তা হলে এখন কার্কের সংখ্যা এত বেশী কেন ? সৌভাগ্যক্রমে সে সম্পর্কে ঐক্যবদ্ধ তত্ত্বগুলি একটি ব্যাখ্যা দিতে পারে । আমরা দেখেছি উচ্চশক্তিতে কার্কের বিপরীত ইলেকট্রনে রূপান্তরিত হওয়ার অনুমোদন Gut-এর আছে । এর বিপরীত পদ্ধতি অর্থাৎ কার্কের ইলেকট্রনের রূপান্তর এবং ইলেকট্রন বিপরীত ইলেকট্রনে রূপান্তর তাহারা অনুমোদন করে । মহাবিশ্বের অতি আদিম যুগে একটা সময় ছিল যখন মহাবিশ্ব এত উত্তপ্ত হওয়ার ফলে কণিকা শক্তি এত উচ্চমানের হত যে এই সমস্ত রূপান্তর সম্ভবপর ছিল কিন্তু তাহার ফলে কার্কের সংখ্যা বিপরীত কার্কের চাইতে বেশী হইবে কেন ? তার কারন পদার্থবিদ্যার বিধিগুলি কণিকা এবং বিপরীত কণিকার ক্ষেত্রে অভিন্ন নয় । আপনি যদি সমস্ত কণিকা এবং প্রতিকণিকার গতি বিপরীতমুখী করে দেন, তা হলে তন্ত্রটি (system) অতীত কালে যা ছিল সে অবস্থায় ফিরে যাবে । অর্থাৎ বিধিগুলি কালের সম্মুখ অভিমুখে এবং পশ্চাৎ অভিমুখে একই হবে । ১৯৫৬ সালে সুং দাও লী (Tsung Dao Lee) এবং চেন নিং ইয়াং (Chen Ning Yang) নামে দুজন আমেরিকান পদার্থবিদ প্রস্তাবনা করেন যে, আসলে দুর্বল বল (weak force) প্রতিসাম্য P মানে না । পরের বছর লী এবং ইয়াং তাহাদের চিন্তাধারা জন্য নোবেল পুরষ্কার পান । এইও দেখা গিয়েছিল যে, দুর্বল বল প্রতিসাম্য-C মেনে চলে না । অর্থাৎ এর ফলে বিপরীত কণিকা দিয়ে গঠিত মহাবিশ্বের আচরণ আমাদের মহাবিশ্বের চাইতে পৃথক হবে । আদিম মহাবিশ্ব অবশ্যই প্রতিসাম্য-T মানে না: সময় এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হয় । সময়ের অভিমুখ পশ্চাদ্ বর্তী হলে মহাবিশ্ব সঙ্কুচিত হবে । এই আলোচনার মাধ্যমে বিজ্ঞানীর মতামত প্রকাশ করেছেন, মহাবিশ্বের বিপরীত কার্কের (Anti Quark) তুলনায় কার্কের (Quark) সংখ্যা এত বেশী কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেছেন কার্ক এবং বিপরীত কার্কের সংখ্যা সমান হলে একে অপরকে ধ্বংস করিয়া ফেলিত, সেজন্য কার্কের সংখ্যা বেশি । আবার বিজ্ঞানী Gut অনুমোদন করেছেন উচ্চ তাপমাত্রা কার্ক থেকে এন্টিকার্ক বা বিপরীত কার্ক হতে পারে এবং বিপরীত কার্ক থেকে কার্ক হতে পারে । সহজভাবে বলা যেতে পারে পদার্থ থেকে বিপরীত পদার্থ এবং বিপরীত পদার্থ থেকে পদার্থ হতে পারে । এই বিষয়টি ভাগবতে আরো সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছে


    পর্ব- ৬

    মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদিতে সমস্ত পদার্থ গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণুর নাভি নামক একটি বিন্দুতে ঘনীভূত ছিল,এই পদার্থের নাম ‘প্রধান’ইহা চিন্ময় পদার্থ বা বিপরীত পদার্থ বা বিজ্ঞানের ভাষায় এন্টিকার্ক দ্বারা তৈরী পদার্থ বলা যাইতে পারে।বিজ্ঞানীরা বলেছেন বিপরীত কণিকা দিয়ে গঠিত পদার্থের বা মহাবিশ্বের আচরণ আমাদের মহাবিশ্বের চাইতে পৃথক হবে।আমি যে‘প্রধান’নামক বিপরীত পদার্থের উল্লেখ করেছি,তা আমাদের বৈজ্ঞানিক কোন নীতিমালা মানবে না,চিন্ময় পদার্থ চিন্ময় জগতের ভিন্ন নীতিমালা মানিয়া চলবে,কিন্তু বিজ্ঞানীরা সেই জগতের নীতিমালা জানে না।‘প্রধান’নামক এই বিপরীত পদার্থ থেকে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে,‘প্রধান’যেহেতু এই জগতের কোন নীতিমালা মেনে চলে না সেজন্য বিজ্ঞানীরা বলছেন সৃষ্টির আদিতে সমস্ত বৈজ্ঞানিক বিধিগুলি ভঙ্গ হয়ে গিয়েছিল।সৃষ্টির শুরুতে বৈজ্ঞানিক বিধিগুলি ভঙ্গ হওয়ার কারন হইল‘প্রধান’নামক যে চিন্ময় পদার্থ থেকে এই মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছে,তা এ জগতের কোন নীতিমালা মেনে চলে না।‘প্রধান’ চিন্ময় বা বিপরীত পদার্থ।ইহা এই জড় মহাবিশ্বের কোন নীতি মেনে চলে না।সেজন্য ‘প্রধান’-এর আয়তন আমাদের মহাবিশ্বের কোন পদ্ধতির দ্বারা মাপা সম্ভব নয়,‘প্রধান’আমাদের কাছে অপ্রকাশিত বা অব্যক্ত,এর আয়তন আমাদের জগতের নীতিতে শূন্য হবে।এজন্য বিজ্ঞানীরা বলছেন মহাবিশ্বের আয়তন সৃষ্টির শুরুতে শূন্য ছিল।প্রকৃত বিচারে ‘প্রধান’ কোন শূন্য পদার্থ নয় ইহা বিপরীত পদার্থ সেই জন্য ইহাকে সাধারণ পদ্ধতিতে মাপা সম্ভব নয়। মানুষের শরীরটি জড় পদার্থ অর্থাৎ এই মহাবিশ্বের পদার্থ,মানুষের মধ্যে যে আত্মা আছে তাকে বলা হয় চিন্ময় পদার্থ অর্থাৎ বিপরীত পদার্থ।এই চিন্ময় আত্মার প্রভাব আমরা অনুভব করিতে পারি কিন্তু যদি আমরা আত্মাকে আমাদের পদ্ধতি দ্বারা মাপতে চাই তবে সেটা সম্ভব নয়।তখন আমরা বলিব আত্মার কোন আয়তন নাই বা আয়তন শূন্য কিন্তু বৈদিক শাস্ত্র চিন্ময় জগতের নীতমালার সাথে পরিচিত,সেজন্য ভাগবতে বর্ণনা করা হয়েছে আত্মার আয়তন একটি চুলের অগ্র্রভাগের দশ হাজার ভাগের একভাগ। আত্মার আয়তন সম্বন্ধে বেদে বলা হয়েছে বালাগ্রশতভাগস্য শতধা কল্পিতস্য চ। ভাগো জীবঃ স বিজ্ঞেয়ঃ স চানন্ত্যায় কল্পতে॥(শ্বেতাশ্বতর উপনিষদ ৫/৯) অনুবাদ কেশাগ্রকে শতভাগে ভাগ করিয়া তাহাকে আবার শতভাগে ভাগ করিলে তাহার যে আয়তন হয়,আত্মার আয়তনও ততখানি। কেশাগ্রশতভাগস্য শতাংশঃসদৃশাত্নক জীবঃ সূক্ষস্বরূপপোহয়ং সংখ্যাতীতো হি চিৎকণঃ॥(ভাগবত) অনুবাদ অসংখ্য যে চিৎকণা (আত্মা) রহিয়াছে,তাহার আয়তন কেশাগ্রের দশ সহস্র ভাগের এক ভাগের সমান ।একটি কেশাগ্রের দশ সহস্রভাগের একভাগ অর্থাৎ একটি চুলের দশ হাজার ভাগের একভাগ অর্থাৎ আত্মা অত্যন্ত ক্ষুদ্র শক্তি কণিকা যা ভগবানের অংশ।সুতরাং দেখা যাচ্ছে আত্মার আয়তন আছে,কিন্তু সেটা আমাদের এই জগতের কোন পদ্ধতি দ্বারা মাপা সম্ভব নয়।ঠিক সেরকম প্রধানের আয়তন আছে,কিন্তু সেটা বৈজ্ঞানিকেরা এই জগতের পদ্ধতি দ্বারা মাপতে পারে না।সেজন্য তারা বলছে সৃষ্টির শুরুতে মহাবিশ্বের আয়তন শূন্য ছিল।কিন্তু প্রকৃতি বিচারে মহাবিশ্বের আয়তন শূন্য ছিল না। আমাদের এই শরীরটি জড় পদার্থ যতক্ষন এর মধ্যে আত্মা থাকে, ততক্ষণ ইহা জীবিত থাকে । যখন আত্মা দেহ ছেড়ে চলে যায়, তখন দেহ প্রানহীন জড় পদার্থে পরিণত হয় । আমাদের এই জড় শরীর সৃষ্টির জন্য চিন্ময় আত্মা দায়ী অর্থাৎ চিন্ময় বস্তুর প্রভাবে জড় পদার্থ সৃষ্টি হয় । মানব দেহ বিশ্লেষণ করলে মাটি, জল, আগুন, বাতাস, আকাশ (ইথার) পাওয়া যাবে । কিন্তু এই বস্তুগুলির সমন্বয় ঘটাইয়া মানব শরীর সৃষ্টি সম্ভব নয় কারণ এগুলো সকলেই জড় বা প্রাণহীন ইহাদের জীবন্ত কিছু সৃষ্টি করার ক্ষমতা নাই । আম গাছে যতক্ষন আত্মা থাকে ততক্ষন ইহা আম তৈরী করতে পারে কিন্তু যখন আত্মা থাকে না তখন গাছ মৃত জড় পদার্থে পরিণত হয়, সেই কাঠ দ্বারা টেবিল বানানো যেতে পারে কিন্তু টেবিল থেকে আম গাছ বানানো সম্ভব নয় । সুতরাং জড় কোন বস্তুর সৃষ্টির পেছনে চিন্ময় আত্মার প্রভাব থাকতে হবে, চিন্ময় বস্তুর প্রভাব ছাড়া কোন কিছু সৃষ্টি সম্ভব নয় । আমাদের এই মহাবিশ্ব জড় বা প্রাণহীন এই জড় পদার্থ সৃষ্টি হয়েছে চিন্ময় বস্তুর প্রভাবে । ভাগবতে সেই পদার্থের নাম ‘প্রধান’ বলে উল্লেখ করেছে । চিন্ময় বস্তু থেকে যখন কোন জড় বস্তু সৃষ্টি হয় তখন একটি মাধ্যম প্রয়োজন হয় যেমন – আম তৈরীর জন্য আত্মার মাধ্যম হহল আমগাছ । মানব শরীর তৈরীর জন্য আত্মার মাধ্যম হল মানুষ, ঠিক সে রকম চিন্ময় বস্তু প্রধান হতে জড় বিশ্বব্রহ্মান্ড সৃষ্টির জন্য একটি মাধ্যমের প্রয়োজন, সেই মাধ্যম হল অগ্নিদেব বা আগুন বা তাপমাত্রা মাধ্যম যেহেতু জড় অর্থাৎ এই জগতের বস্তু সেজন্য সেটাকে মাপা সম্ভব । ‘প্রধান’-এর উপর যখন তাপমাত্রা ক্রিয়া করে তখন এর পরিমান ছিল অসীম বা অনন্ত । বিজ্ঞানীরা সেটা বলেছেন সৃষ্টির শুরুতে মহাবিশ্বের আয়তন ছিল শূন্য এবং তাপমাত্রা ছিল অসীম । প্রধানের উপর যখন অসীম তাপমাত্রা ক্রিয়া করে তখন প্রধান ক্ষোভিত বা বিস্ফোরিত হয়ে মহতত্ত্ব নামক জড় পদার্থের সৃষ্টি করে । পরবর্তীতে এই মহতত্ত্ব থেকে বিশ্বব্রহ্মান্ডের সৃষ্টি হয় ।এই বিস্ফোরণকে বিজ্ঞানীরা হট বিগ ব্যাঙ্গ (Hot Big Bang) বা উত্তপ্ত মহাবিস্ফোরণ বলে । এর নাম বিগব্যাঙ্গ থিওরী (Big Bang Theory) । পরবর্তীতে এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ।

    No comments:

    Post a Comment

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.