শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.
২ সংগঠনের ইতিহাস - মতুয়ার বার্তা

শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.

  • Breaking News

    হরিচাঁদ ঠাকুরের দ্বাদশ আজ্ঞা

    ➤ ১. সদা সত্য কথা বলবে। ➤ ২. পিতা-মাতাকে দেবজ্ঞানে ভক্তি করবে।➤ ৩. নারীকে মাতৃজ্ঞান করবে। ➤ ৪. জগতকে ভালোবাসবে।➤ ৫. সকল ধর্মের প্রতি উদার থাকবে। ➤ ৬. জাতিভেদ করবে না। ➤ ৭. হরিমন্দির প্রতিষ্ঠা করবে। ➤ ৮. প্রত্যহ প্রার্থনা করবে। ➤ ৯. ঈশ্বরে আত্মদান করবে। ➤ ১০. বহিরঙ্গে সাধু সাজবে না। ➤ ১১. ষড়রিপু বশে রাখবে। ➤ ১২. হাতে কাম ও মুখে নাম করবে।

    ২ সংগঠনের ইতিহাস

    সংগঠনের ইতিহাস

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ এর ঘোষণাপত্র

    সনাতন ধর্মের সূক্ষ্ম শাশ্বত বাণী যখন মনুবাদী ব্রাহ্মণ্যবাদে আচ্ছন্ন হয়ে বিলুপ্ত হতে থাকে, তখন জাতিগত অস্পৃশ্যতার নিষ্পেষণে সমাজের নিম্নশ্রেণিভুক্ত তথা দলিত মানুষেরা হয়ে ওঠে নিরুপায়। উচ্চশ্রেণির মানুষ বিভিন্ন কৌশলে সনাতন ধর্মের শাস্ত্রসমূহ নিজেদের স্বার্থে বিকৃত করে নিম্নশ্রেণির মানুষকে দলিত, পতিত করে রাখে, তারা শুধুমাত্র দাস হয় তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজ এই দলিত শ্রেণিকে পশুর চেয়েও অধম মনে করত। এই অস্পৃশ্যতার গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে দলিত শ্রেণি দলে দলে ধর্মান্তরিত হতে থাকে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেবে এই বর্তমান ভারতীয় উপমহাদেশের অধিকাংশ মুসলিম ও খৃষ্টান এই ধর্মান্তরিত দলিত মানুষ। এই অবস্থায় পতিত জাতির মুক্তির বাণী নিয়ে ক্ষীরোদসায়ী হরি স্বনামে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর নাম ধারণ করে বাংলা ১২১৮ সালের ২৯শে ফাল্গুন বুধবার মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন।


    “নীচ হয়ে করিব যে নীচের উদ্ধার। অতি নিম্নে না নামিলে কিসে অবতার।।”

    ----------------------------------------------------- শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত (কবি রসরাজ তারক চন্দ্র সরকার)

    শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর আদি সূক্ষ্ম সনাতন ধর্মের বাণী প্রচার করলেন। আদি তত্ত্ব নতুন রূপে প্রদান করেন এবং তার অনুসারীদের নাম হয় মতুয়া এবং সেই আদি তত্ত্ব হরিতত্ত্ব বা মতুয়া তত্ত্ব নামে প্রসিদ্ধ হয়। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ আধ্যাত্মিক মুক্তির বীজমন্ত্র “হরিবোল” নাম প্রদান করেন। এবং হাতে তুলে দেন লাল নিশান আর জয়ডঙ্কা। লাল নিশান ও জয়ডঙ্কা নিয়ে মতুয়া সম্প্রদায় ঝাঁপিয়ে পড়ে মনুবাদী সংস্কৃতির সাথে মহাযুদ্ধে। অচিরেই তারা লাভ করে ধর্মের অধিকার, মানুষের অধিকার। আর সূক্ষ্মরূপে প্রকাশিত জাগতিক মুক্তির মূলমন্ত্র “শিক্ষা”র প্রচার করেন শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের পুত্র শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর। বাংলা ১২৫২ সালের পহেলা চৈত্র শুক্রবার দোল পূর্ণিমার দিন এই মহামানব জন্ম গ্রহণ করেন।

    “নমশূদ্র জাতি যদি বাঁচিবারে চাও। যাক প্রাণ সেও ভালো বিদ্যা শিখে লও।।
    বিদ্যা ধর্ম বিদ্যা কর্ম অন্য সব ছাড়। বিদ্যা ছাড়া কথা নাই বিদ্যা কর সার।।
    খাও বা না খাও তাতে দুঃখ নাই। ছেলে মেয়ে শিক্ষা দাও এই আমি চাই।।
    মোর পিতা হরিচাঁদ বলে গেছে মোরে। বিদ্যা শিক্ষা স্বজাতিকে দিতে হবে ঘরে।।”
    -----------------------------------------------শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ চরিত (আচার্য মহানন্দ হালদার)

    এই বাণীকে লক্ষ্য করে শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুর হরিঠাকুরের তিরোধানের পর মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রধানরূপে গণিত হন।  তিনি এই পতিত জাতিকে শিক্ষার আলো দিয়ে শিক্ষিত করে তোলেন। এই আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক আরম্ভ হয় ইংরেজি ১৮৮০ সালে শ্রীধাম ওঢ়াকাঁদিতে প্রথম বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর তার এই কর্মে ড. সি এস মীডকে সহযোগী হিসেবে নেন। এই মীড সাহেবের সহযোগিতায় ১৯০৮ সালে শ্রীধাম ওঢ়াকাঁদিতে প্রথম ইংরেজি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। 

    ১৯১১ সালে গুরচাদ ঠাকুর এই জাতির চণ্ডালত্ব মোচন করে জাতিকে “দ্বিজ নমশূদ্র” হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার শিক্ষাসহ নানাবিধ সংস্কারের কারণে এই দলিত সমাজ উন্নত হতে থাকে। যেমন শিক্ষিত হতে থাকে তেমনি রাজনৈতিক ভাবেও এরা উন্নত হতে থাকে। “যার দল নেই, তার বল নেই” গুরুচাঁদ ঠাকুরের এই বাণীকে আত্মিকরণ করে মতুয়ারা তথা দলিত সমাজ দলবদ্ধ হয় এবং সকল প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে এগিয়ে যেতে থাকে। 

    এই মতুয়াদের সংগঠিত ভাবে চলার জন্য গুরুচাঁদ ঠাকুর “শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ মিশন” প্রতিষ্ঠা করেন। এবং এখনও এই মিশনের কার্যক্রম লক্ষিত হয়। দিনে দিনে বিভিন্ন এলাকার মতুয়ারা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন সংঘ, মিশন বা সংস্থা গঠন করে কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের তরুণ সমাজ মতুয়াদের একটি সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এবং কয়েকজন তরুণ অনলাইনে একত্রিত হয়ে একটি সংগঠন করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এবং আরও ভক্তদের জানাতে থাকেন। এবং এরই পরিপ্রেক্ষিতে “শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ” নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হল। হরিবোল।


    প্রস্তাবনা


    আমরা, বাংলাদেশের মতুয়া সম্প্রদায় ও প্রবাসী মতুয়াগণ বাংলা ১৪২১ সালের ২০ শে ফাল্গুন, ইংরেজি ২০১৫ সালের ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার শ্রীশ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের ১৭০তম জন্মজয়ন্তীতে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দ ঐক্যমতের ভিত্তিতে “শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ” নামক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি।


    আমরা সজ্ঞানত অঙ্গিকার করছি যে, শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুরের নীতি তথা মতুয়ার নীতি ‘সত্য, প্রেম ও পবিত্রতা’ হবে এই সংগঠনের মূলনীতি। 

    আমরা আরও অঙ্গীকার করছি যে, মতুয়া সম্প্রদায়ের সার্বিক উন্নতিকল্পে সচেষ্ট থাকব। এই সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ও সামাজিক জীবন পরিচালনায় শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের নীতি প্রতিষ্ঠায় সতত সচেষ্ট থাকব।


    এতদ্বারা আমাদের এই সভায়, অদ্য বাংলা ১৪২১ সালের ২০ শে ফাল্গুন, ইংরেজি ২০১৫ সালের ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার ‘শ্রীশ্রী হরি-গুরুচাঁদ মতুয়া সমাজ’ সংগঠনের এই সংবিধান রচনা ও বিধিবদ্ধ করে সমবেতভাবে গৃহীত হল।


    No comments:

    Post a Comment

    শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত

    শ্রীশ্রীহরি-গুরুচাঁদ চরিত্র সুধা

    শ্রীশ্রীহরিসঙ্গীত গান

    শ্রীশ্রীহরিচাঁদ ঠাকুর শ্রীশ্রীগুরুচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী শ্রী গোপাল চাঁদ সাধু ঠাকুুরে আদর্শ তথা মতুয়া দর্শনের মাধ্যমে জীবন গড়ে তুলুন। হরিনাম করুন.