পুরাণে লেখা আছে, সৃষ্টির তিন কর্তা।
এরা হলেন, ব্রক্ষা, বিষ্ণু, মহেশ্বর। এদের মধ্যে ব্রক্ষা হলেন সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু হলেন পালন কর্তা আর মহেশ্বর হলেন সংহার কর্তা। স্রষ্টার সৃষ্টিকুলে যখন এই তিনটি বিষয়ে কোন সমস্যা হতে থাকে, তখন ভগবান মনুষ্যরূপে কাউকে না কাউকে এ ধরায় পাঠান। ১৮০০ খৃষ্টাব্দ পরবর্তী সময়ে ভারত উপমহাদেশে শাসক শ্রেনী হতে নিষ্পেষিত, অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে ওঠে মানবকুল। ঠিক এসময় মুক্তির বার্তা হাতে পৃথিবীতে আসেন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর। অবহেলিত মানুবকুলকে আলোর পথ দেখাতে সকলের কাছে ‘হরিবোল’ মন্ত্রধ্বনিটি বিতরণ করেন। এই মন্ত্রটির বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এটি উচ্চারণ করতে কোন বিশেষ ব্যবস্থা বা সময়ের প্রয়োজন নাই। হরিচাঁদ ঠাকুর বলেছেন; হাতে কাজ মুখে নাম, দুইয়ে মিলে হরিনাম। মানুষ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মুক্তির পথ পেলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসেন শ্রীহরিচাঁদ পুত্র শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর। অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতেই শ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর তাঁর উপর দায়িত্ব দিয়ে যান।
এ সময়ে সমাজে ধর্মের যে গ্লানি উপস্থিত হয়েছিল, তার সংহার করতেই ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ১৩ মার্চ পূন্যতীর্থধাম ওড়াকান্দিতে জ্ম্মগ্রহন করেছিলেন। জম্মের সময় তার শারীরিক চিহ্ন দেখে জ্যোতিষি বলেছিলেন এ ছেলে, সামান্য নয়। বয়সের সাথে সাথে সেই অসামান্য মহিমা চারিদিকে সূর্যের কিরনের মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মোহেনজেদাড়োর যোগীবেশি ও পশুপতি রূপি শিব ঋগে¦দের রুদ্রে, পুরাণের মহেশ্বরে এবং মতুয়াদের দেবতা গুরুচাঁদে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। বোধকরি ঈশ্বরের রুদ্ররূপটিই ধারন করেছিলেন শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর।
এই সময়টা হিন্দুধর্মের মুলহোতা ছিলেন পৈতাধারীদের দখলে। তাই এই শ্রেনীর মানুষের পৈতার দংশনে সমস্ত অন্ত্যজশ্রেনীর শরীর নীলবর্ন ধারনের উপক্রম প্রায়। অনেকই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করে। চারিদিকে তখন অত্যাচার, অরাজগতা আর ধর্মান্তরের হিড়িক চলছিল। ঠিক এ সময় পৈতার দংশনের ওষুধ হয়ে আবির্ভাব হন দলিতদের দেবতারূপি গুরুচাঁদ ঠাকুর। তিনি ছিলেন বিচক্ষন ও সুদুরপ্রসারী দার্শনিক। তাই তিনি বুঝেছিলেন দলিত শ্রেনিকে বাঁচাতে প্রয়োজন একতা ও সংঘবদ্ধতা। এই অভিপ্রায় নিয়ে তিনি সকলকে আহ্বান জানালেন মতুয়াসংঘের ‘হরিবোল’ শব্দের মাধ্যমে। আর লাল নিশান আকাশে উড়িয়ে সিঙ্গা ফুক দিয়ে জয়ডাঙ্কার ধ্বনিতে চারিদিকে জানিয়ে দিলেন অন্ত্যজশ্রেনী দলিত নয়। তারাও পারে। ওড়াকান্দি তীর্থধাম আর লালনিশানের নিশানায় যারা যোগ দিতে থাকে, তারা সবাই মতুয়া নামে পরিচিত হতে থাকে। মতুয়া মুলত জড়বাদী নয় বরং শক্তির সাধক, দুর্বার শক্তিবেগে অনাচার, অবিচারকে ধ্বংস করে অগ্রগামনি বীর মুর্তি। মতুয়া একটি শক্তির নাম। যে শক্তি প্রভুত্ব আর অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
তৎকালিন ব্রক্ষসমাজের আচার বিধান ছিল অত্যন্ত সময়বাহুল্য। তাই সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতিকে সামনে অগ্রসরের জন্য গুরুচাঁদ অনেক কঠিন কাজ করেছেন। তিনি আচার সর্বস্ব না হয়ে কর্ম সর্বস্ব ধর্মের অনুসারি করেন সকলকে। এ ধর্ম মতুয়া ধর্ম। গুরুচাঁদের মতে, মতুয়া ধর্মের অনুসারিরা সবসময় কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। যোগবলে বা সাধনার বলে তিনি দেখতে পেতেন কি করলে সাধারন মানুষ কর্মযোগ আর ভক্তিযোগ একত্রে সম্পন্ন করতে পারবে। তাই তিনি নিজে নেমে পড়লেন মানুসের সেবায়। সারাদিন কর্মযোগ আর অবসরে ভক্তিযোগ করে মানুষকে কাছে টানতেন। তাদের উৎসাহ দিতেন অবহেলিত জাতিকে উদ্ধারের জন্য।
তিনি অনেক অলৌকিক কাজ করেছেন। কঠিন অসুখে রুগিকে অনেক হেয়ালী পথ্য দিয়ে সারিয়েছেন। এটা আসলে বর্তমানে আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ গুনাগুনের কারন ছিল। সে সময়ে মানুষের এ সব সম্পর্কে ধারনা ছিলনা। তবে অলৌকিক যে কিছু ছিল না তা নয়। কারন সাধারন মানুষ আর দেবদুতের মধ্যে তফাৎটা প্রমান করতেই ঈশ্বর তাঁকে দিয়ে নানান ধরনের কাজ করিয়ে থাকেন। এভাবেই মানুষ হয়ে ওঠে ভক্তের ভগবান
এরা হলেন, ব্রক্ষা, বিষ্ণু, মহেশ্বর। এদের মধ্যে ব্রক্ষা হলেন সৃষ্টিকর্তা, বিষ্ণু হলেন পালন কর্তা আর মহেশ্বর হলেন সংহার কর্তা। স্রষ্টার সৃষ্টিকুলে যখন এই তিনটি বিষয়ে কোন সমস্যা হতে থাকে, তখন ভগবান মনুষ্যরূপে কাউকে না কাউকে এ ধরায় পাঠান। ১৮০০ খৃষ্টাব্দ পরবর্তী সময়ে ভারত উপমহাদেশে শাসক শ্রেনী হতে নিষ্পেষিত, অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে ওঠে মানবকুল। ঠিক এসময় মুক্তির বার্তা হাতে পৃথিবীতে আসেন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর। অবহেলিত মানুবকুলকে আলোর পথ দেখাতে সকলের কাছে ‘হরিবোল’ মন্ত্রধ্বনিটি বিতরণ করেন। এই মন্ত্রটির বিশেষ সুবিধা রয়েছে। এটি উচ্চারণ করতে কোন বিশেষ ব্যবস্থা বা সময়ের প্রয়োজন নাই। হরিচাঁদ ঠাকুর বলেছেন; হাতে কাজ মুখে নাম, দুইয়ে মিলে হরিনাম। মানুষ এই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে মুক্তির পথ পেলেন। এরই ধারাবাহিকতায় আসেন শ্রীহরিচাঁদ পুত্র শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর। অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতেই শ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর তাঁর উপর দায়িত্ব দিয়ে যান।
এ সময়ে সমাজে ধর্মের যে গ্লানি উপস্থিত হয়েছিল, তার সংহার করতেই ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ১৩ মার্চ পূন্যতীর্থধাম ওড়াকান্দিতে জ্ম্মগ্রহন করেছিলেন। জম্মের সময় তার শারীরিক চিহ্ন দেখে জ্যোতিষি বলেছিলেন এ ছেলে, সামান্য নয়। বয়সের সাথে সাথে সেই অসামান্য মহিমা চারিদিকে সূর্যের কিরনের মতো ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মোহেনজেদাড়োর যোগীবেশি ও পশুপতি রূপি শিব ঋগে¦দের রুদ্রে, পুরাণের মহেশ্বরে এবং মতুয়াদের দেবতা গুরুচাঁদে পরিণত হয়েছিলেন তিনি। বোধকরি ঈশ্বরের রুদ্ররূপটিই ধারন করেছিলেন শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর।
এই সময়টা হিন্দুধর্মের মুলহোতা ছিলেন পৈতাধারীদের দখলে। তাই এই শ্রেনীর মানুষের পৈতার দংশনে সমস্ত অন্ত্যজশ্রেনীর শরীর নীলবর্ন ধারনের উপক্রম প্রায়। অনেকই অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ধর্মান্তরিত হতে শুরু করে। চারিদিকে তখন অত্যাচার, অরাজগতা আর ধর্মান্তরের হিড়িক চলছিল। ঠিক এ সময় পৈতার দংশনের ওষুধ হয়ে আবির্ভাব হন দলিতদের দেবতারূপি গুরুচাঁদ ঠাকুর। তিনি ছিলেন বিচক্ষন ও সুদুরপ্রসারী দার্শনিক। তাই তিনি বুঝেছিলেন দলিত শ্রেনিকে বাঁচাতে প্রয়োজন একতা ও সংঘবদ্ধতা। এই অভিপ্রায় নিয়ে তিনি সকলকে আহ্বান জানালেন মতুয়াসংঘের ‘হরিবোল’ শব্দের মাধ্যমে। আর লাল নিশান আকাশে উড়িয়ে সিঙ্গা ফুক দিয়ে জয়ডাঙ্কার ধ্বনিতে চারিদিকে জানিয়ে দিলেন অন্ত্যজশ্রেনী দলিত নয়। তারাও পারে। ওড়াকান্দি তীর্থধাম আর লালনিশানের নিশানায় যারা যোগ দিতে থাকে, তারা সবাই মতুয়া নামে পরিচিত হতে থাকে। মতুয়া মুলত জড়বাদী নয় বরং শক্তির সাধক, দুর্বার শক্তিবেগে অনাচার, অবিচারকে ধ্বংস করে অগ্রগামনি বীর মুর্তি। মতুয়া একটি শক্তির নাম। যে শক্তি প্রভুত্ব আর অনাচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার।
তৎকালিন ব্রক্ষসমাজের আচার বিধান ছিল অত্যন্ত সময়বাহুল্য। তাই সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতিকে সামনে অগ্রসরের জন্য গুরুচাঁদ অনেক কঠিন কাজ করেছেন। তিনি আচার সর্বস্ব না হয়ে কর্ম সর্বস্ব ধর্মের অনুসারি করেন সকলকে। এ ধর্ম মতুয়া ধর্ম। গুরুচাঁদের মতে, মতুয়া ধর্মের অনুসারিরা সবসময় কর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। যোগবলে বা সাধনার বলে তিনি দেখতে পেতেন কি করলে সাধারন মানুষ কর্মযোগ আর ভক্তিযোগ একত্রে সম্পন্ন করতে পারবে। তাই তিনি নিজে নেমে পড়লেন মানুসের সেবায়। সারাদিন কর্মযোগ আর অবসরে ভক্তিযোগ করে মানুষকে কাছে টানতেন। তাদের উৎসাহ দিতেন অবহেলিত জাতিকে উদ্ধারের জন্য।
তিনি অনেক অলৌকিক কাজ করেছেন। কঠিন অসুখে রুগিকে অনেক হেয়ালী পথ্য দিয়ে সারিয়েছেন। এটা আসলে বর্তমানে আয়ুর্বেদিক বা ভেষজ গুনাগুনের কারন ছিল। সে সময়ে মানুষের এ সব সম্পর্কে ধারনা ছিলনা। তবে অলৌকিক যে কিছু ছিল না তা নয়। কারন সাধারন মানুষ আর দেবদুতের মধ্যে তফাৎটা প্রমান করতেই ঈশ্বর তাঁকে দিয়ে নানান ধরনের কাজ করিয়ে থাকেন। এভাবেই মানুষ হয়ে ওঠে ভক্তের ভগবান
No comments:
Post a Comment