শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ৩৬-৫৫ - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    শ্রীশ্রী হরির ভাব সঙ্গীত, গান নংঃ ৩৬-৫৫

    গান নংঃ ৩৬-৫৫


    রাগিনী-জয়জয়ন্তী
    ৩৬। তাল - ঝাপ
    হরি তুমি দাও পদাশ্রয়-শান্তি মায়ে লয়ে বামে
    হরি ঘুচাও আমার নিরানন্দআনন্দ দাও হৃদয়ধামে।।
    । হরি হে-যুগল পদ্ম মধুর আছেআমি আছি সেই উদ্দেশে,
    পান করিব ঐ রূপ রসে বসে
    আমি ভ্রমর হয়েশদু খেয়েপরাইব মনষ্কামে।।
    । হরি হে-ফুল ফোটে বনেতেজগৎ মাতে সৌরভেতে,
    আকুল হয়ে গঞ্জরা গুঞ্জরে
    যত গঞ্জরাযায় উদয় পূর্ণ করি,
    ক্ষুধা হলে ডালে ভ্রমে।।
    । হরি হে- (আমার) যুগল নয়ন পদ্ম পাশে,
    সবাইব মন উল্লাসেমধু পানে আশা পূর্ণ হবে
    আমি লব অঞ্চল পাতিচাব না কুল মান জাতিমধু খাব দমে দমে।।
    । হরিহে-কাহর প্রানে দীনা বলেযুগল পদ্ম তরুমুলে,
    রেখ হরি আমায় অধম বলে
    দয়াল হরি গোসাইআমায় দিও ঠাই
    যুগল যেন পাই শান্তি শ্যামে।।
     
    রাগিনী-ভাটিয়াল
    ৩৭। তাল-ঝাপ
    ও মন মাঝিরে আমি কেন
    এলম তোমার বৃথা কাষ্ঠের নায়
    তোমার নৌকায় উঠিচলছি ভাটি,
    ছয় জন দাঁড়ি বাধ্য নয়।।
    । জান্তেম যদি নিরবধিনৌকার বাইন খসিয়ে যায়
    আমি বাইনে বাইনে দিতেম কালি,
    আলকাত্রা গাব দিতেম তায়।।
    । যদি যত্ন করতেম নৌকা আমিমাল সব যেত নয়
    যদি দুনয়ন প্রহরি রেখে মালেরপাহারা দিতেম সদায়।।
    । নৌকার মাল কোঠাত্বে পাহারা দিতে আমার ভুল পড়িয়ে যায়
    তাতে ছয়জন দাঁড়িকরে চুরিমাল সকল হরিয়ে নেয়
    । যত্ন ছাড়া ডুবল ভরাদেখলেম না চাহিয়া
    (দীনা) বলে রক্ষা নাইদয়াল হরি গোসাই
    চরণে স্থান দাও আমায়।।
     
    রাগিনী-লম্পট
    ৩৮। তাল-খেম্টা
    এই কি ছিল তোমার মনে বুঝিতে নারি
    তুমি মনের মত দুঃখ দিয়েঘুরাতেছ বিদেশ ভরি।।
    । তোমার নাম গুন গেয়ে গেয়েবেড়াতেছি ঘুরি
    আমার সঙ্গের সাথী আর কেহ নাইমনে বড় দুঃখ ভারী।।
    । বহুদিন ভ্রমিয়ে শেষেকামপুরেতে পড়ি
    আছে সেই গ্রামে এক দস্যু বিপ্র প্রাণে কষ্ট দিচ্ছে ভারি।।
    । বহু কথা জিজ্ঞাসিলবলিতে না পারি
    বলে কটু বক্য ক্রোধ ঐক্যচুপ করে রই ধৈর্য্য ধরি।।
    । পাঠালে তুমি অর্ন্তযামীএলেম একা পাড়ি
    আমার মনের কথা সকল জানতবে কেন বিপাকে পড়ি।।
    । হরি গোসাই বলে এবারছাড় জুয়াচুরি
    তবে পাবি দেখা বাঁকা সখাদীনা কেন বেড়াও ঘুরি।।
     
    রাগিনী-জয় জিয়ালই
    ৩৯। তাল-কহরাবা
    মন তুই গুরু চিনে ধর
    গুরুর চরণ অমূল্য ধনসাধন যেয়ে কর
    মন তুই গুরু চিনে না ধরিলেকেমনে হবি ভব পার।।
    । গুরু ব্রহ্মাগুরু বিষ্ণুগুরু মহেশ্বর,
    গুরু করলে মনুষ্য জ্ঞানসাধন হয়না তার
    মনরে গুরুর করণঅসীম তারন,
    করতে পারলে হবি তার।।
    । সত্যবাদী জিতেন্দ্রিয়পুরুষ যেই জন,
    গুরু তারে করে দয়াদিয়ে শ্রীচরণ
    সদা তাঁর ভাবনা ভাবে যে জন,
    বিপদ না থাকে তার।।
    । (ধরলে) অধর ধরাহওগে মরাযদি তারে চাও,
    দেহ তরী ছেড়ে দিয়হরি গুণ গাও
    হরি নামের গুণে উঠবে পারিভক্তি বাদাম টেনে ধর।।
    । হরি গোসাই বলে দীনাগুণন বলি এবার,
    পারে যেতে ভয় করিস নেগুরু কগে সার
    বেলা দন্ড চারি বোঝাই ভারীদেখা যায়না কূল কিনায়।।
     
    রাগিনী - ভাটিয়াল
    ৪০। তাল-ঝাপ
    সবে বলরে দারুন বিধি
    আমায় কেন নয়ন দিয়াছে
    নয়ন রঙ্গরসে সদা ভাসেরূপের ঘর ফেলে পিছে।।
    । রঙ্গে ভঙ্গে সেই আনন্দে নয়নসর্ব্বদায় আছে
    নয়ন ফিরাতে চাই নাহি ফিরেকু-রসের ভাবে নাচে।।
    । কেমনে নয়ন ফিরাব সন্ধানপাব কার কাছে
    আমি পড়েছি দায়মন চলে যায়দুষ্ট নয়নের পিছে।।
    । রূপ নিরখি রয় না আঁখি কেনবিরূপ হয়েছে
    থাকে মায়াপুরেকুপথ জুড়েমায়োয় জড়ি আছে।।
    । আমায় মন দিয়াছেনয়ন দিয়াছে বিধিসৎকর্ম্ম করিতে
    আমি তাই নাকরিজনমভরিদুষ্কর্ম্মে মন রয়েছে।।
    । আমার এ দুষ্ট মনআর দুনয়ন আমি পারিনা ফিরাতে
    এবার কর্ম্ম দোষেরিপুর বসেদীনার জনম যায় মিছে।।
     
    রাগিনী-পানতুফানি
    ৪১। তাল-লোফা
    মন তুই দেখনা চেয়ে নয়ন দিয়ে
    কেউ নয় আপন।।
    মিছে আমার আমার ভেবে মর,
    পরকাল কেন ভাবনা মন।।
    । ঐ দেখ ভ্রাতা পুত্র ঘরের নারীনিদান কালে যার যার তারী
    মায়ার ধাঁধাঁ দিন দুই চারিনিশির স্বপনের মতন।।
    । ভাব ধরে খেল ভাবের খেলাঘুচবেরে তোর ভব-জ্বালা
    হরি নামে হওরে ভোলাঅন্তিমে ছোবে না শমন।।
    । মন প্রাণ দিয়ে তারেনিরন্তর ভাব অন্তরে
    দয়াল হরি দয়া করেপ্রাণ অন্তে  দিবে শ্রীচরণ।।
    । হরি গোসাইর বাক্য ধরিবদন ভরে বল হরি
    দীনারে তুই দেখ বিচারিহরি বিনে কি আছে ধন।।
     
    রাগিনী -জয় জিয়ালাই
    ৪২। তাল-কহরাবা
    পাষণ মনা ভাই
    এই সংসার সাগরের আরকুল কিনারা নাই
    মন তুই কেমন করেযাবি পারে,
    কান্ডারি চিনে লও ভাই।।
    । সাগর মাছেবৃথা কাজেথাক অকারন,
    কাম কুন্তীরে ধরে খাবেনা রবে জীবন
    আছে হা করামুল্লুক জোড়াহাহাকার করে সদাই।।
    । অনুরাগের ভরেডঙ্কা মেরেকাম কুন্তীর তাছাড়,
    মহাভাবের তরী নিয়েসাগর মাঝে রও
    এবার প্রেমানন্দে ঢেউ খেল মনসাগরের ভয় কিছুই নাই
    । রসিক যে জনসেই নদীর গোনজেনে তরী বায়
    হরি নামের সারি গেয়েতরী বেয়ে যায়
    তারা থাকতে বেলা ধরে নালাআনন্দের আর সীমা নাই।।
    । (যে জন) কামুক মানুষচলে বেহুশধনপ্রাণ হত হয়,
    ও তার সর্ব্বস্ব ধনকরে হরণকিছুই নাহি রয়
    হরি গোসাই কয় এবার দীনারে তোর,
    পারের উপায় কর না তাই
     
    রাগিনী - উরুশেন
    ৪৩। তাল-ঝাপ
    হরি আমার সাধন হল কৈ
    সদা কু-কর্ম্মেতে মত্ত রই
    তোমায় স্মরণ নিলেম না একদিন
    স্মরণ যদি নিতেমতোমায় পেতেম হে,
    আমার মন হত তোমার অধীন।।
    । যখন মাতৃ গর্ভে ছিলেমকরুণ স্বরে স্মরণ নিলেম,
    দিলে দেখা সপ্ত মাসের দিন
    তখন বল্লেম হরিকষ্ট ভারি হে,
    হরি ঘুচাও আমার এ দুর্নিদন।।
    । অন্ধকুপে কারাগারেকেন রেখে দিলে মোরে,
    যাতনা মোর হইল প্রবীন
    অমি কড়ার নিলেমবলে ছিলেম হে,
    তোমার নামটি নিব চিরদিন।।
    । ভুমিষ্ট হইলেম যখনভুলে গেলেম সে সব কখন,
    মুখে মন দিল মাতৃস্তন
    ওয়ানা বলে হই আপন স্বাধীন
    । মরলে নেয় শ্মশানে বেঁধেসত্য ভ্রষ্ট অপরাধে,
    সেই জন্যেতে মুখ পোড়ায় সেই দিন
    হরি গোসাই বলেরলি ভুলেরে দীনা নাম নিতে হলি কঠিন
     
    রাগিনী-উরুশেন
    ৪৪। তাল-ঝাপ
    হরি তোমার ডাকতে যেন পারি চিরদিন
    ভুলে যাইনে যেন কোদনি
    এই মিনতি চরণে তোমার
    হরিনাম সিন্ধু-অম্বুতে ডুইবে হে,
    যেন থাকে পাষান মন আমার।।
    । ভারত ভুমে এসে আমিপেয়ে তোমার সংসার ভুমি,
    হয়ে আছি কর্ম্ম দুরাচার
    আমি সৎকর্ম্ম করিতেম যদি হে,
    হরি থাকিতেম হয়ে তোমার।।
    । (আমার) সু মতিকে শক্তি দিওকু মতিকে তাড়াইও
    কু-মতি সে বারি দুরাচার
    ও সে রং দেখায়েনেয় ভুলায়ে হে,
    সেত সু-পথের ধারে না ধার।।
    । (যেন) সদা করি নামের ধ্বনিআর না বলি অন্য বাণী
    দিবানিধি ঐ নাম করি সার
    আমার হৃদয় ধামেদমে দমে হে,
    হরিনামটি জপি আনিবার।।
    । হরি গোসাইর পদে মতিথাকে যেন দিবারাতি,
    খন্ড রতি হয়না যেন আর
    দীনবন্ধু বলেদিন ফুরালে হেহরি গতি কি হবে আমার।।
     
    রাগিনী - লম্পট
    ৪৫। ভাল - খেমটা
    হরিনাম  হৃদয় জপে যার
    সে যায় শেষে অনায়াসে ভবসিন্ধু পার
    হরি কৃপাসিন্ধু অনাথ বন্ধুঅসময় সে করে পার।।
    । (এল) নামের তরীবোঝাই করিহরি কর্ণধার ,
    প্রেমভক্তি ধনরসিক যে জনতারে করে পার
    তিনি ধনী-মানী পার করে না,
    পার করে নেয়এক মন যার।।
    । বিনা মূল্যে পার করে সেপারের মাশুল নাই,
    বশে ঘাটেনিষ্কপটেডাক ক্ষীরোদসাই
    এবার মন প্রাণ খুলেহরি বলে
    ঘাট মাঝিকে বাধ্য কর।।
    । (নৌকায়) ভাবের মাস্তুলপ্রেমের বৈঠাভক্তির গুণ দড়ি,
    শ্রদ্ধা কাষ্ঠের তরী নিয়েএলেন শ্রীহরি
    মনের ছাড়লে কপটঘুচবে সঙ্কটপারে যাবি অনিবার।।
    । হরি গোসাই বলে গুনএই বানী আমার,
    (যে জন) ডাকে তারেনেয় সে পারেনা করে বিচার
    ওরে দীনা বোকাসুযোগ পাকাছাড়লে পাবি নারে আর।।
     
    রাগিনী-উরুশেন
    ৪৬। তালঝাপ
    আমার এই ভাবে কি যাবে চিরদিন
    অমি বসে ভাবি রাত্রি দিন
    বল গুরু গতি কি আমার
    মরি কু-চিন্তাতে অশান্তিতে হে,
    গুরু শান্তি কর শান্তিধর।।
    । দুষ্কৃতী স্বভাবের দোষেদুঃখে যাতনা ভোগি এসে
    শান্তির ডালি পেলেম না এবার
    আমার দুষ্কৃতী বিনাশ করিয়ে হে,
    গুরু সুকৃতি দেও হৃদ মাঝার।।
    । কুহকিনীর মায়ায় পড়িকু-পথে বেড়ালেম ঘুরি,
    তোমায় গুরু ডাকলেম না একবার
    এখন ডাকার মত শক্তি দিও হে,
    গুরু ডাকি যেন অনিবার।।
    । কৃপা বারি সিঞ্চনেতেশীতলতা দাও প্রাণেতে,
    কৃপা বিনে মরণ হয় আমার
    গুরু তুমি বিনে দীনহীনে হে,
    আমার আর কোন নাই পারাপার।।
    । ভেবে অধীন দীনা বলেগুরু কেন ভবে পাঠাইলে,
    সাধন ভজন না হল আমার
    আমি জনম ভরি দুরাচারি হে,
    হরি গোসাইর বাণী করলেম না সার
     
    রাগিনী-উরুশেন
    ৪৭। তাল-ঝাপ
    যে জন হরি ভক্ত হরি পরায়ন
    হরি নামে ঝরে দুনয়ন - তার কি ভবে ভাবনা আছে
    ও তার অনুরাগের তনুখানি হেসারা দিবা নিশি জ্বলতেছে।।
    । তিনি ভাব নদীতে ঝাপ দিয়েছেপ্রেম তরঙ্গে ঢেউ খেলতেছে,
    স্নেহের  মন্দির ভেঙ্গে গিয়েছে
    নাই তার স্নেহের মন্দিরভাবে অস্থির হে,
    ও তার ছয় ভ্রাতা সদা নাচে।।
     
    । প্রেম সাগরের তরঙ্গ ভারিবাহিতেছে স্রোত বারি,
    মায়ার ভেরি ছুটে গিয়েছে
    তাহার নাই কোন ঠিকহয়ে বিদিক হে,
    তিনি পথ বিপথে চলতেছে।।
    । মাঝে মাঝে হয় উতলাভাবেতে হয়ে বিভোলা,
    কি করিতে কি না করতেছে
    তখন বেগের চোটেপ্রাণ যায় ফেটে হে,
    শুধু হতাশে তার প্রাণ আছে।।
    । হরি গোসাই বলে দীনাএমন সুদিন আর পাবিনা,
    সুযোগের পথ কাছে এসেছে
    এবার হরিবলে বাহু তুলে হে,
    ও তুই চলে যা গুরুর পিছে।।
     
    রাগিনী-ভেন্ডিল কাহিনী
    ৪৮। তাল-ঝাপ
    ও দরদিরে তুমি আমার বিপদকালে নিদয়া হইওনা
    আমার বিপদকালে নিদয় হলেরেÑ
    হারে দরদ কে বুঝবে তুমি বিনা।।
    । ঘুরে দেখি দেশ বিদেশেবান্ধব নাই মোর কোন দেশে
    আমি আছি তোমার ঐ উদ্দেশ্যে রে,
    গুরু আমাকে ত্যাজিও না।।
    । (আমার) এ হেন দুঃখের কপাল,
    বন্ধু বান্ধব নাই মোর সবল
    (তাঁরা) জ্বালিয়ে ভীষণ অনল রে,
    হারে আমার অন্তরে দেয় বেদনা।।
    । অসহ্য অনল অন্তরে,
    ধেয়ে যাই জুড়াবার তরে
    (আমার) বন্ধু বান্ধব চায় না ফিরে রে,
    হারে তারা কটু বলে স্থান দেয় না।।
    । (হরি) দেও দুঃখ যা কর্ম্মের লিখন,
    সব জম্মের দুঃখ কর মোচন
    (দীনার) মনেতে এই আকিঞ্চন রেÑ
    গুরু করব তোমার সাধনা।।
     
    ৪৯। তালঠুংরী
    নামের সাধ লাগল না আমার লোভে। (২)
    কু-রসেরি সাধে মত্ত ভুলে রলেম ভবে রে।।
    । কু-রসেরি আস্বাদনে হারাইলে পিতৃধনে
    এখন পাইনে বিশ্ব-জনার্দ্ধনেনিজের কর্ম দোষে রে।।
    । পিতৃধন সব ত্যাজ্য করি,
    নিলেম গরল বোঝাই ভরি
    এখন ভবের ঘাটে ডুবে মরি,
    কিনারা না হেরি রে।।
    । নামাস্বাদ মিলায়ে হরি,
    দিয়ে তোমার পদ তরি
    (ভবের) আসা যাওয়া বারণ করি,
    রাখ পদ তলে রে।।
    (ভবের) আসা যাওয়া বারণ করি,
    রাখ পদ তলেরে।।
    । বলে দীনা এই বাসনা,
    জনম আমায় আর দিওনা
    ঐ চরণে আশ্রয় বিনা,
    মৈলেম গরল পানে রে।।
     
    রাগিনী-বিরোলা
    ৫০। তাল-কাওয়ালী
    কাল ঘুমে ঘুমিয়ে কেন রলি অচেতন
    এই ভাবে কি জনম যাবে ওরে পাষান মন।।
    ও তুই দেখ না চেয়ে দু নয়ন মেলিয়ে,
    দীপ্ত ময় হইল ভাইএ বিশ্ব ভুবন।।
    । পুর্ব্বা পুরুষ ভেবে ছিল উচ্চ বর্ণেতে,
    ভগবান জম্মিয়া ছিল দীজ কুলেতে
    ঐ কুলে গুরু করিলেভগবান পাব সকালে,
    তাই যেনে ঐ চরণেলোটায় সর্ব্বজন।।
    । খাড়া পাতায় লিখে গেল পূর্ব্বা - পুরুষগণ,
    এখন কি খাড়া পাতায় লিখিয়ে,
    নিজের বুঝ ভাই নেও বুঝিয়ে,
    এমন সুদিন আর পাবেনা কখন।।
    । উচ্চ কুলে গুরু করে এলি চিরকাল,
    পাতিয়া গিয়াছে তাঁরাএসব কৌশল
    যত পূজা বেদ বিধিগঠন করল ব্যবসা আমি,
    এখন ঐ ব্যবসায় তারা হয় পরিপোষণ।।
    । (উচ্চ) কুলের গুরু না ধরিয়াভাবুক চিনে ধর,
    তন্ত্র মন্ত্র ছেড়ে দিয়েহরি কর সার
    যদি উদ্ধার হতে চাওঅন্য পূজা ছেড়ে দাও,
    হরি গুরু পূজায় থাকো সতত মগন।।
    । কলিতে হরিনাম যজ্ঞ ভাগবতে পাই,
    হরি-গুরু পূজা ভিন্নঅন্য পূজা নাই
    মনকে কর সরল সূক্ষ্মআর থেকনা হয়ে মূর্খ,
    পূজ সবে যে যেই তন্ত্রে আছ উপাসন।।
    । নানা পূজায় কি ফল হবেবল দেখিরে ভাই,
    অন্তিম কালে এসে উদ্ধারকরবেন কোন গোসাই
    যদি বল আল্লা হরিকে নিবে ভাই উদ্ধার করি,
    মনের ময়লা কর হরি নামেতে খন্ডন।।
    । হরি ধরায় অবতীর্ণঅন্ধকার আর নাই,
    সর্ব্ব জীবে পুলকিতসুখের সীমা নাই
    কুল গুরুর বিচার ছাড়মন গুরু জড়িয়ে ধর,
    হরি গোসাইর করণ কর দীনা অভাজন।।
     
    রাগিনী-অকালা
    ৫১। তাল-ঠুংরী
    এবার প্রেম নদীতে দে সাঁতার,
    যদি রে তুই যাবি রে ওপার
    ঐ দেখ প্রেম নদীর ওপারে আছে রে,
    প্রেমিক গুরু কর্ণধর।।
    । ভাবের ভষ্ম অঙ্গে মেখে,
    সাঁতার দেরে মন সুখে
    ও তুই অনুরাগের হাত পা ঝেকে রে,
    প্রেম নদীর ধর কিনার।।
    । গেলে প্রেমিক গুরুর পাশে,
    দেখবি ঐ রূপ সদা বসে
    রাখবি প্রেমের ছবিহৃদাকাশে রে,
    তবে হবি অনুগত তার।।
    । হলে গুরুর মনের মত গুরু হবে অনুগত
    তিনি চাকর সম অবিরত রে,
    (ও তোর) মন যোগাবে নিরন্তর ।।
    । দয়াল হরি গোসাই বলে,
    গুরু পদে প্রাণ সপিলে
    তবে শঙ্কা নাই তোর কোন কালে রে,
    দীনা তারে ভেবে দে সাঁতার।।
     
    রাগিনী-আকালা
    ৫২। তাল-ঠুংরী
    আমি ভজলেম না গুরুর চরণ,
    কিসে মিলবে গুরু বস্তু ধন
    আমার গোনার দিন ফুরিয়ে গেল হে,
    কোন দিন যেন হয় মরন।।
    । রলেম বৃথা কাজেসংসার মাঝে,
    চললেনম না তাই আপন বুঝে
    তোমায় নাহি পূজেমায়ায় মজে হে,
    কবি রঙ্গে ভঙ্গে কাল যাপন।।
    । সৎসঙ্গ ভিতরে গেলে,
    সৎ কথায় মোর মন না চলে
    আমার মন মজে কু-মতির ছলে,
    ফিরে না ঐ দুষ্ট মন।।
    । যথা হরি নাম সংকীর্ত্তন হয়,
    সময় কাটাই বাজে কথায়
    আমি কর্ম দোষী হে দয়াময়,
    নিলেম না তোমার স্মরণ।।
    । দীনা বলে হরি গোসাই
    পদতলে আমায় দেও ঠাই
    গুরু তুমি বিনে মোর কেহ নাই,
    অন্তে পাই যেন শ্রী চরণ।।
     
    রাগিনী-মহসালা
    ৫৩। তাল-ঝুলুন
    বাজে কথায় দিন ফুরালি,
    গুরু কেন ভজলি না
    যদি গোনার দিনের এক দিন কমে,
    সেদিন তো আর পাবি না।।
    । বৃথা কাজে কাটালি দিন,
    কু-কর্ম্মে হও কালের অধীন
    অসৎ কথায় হয়ে প্রবীন
    গুরু কর্ম্ম করলি না।।
    । সৎসঙ্গ ভিতরে গিয়ে,
    সৎ কথায় কেন মন না দিয়ে
    জংলী কথায় মত্ত হয়ে,
    সৎ উপদেশ শুনলি না।।
    । যদি যাও নাম সংকীর্ত্তনে,
    মন দেও বাজে আলাপনে
    শুনতে দেও না অন্য জনে,
    নিজেও তাই শুন না।।
    । কু-ভক্ষনে হয়ে মত্ত,
    সদা কর মন রাজত্ব-
    সার করলিনে গুরু তত্ত্ব,
    অন্তরে কু-ভাবনা।।
    । হরি গোসাই বলে বারে বারে
    দিন খুয়াসনে জুলুম করে
    যমের হাতে পড়লে পড়ে,
    দীনা এড়াতে (আর) পারবি না
     
    ৫৪। তাল-গড়খেম্টা
    গুরু গজাল হইলে হবে কি
    আমি যে কোচ বিহীন সম্বল বিহীন
    গজালের রূপ নিরখি সেই কোচ হাকি,
    আমি তাই রলেম না একদিন।।
    । সেই গজাল রূপ সাগরেথাকে ঐ অতল নীরে
    নিবিড়ে আছে পরেঅচেতন থাকে নিশিদিন
    গজাল ধরিবারে খুজি তারে,
    খুজে না পেলাম কোনদিন।।
    । ভক্তি কোচ থাকত যদিগুরু গজাল নিরবধি-
    কোপাইবার পেতেম সন্ধিতাকিয়ে রতেম্ চিরদিন
    গজাল পেলে দর্শনমনের মতন
    কুপিয়ে করতেম্ স্বাধীন।।
    । চিরকাল রাখতেম কাজেঅন্ধকার যেত ঘুচে,
    কুলমান দিতেম পিছেহতেম তার চরণে অধীন
    ও তার চরণ পাশে রতেম বসে,
    থাকত না আমার এই দুর্দিন।।
    । দুঃখে দীনবন্ধু বলেগুরু গজাল নাহি মিলে,
    জনম আমার যায় বিফলেঅকাজে বিজ্ঞ হই প্রবীন
    আমি রলেম্ ভ্রান্তে অসার চিন্তে,
    তাইতে মোর হলো না সুদিন।।
     
    রাগিনী লম্পট
    ৫৫। তাল-খেম্টা
    মন্দিরে চল মন আমার,
    ঐ দেখ দিন ফুরাল কাছে এলমরণ তোমার
    মন তোর ফেলে গরলহইলে সরল,
    মিলবে হরি অনিবার।।
    । বিশ্বাস আর প্রেম ভক্তি দিও চরণে,
    হরি উদয় হবে হৃদয়দ্বিদল আসনে
    তবে রূপের ছবি দর্শন পাবি,
    নাম সুধায় পুরবে উদর।।
    । ভক্তির জোরে শ্রীমন্দিরে হরির অবস্থান,
    দিবানিশি ভাব বসি যুগল চরণ
    হবে বাঞ্ছা পূরণ পাবি দর্শন,
    শান্তি হরি একান্তর।।
    । চরণ পাশে রবি বসে ওরে পাষান মন
    দেও সপে যুগল রূপে রাখবি দুনয়ন
    তবে রূপ নিরখি রেখে আঁখি,
    থাকবি আনন্দ অন্তর।।
    । হরি চাঁদের রূপের কিরণলাগে যদি গায়,
    আকুল প্রাণে নিশিদিনে হরিগুণ গায়
    ওরে শুনরে দীনা ঐ রূপ বিনাÑ
    যায়না মনের অন্ধকার

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.